ভারতের আদানি গোষ্ঠী কি এবার ফেঁসে যাচ্ছে?

0

ভারতের আদানি গোষ্ঠী কি ফেঁসে যাচ্ছে? বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বেশি দামে কয়লা আমদানির অভিযোগ আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আগেই উঠেছিল। এসেছিল এই পদ্ধতিতে বিদেশে টাকা পাচারের প্রসঙ্গ। যদিও মামলার জেরে এই অভিযোগের তদন্ত প্রক্রিয়া অনেক দিন ধরেই আটকে রয়েছে। এবার সংবাদ সংস্থা এক রিপোর্টে দাবি করল, আবার সেই তদন্ত শুরু করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে অনুমতি চেয়েছে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী শাখা ডিরেক্টরেট অব রেভেনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই)। এর জন্য সিঙ্গাপুরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের থেকে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করতে চায় তারা। ফেব্রুয়ারিতে আবেদনের শুনানি হতে পারে। ফলে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টকে কেন্দ্র করে একের পর এক অভিযোগে জর্জরিত আদানি গোষ্ঠীর উপরে চাপ আরো বাড়ল বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।

হিন্ডেনবার্গ এবং তদন্তমূলক সংবাদ সংস্থা ওসিসিআরপির রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, গত এক দশকের বেশি সময় ধরে কারচুপি করে শেয়ারের দাম বাড়াচ্ছে আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলি। এর জন্য কয়লা ও বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের সরঞ্জাম বেশি দামে আমদানি করে বিদেশে টাকা পাচার করেছিল তারা। সেই পুঁজি ব্যবহার করেই ফের ভুঁইফোঁড় বিদেশী বিনিয়োগকারী সংস্থাকে দিয়ে নিজেদের সংস্থার শেয়ার কেনানো হয়।

সংবাদ সংস্থার খবর, ২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তের অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুরের শাখা সংস্থার (আদানি গ্লোবাল) সাথে আদানিদের লেনদেন সংক্রান্ত নথি সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করে ডিআরআই। ওই সংস্থার মধ্যস্থতাতেই মালয়েশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করা হয়েছিল। যদিও আইনি লড়াইয়ের জেরে তদন্ত প্রক্রিয়া আর এগোয়নি। এ দফায় সুপ্রিম কোর্টের কাছে ২৫ পাতার আবেদন দাখিল করে ডিআরআইয়ের দাবি, দু’দেশের আইনি সহযোগিতা চুক্তি অনুযায়ী সিঙ্গাপুর থেকে তারা নথি পেতে পারে। এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পেয়েছে তারা।

আদানি কাণ্ড নিয়ে মোদি সরকারকে আক্রমণের একটি সুযোগও ছাড়ছে না বিরোধীরা। এই অবস্থায় আদানিদের বিরুদ্ধে ফের তদন্ত শুরুর সম্মতি দিয়ে ভারত সরকার কী বার্তা দিতে চাইছে, সেটাই এখন সংশ্লিষ্ট মহলের আলোচনার কেন্দ্রে। আবার অনেকের মতে, বিরোধীদের চাপেই এই সিদ্ধান্ত। আদানিদের বক্তব্য, তারা তদন্তে সহযোগিতা করেছে। চার বছরেরও বেশি সময় আগে তারা তদন্তকারী সংস্থাকে বিভিন্ন লেনদেন সংক্রান্ত নথিও দিয়েছে তারা।

সূত্রের খবর, তদন্তের শুরুতে আদানিদের কয়লা আমদানি-সংক্রান্ত প্রায় ১,৩০০ লেনদেন খতিয়ে দেখেছিল ডিআরআই। জানিয়েছিল, মালয়েশিয়া থেকে কয়লা রফতানির আসল খরচের তুলনায় অনেকটাই বেশি দামে তা মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে কেনা হয়েছে। এর ভিত্তিতে সিঙ্গাপুরের কাছে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের মাধ্যমে আদানিদের লেনদেন সংক্রান্ত নথি চায় ডিআরআই। ২০১৯ সালে আদানিদের আবেদনের ভিত্তিতে বম্বে হাই কোর্ট জানায়, নথি চাওয়ার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ত্রুটি আছে। একে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল ডিআরআই। তার পর থেকে তদন্তের কাজ থমকে রয়েছে। তা নিয়েও ভারত সরকারকে আক্রমণ করেছে বিরোধীরা।

অন্য দিকে, শুক্রবার মুম্বইয়ের ধারাভি বস্তি পুনর্গঠনের বরাত আদানিদের দেয়া নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, যে সংস্থার ক্রয়াদেশ পাওয়ার কথা ছিল তাদের বাদ দিতে দরপত্রের শর্তে বদল আনতে বাধ্য হয় মহারাষ্ট্রের নগরোন্নয়ন দফতর। শুধু তা-ই নয়, চুক্তি অনুযায়ী অন্য সংস্থাকে এই প্রকল্পের অংশীদার হতে গেলে তার স্বত্ব কিনতে হবে আদানিদের থেকে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com