আফগানিস্তানে এনজিওতে নারীদের কাজে নিষেধাজ্ঞায় কাতারের চরম উদ্বেগ
আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান প্রশাসনের দেশি এবং বিদেশি সব বেসরকারি সংস্থায় নারী কর্মীদের কাজে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনায় ‘চরম উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার। নারীদের কাজে নিষেধাজ্ঞা আরোপের এই সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করতে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
রোববার কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে তালেবানের নতুন সিদ্ধান্তে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। কাতারের এই মন্ত্রণালয় ‘নারীদের কাজের অধিকারের’ প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। একই সঙ্গে নারীদের কাজ বেছে নেওয়া এবং তা গ্রহণ করার স্বাধীনতাকে মানবাধিকার বলে তালেবানকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে কাতার।
আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমাদের যুদ্ধের সময় দোহায় তালেবানের একটি প্রতিনিধি অফিস খোলার অনুমতি দিয়েছিল কাতার। গত বছরের আগস্টে সশস্ত্র এই গোষ্ঠী ক্ষমতায় আসার আগে ‘শান্তি আলোচনার স্থান’ হিসাবেও কাজ করেছে দোহা। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষ এবং তালেবানের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকাও পালন করেছে কাতার।
এর আগে, শনিবার আফগানিস্তানের তালেবান-নিয়ন্ত্রিত প্রশাসন দেশটির সব স্থানীয় এবং বিদেশি বেসরকারি সংস্থাকে (এনজিও) নারী কর্মীদের কাজে আসতে বারণ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা নিষিদ্ধ করার কয়েক দিন পর দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
মানবাধিকার ও নারী অধিকারের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শনের অঙ্গীকার করে ক্ষমতায় আসা তালেবান ইতোমধ্যে আফগান নারীদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে চাকরি থেকে মেয়েদের বহিষ্কার, অভিভাবক ছাড়া গাড়িতে চলাচল ও মেয়েদের ষষ্ঠ শ্রেণির পর স্কুলে নিষিদ্ধ করার তালেবানের সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করেছে।
এনজিওতে নারীদের কাজের ওপর তালেবানের নিষেধাজ্ঞার পর রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল, দ্য নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল (এনআরসি) এবং সেভ দ্য চিলড্রেন আফগানিস্তানে কাজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক এই তিন সংস্থা বলেছে, ‘নারী কর্মীদের ছাড়া’ তারা কাজ চালিয়ে যেতে অক্ষম। দাতব্য সংস্থাগুলো আফগানিস্তানে নারীরা যাতে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন, সেই দাবি জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক শীর্ষ সমন্বয়ক রমিজ আলাকবারোভ বলেছেন, জাতিসংঘ এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের চেষ্টা করছে। এটি মানবিক সহায়তাকারী পুরো সম্প্রদায়ের জন্য একটি লাল রেখা।
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি।