ডান্ডাবেড়ি নিয়ে মায়ের জানাজা: আলীর বাড়িতে যাচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজমের বাড়িতে যাচ্ছেন বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে তার বাড়ি ইউনিয়নের পাবুরিয়াচালা গ্রামে যাবেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, কারাবন্দি আলী আজমের মায়ের মৃত্যুতে তার পরিবারের সদস্যদের খোঁজ খবর নিতে এবং সমবেদনা জানাতে যাবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। দলের নেতাকর্মীদের বিপদ আপদে তাদের পাশে থাকার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে প্রতিনিধি দলটি তার বাড়িতে যাচ্ছেন।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম খানকে পুলিশ যে মামলায় গ্রেফতার করেছিল সে মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন না। একজন সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে ১ ডিসেম্বর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরদিন গাজীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠায়। তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। তবে আদালতে রিমান্ড শুনানি হয়নি বলে জানিয়েছেন কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আকবর খান।
এদিকে এজাহারভুক্ত আসামি না হয়েও বিএনপি নেতা সভাপতি আলী আজম খানকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে তার মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়াকে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তার পরিবার ও দলীয় নেতাকর্মীরা। তারা এ ঘটনাকে চরম অমানবিক হিসেবে দেখছেন।
আলী আজমের ভাই মো. আতাউর রহমান জানান, তার ভাই ঘটনার সময় ওই স্থানে ছিলেন না। মিথ্যা মামলায় তার ভাইকে জড়ানো হয়েছে। সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে তার রিমান্ডও চাওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘ভাইয়ের রাজনৈতিক জীবনে এটাই প্রথম জেলে যাওয়া। ভাই কারাগারে থাকায় এবং জামিন না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় অসুস্থ হয়ে মা সাহেরা বেগম রোববার বিকেলে মারা যান। জানাজার দিন সকাল সোয়া ১০টার দিকে পুলিশ আলীকে উপস্থিত করে। তাকে পরানো ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া খুলে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ তা খোলেনি।’
আতাউর অভিযোগ করে বলেন, ‘আলী ভাই মায়ের জানাজা নামাজের ইমামতি করেন। নামাজ শেষে অল্প সময়ের মধ্যে মরদেহ কবরস্থানে নেওয়া হয়। মাটি দেওয়া শেষ না হওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে ভাইকে আরেকটু সময় থাকার এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ চাইলেও দেওয়া হয়নি। পানি খেতে চাইলেও তাকে সে সুযোগও দেয়নি পুলিশ।’
আলীর ভাই বলেন, ‘বড় ভাই দুই সন্তানের জনক। তিনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তার বড় মেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। ছেলে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। শিশু সন্তান এবং এলাকার সাধারণ মানুষ ও মুসল্লিদের সামনে দাগী আসামিদের মতো ভাইকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে উপস্থাপন মারাত্মকভাবে হেয় করা হয়েছে।’