সিলেটে বৃষ্টি আতঙ্ক, বাড়ছে পানি

0

ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি এখনো সামাল দেয়া সম্ভব হয়নি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা সিলেটে। বন্যার পানি ধীরে ধীরে নামলেও এখনো অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। এর মধ্যেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটে।

মঙ্গলবার সকাল থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি সিলেটে। থেমে থেমে বৃষ্টিতে আবার বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে সেখানে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আগামী কয়েক দিন সিলেটে বৃষ্টি হতে পারে। ভারতে বৃষ্টি হলে সিলেটের দিকে পাহাড়ি ঢল নামবে। এতে আবারও পানি বাড়ার সম্ভাবনা আছে।

নগরের তালতলা এলাকার বাসিন্দা সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় তিনি পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যান। দু’দিন আগে বাড়ি ফিরেছেন। তবে এখনো পানির কারণে কাজে যেতে পারছেন না। বাড়ি ফিরেও আয়-রোজগার না থাকায় সংসার চলছে না। এর মধ্যে ফের পানি বাড়লে পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরে যেতে হবে। সেখানে অর্ধাহারে দিন কাটাতে হবে।

সিলেটে গত দেড় মাসের ব্যবধানে দু’দফা বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত ১২ মে থেকে সিলেট শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছিল। এর ১০ দিন পর পানি নেমে যায়। কিন্তু ১৪ জুন থেকে টানা বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও সারা দেশের সাথে সিলেটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছিল।

বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার সাথে তিন দিন সারা দেশের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। এমন অবস্থায় জরুরিভাবে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এর মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় পানি নামতে শুরু করেছে। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বানভাসিদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে সোমবার সন্ধ্যা ৬টার তুলনায় মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পানি দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ কমেছে। নদীর ওই অংশে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯টার মধ্যে বৃষ্টি হয়েছে সাত মিলিমিটার। নদীর সিলেট পয়েন্টে সোমবারের তুলনায় পানি কমেছে একই পরিমাণে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সিলেট পয়েন্টে পানি ছিল ১০ দশমিক ৬১ সেন্টিমিটার। সিলেট পয়েন্ট এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে ছয় মিলিমিটার।

কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। সেখানে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পানি ছিল ১৬ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পানি ছিল ১৬ দশমিক ৭৪ সেন্টিমিটার। নদীর শেওলা পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে পানি ছিল ১৩ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার।

নদীর শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার এক দশমিক শূন্য চার সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ওই পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ৪৯ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া লুভা নদীর পানি লুভা পয়েন্টে ১৩ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর বাইরে বেড়েছে লুভা, সারি নদী ও ধলাই নদের পানি। সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে পানি সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১০ দশমিক ৩৭ সেন্টিমিটার থাকলেও মঙ্গলবার সকাল ৯টায় তা বেড়ে ১১ দশমিক ১২ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। ধলাই নদীর ইসলামপুর পয়েন্টে পানি সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৯ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার থাকলেও মঙ্গলবার সকাল ৯টায় তা ১০ দশমিক শূন্য তিন সেন্টিমিটারে পৌঁছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহিদুল ইসলাম বলেন, আগামী কয়েক দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। এতে পানি বাড়বে কি না, আগেই বলা যাচ্ছে না। কিন্তু ভারতে বৃষ্টি হলে সিলেটে পাহাড়ি ঢল নামতে পারে। এতে ফের বন্যার শঙ্কা আছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com