ইসরাইলের অবিরত হামলায় ধূলিসাৎ হচ্ছে গাজা, বিক্ষোভে উত্তাল বিশ্ব
ইসরাইলের অবিরত হামলায় ধূলিসাৎ হচ্ছে গাজা। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই ধ্বংসস্তূপ। ঘরবাড়ি হারিয়ে ভিটেমাটিহীন মানুষ শুধুই ছুটছে। কোথাও কোনো নিরাপত্তা নেই। রাস্তাঘাটে ছড়িয়ে আছে লাশ। দাফনের ব্যবস্থা নেই। সদ্য নবজাতক থেকে বয়স্ক কেউই ছাড় পাচ্ছে না ইসরাইলের ভয়াল আক্রমণ থেকে। মৌলিক চাহিদাগুলো থেকে বঞ্চিত গাজাবাসী কোনোরকম দিন পার করছে।
আন্তর্জাতিক ত্রাণসামগ্রী থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। হাসপাতালগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে। ইসরাইলের এমন চরম বর্বরতায় ক্ষিপ্ত অসংখ্য দেশের জনগণ। ফলে ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল বিশ্ব। ইসরাইলের অমানবীয় আক্রমণের প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের জনগণরা আন্দোলন করছেন। রাস্তায় রাস্তায় ব্যানার, প্ল্যাকার্ড এবং প্রতীকী হাতে ইসরাইলের নিন্দা জানাচ্ছে।
দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স, পাকিস্তান, চিলি, কলম্বিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, মরক্কো, চিলি, তুরস্ক, বাহরাইন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ আরও অসংখ্য দেশ। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আবেদন জানিয়েছে দেশগুলো। এমনকি কিছু কিছু দেশ ইতোমধ্যেই ইসরাইলের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রত্যাহার করেছেন। আল-জাজিরা, রয়টার্স, আরব নিউজ।
গাজায় চলমান নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদের ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে একত্রিত হন কয়েত হাজার জনতা। বিক্ষোভকারীরা প্লেস দে লা রিপাবলিক থেকে শুরু করে এবং প্লেস দে লা নেশনের দিকে মিছিল করে। ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে নানা রকম স্লোগান দেন প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীরা। ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি’, ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো’, ‘ফিলিস্তিন বাঁচবে এবং জয়ী হবে’ এমন স্লোগান প্রচার করেন তারা। এমনকি ইসরাইলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, ‘এই শিশু, নারী এবং বৃদ্ধদের হত্যা করা হচ্ছে। এর কোনো কারণ এবং বৈধতা নেই। আমরা ইসরাইলকে থামতে আহ্বান জানাই।’
ইসরাইলি হামলায় নিহত গাজার সাংবাদিকদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাকিস্তানে মিছিল করা হয়। পাকিস্তানি সাংবাদিকরা দক্ষিণের বন্দর শহর করাচিতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান। করাচি প্রেস ক্লাব থেকে মহানগরের সিন্ধু গভর্নর হাউজে যাওয়ার সময় শত শত পুরুষ, নারী এবং শিশু ক্রুদ্ধভাবে স্লোগান দেন। ‘সাংবাদিকদের টার্গেট করা বন্ধ করুন’, ‘সাংবাদিকদের মৃত্যুতে সত্যকে নীরব করা যায় না’, ‘গাজায় ধ্বংসস্ত‚পের নিচে পশ্চিমা মানবাধিকারের বক্তৃতা চাপা পড়ে গেছে’ এমন প্ল্যাকার্ডে প্রতিবাদ আরও তীব্র হয়।
ইসরাইলের অসহায় নির্দয়তায় মুখ খুলেছে মরোক্কবাসীও। প্রায় ১০ হাজার মরক্কোবাসী প্রতিবাদে অংশ নেন। বামপন্থি জোটের ডাকা গণসমাবেশে দুই কিলোমিটার এলাকায় বিস্তৃত জনতারা মিছিল করেন। গাজাবাসীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে রাজধানী রাবাতে ভিড় করেন তারা। আন্দোলনকারীদের প্ল্যাকার্ডে লিখা ছিল ‘ডাউন উইথ জায়োনিজম’ এবং ‘হামাস ইজ প্যালেস্টাইন’। গাজায় ইসরাইলের গণহত্যার বিরুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়ায় নিয়মিত বিক্ষোভ চলছে। তুলনামূলকভাবে ছোট হলেও, সিউল এবং অন্যান্য শহরে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেছে। কোরিয়ান, ইংরেজি এবং আরবি ভাষায় বিক্ষোভকারীরা গণহত্যা বন্ধের দাবি জানান। এমনকি গাজায় চলমান হত্যাকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদিরাও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। বিরোধীদলীয় অসংখ্য নেত্রীও তীব্র নিন্দা ও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।