‘জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে বিএনপির মূল লক্ষ্য’

0
২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার পরিবর্তনে আন্দোলন ছাড়া কিছুই ভাবছে না বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। তাই বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। তবে কোন পদ্ধতিতে আন্দোলনের রুপরেখা দিবে দলটি তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি, চলছে কাটছাঁট। আর এটা চূড়ান্ত করতে দলটি সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ করছে। এই সংলাপের মধ্য দিয়েই আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করবে বিএনপি। দলটি বলছে খুব শিগগিরই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষ করে আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা করা হবে।

 

বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বৃহত্তর আন্দোলনের রূপরেখায় দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, ইভিএম বাতিল এবং সুষ্ঠু নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হবে এই প্লাটফর্ম থেকে।

 

বৃহত্তর আন্দোলনের প্লাটফর্ম গড়ে তুলতে এর মধ্যে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপও করেছে বিএনপি। এরমধ্যে গত ২৪ মে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে গত ২৭ মে বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ৩১ মে গণসংহতি আন্দোলন এবং ১ জুন বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি,১৬ জুন এলডিপি, ১৯ জুন এনপিপি সঙ্গে সংলাপ করেছে বিএনপি।

 

সংলাপের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, সরকার পরিবর্তনে বৃহত্তর আন্দোলন এই প্লাটফর্মের প্রধান দাবি হবে। পাশাপাশি এই আন্দোলনের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিষয় থাকবে রাজনৈতিক কারণে যারা বন্দি আছেন এবং সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে যে ৩৫ লক্ষ মামলা আছে- সেগুলো প্রত্যাহার করতে হবে।

 

সংলাপে অংশ নেয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য সংলাপ চলছে। সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবনা নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হবে। বৈঠকে বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবনাগুলো বিএনপির চিন্তা এবং মতের সাথে মিললে সেগুলো রূপরেখায় সম্পৃক্ত করা হবে।

 

তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলনের খসড়া প্রস্তুত হয়েছে। কিন্তু এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কারণ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চলছে। এই সংলাপের মধ্য দিয়েই রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। আর সংলাপ শেষে এই রূপরেখা জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।’

 

সংলাপের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আলোচনার মূল্য উদ্দেশ্য হচ্ছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে আমাদের মূল্য লক্ষ্য।’

 

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন,’আমাদের রাজপথে দুর্বার আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে। যে আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। যে আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পান। যে আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি।’

 

জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন আমরা বর্জন করলেও ২০১৮ সালের ভোটে অংশ নেই। তাই নির্বাচন নিয়ে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা সেই অভিজ্ঞতা আর চাই না। আমরা চাই, এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে। দলীয় সরকারের অধীনে তা কখনো সম্ভব হবে না। এজন্যই আমাদের মূল টার্গেট নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। সেই দাবিতে আমরা সময়মতো কর্মসূচি দেব।
তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com