‘শর্তযুক্ত মুক্তি দিয়ে সরকার কার্যত বেগম জিয়াকে বন্দী করে রেখেছে, তিনি আসলে স্বাধীন নন’

0

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দলীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করা নয়, বরং তার উন্নত চিকিৎসার জন্য নিঃশর্ত মুক্তি চায় বিএনপি। দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলেছেন শর্তযুক্ত মুক্তি দিয়ে সরকার কার্যত বেগম জিয়াকে বন্দী করে রেখেছে। তিনি আসলে স্বাধীন নন। তার মুক্তজীবন ও সম্পূর্ণ সুস্থতাই দলের এখন মূল অগ্রাধিকার।

বিএনপির নেতারা মনে করেন, বিএনপির দলীয় রাজনীতিতে এই মুহূর্তে কোনো শূন্যতা নেই। বেগম খালেদা জিয়া নিজেই ২০০৯ সালের কাউন্সিলে তারেক রহমানকে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের পদে নির্বাচিত করে বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি করে রেখেছিলেন, যিনি এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার নেতৃত্বেই সুশৃঙ্খলভাবে চলছে বিএনপি।

শর্তযুক্ত মুক্তিতে থাকা : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সাম্প্রতিক সময়ে আবারো রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন। সরকার ও সরকারি দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে দুই ধরনের কথা বলছেন। তারা বলেছেন, বেগম জিয়া রাজনীতি করবেন না এমন মুচলেকা দিয়ে কারাগারের বাইরে আছেন। আবার আইনমন্ত্রী বলেছেন, বেগম জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন, তবে নির্বাচন করতে পারবেন না।

গত ২৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম জাতীয় সংসদে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজনীতি করবেন না, এমন মুচলেকা দেয়া হয়েছে। তার ভিত্তিতে খালেদা জিয়াকে বাসায় নেয়া হয়েছে।

এর পরপরই শেখ সেলিমের এই বক্তব্যকে ‘অপপ্রচার, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে নাকচ করে দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সরকার চাইলে খালেদা জিয়াকে শর্তহীন মুক্তি দিতে পারত। আর তার মামলা দু’টি আপিলে বহাল আছে। আপিলে বহাল থাকলে ধরে নিতে হবে চলমান প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। তাই আপিল চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়ার নির্বাচন করতে বাধা নেই।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুটি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দী ছিলেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকার নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করলে কারাবাস থেকে মুক্তি পান তিনি। ৭৭ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, লিভার সিরোসিস, পরিপাকতন্ত্র, কিডনিতে জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছেন বলে তার চিকিৎসকরা জানিয়ে আসছেন। নানা স্বাস্থ্যগত জটিলতায় একাধিকবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। বিএনপি তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর কথা বললেও সরকার বরাবরই বলে আসছে, শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্তিতে থাকায় তাকে বিদেশে পাঠানোর সুযোগ নেই।

বিএনপির নেতারা মনে করছেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর কথা বলছে।

২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রায় এক বছর আগে গ্রেফতার হয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তার কারাবন্দীর পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে গেল ফেব্রুয়ারিতে। নতুন আরেকটি জাতীয় নির্বাচন এখন দোরগোড়ায়।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com