দেশের ‘ডুবন্ত’ অর্থনীতি বাঁচাতে আন্দোলনের ডাক ইমরানের
পাকিস্তানে বর্তমানে ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া মূল্যস্ফীতি এবং তার জেরে ‘ডুবতে বসা’ অর্থনীতিকে বাঁচাতে দেশজুড়ে টানা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমানের প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান।
বৃহস্পতিবার পিটিআইয়ের জেষ্ঠ্য নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী পাকিস্তানের জাতীয় দৈনিক ডনকে জানিয়েছেন, শুক্রবার রাজধানী ইসলামাবাদসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে এই আন্দোলন; তিন সপ্তাহ পরে দলের সমর্থকদের সঙ্গে যুক্ত হবেন পিটিআই চেয়ারম্যান।
ডনকে ফাওয়াদ বলেন, ‘বর্তমানে ক্ষমতাসীন সরকারের হাতে পাকিস্তানের অর্থনীতি-রাজনীতি-ভবিষ্যত কিছুই নিরাপদ নয়। আমাদের অর্থনীতি ডুবতে বসেছে, মূল্যস্ফীতি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।’
‘দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা ও সরকার পতনের দাবিতে আগামীকাল (শুক্রবার) থেকে পিটিআই চেয়ারম্যান আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। আগামীকাল থেকে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শুরু হবে।’
‘আমরা দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলনে নেমেছি। পিটিআইয়ের পার্লামেন্ট মেম্বারদের ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে— তারা যেন নিজ নিজ এলাকায় প্রধান সংগঠকের দায়িত্ব নেন। তিন সপ্তাহ পর আন্দোলনে দলের চেয়ারম্যান যোগ দিয়ে পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন।’
পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের কারাবন্দি সদস্য আজম সোয়াতিকে মুক্তি দেওয়ার দাবিও এ আন্দোলনে জোরেশোরে উত্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন ফাওয়াদ চৌধুরি। পাকিস্তানের ক্ষমতাকাঠামোর সর্বোচ্চ বিন্দুতে অবস্থান করা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিতর্কিত টুইট করার পর থেকে কারাগারে আছেন পিটিআইয়ের এই সিনেট সদস্য।
সফল ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান খান ২০১৯ সালে সেনাবাহিনীর সমর্থন নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন; কিন্তু তারপর থেকেই বাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে তার।
এই অবসরে বিরোধী রাজনীতিকরা ইমরানের বিরুদ্ধে সংগঠিত হতে থাকেন এবং তারই ধারবাহিকতায় চলতি ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতাদের অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান তিনি। নতুন প্রধানমন্ত্রী হন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) চেয়ারম্যান শেহবাজ শরিফ।
ইমরান খান ক্ষমতা হারানোর পর থেকে সরকারের পদত্যাগ ও আগাম নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে পিটিআই। ডনকে ফাওয়াদ চৌধুরি বলেন, ‘পাকিস্তান ও পাকিস্তানের জনগণকে রক্ষার একমাত্র উপায় হলো এই সরকারের পতন এবং জনগণ এই টেকনোক্র্যাট সরকারকে আর বেশিদিন সহ্য করবে না।’