অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, বিলীনের পথে একটি গ্রাম

0

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের কালাপাহাড়িয়া এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বিলীন হতে চলেছে চরলক্ষ্মীপুর নামে একটি গ্রাম। 

জানা গেছ, ইতোমধ্যে ছয়টি বসতঘর ও একটি স্কুলের একাংশ নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। আগামী ২ দিনের মধ্যে পুরো স্কুলটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন বাসিন্দারা।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, পার্শ্ববর্তী মেঘনা উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লতি কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের চিহ্নিত দুজন সন্ত্রাসীকে ম্যানেজ করে গ্রামবাসীর অভিযোগকে তোয়াক্কা না করে বালু উত্তোলন করছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে চরলক্ষ্মীপুর গ্রামের অবস্থান। চারদিকে মেঘনার থই
থই পানি। গ্রামে একটি মসজিদ ছিল, আছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। মসজিদটি অনেক আগেই মেঘনার ভাঙনে বিলীন হলে গ্রামবাসী সেটি আবারও অন্যত্র নির্মাণ করেন।

এদিকে, গত ১৯ জুন থেকে ছয়টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। গ্রামের একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১১৮ নং চরলক্ষ্মীপুর নজরুল ইসলাম বাবু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেট এবং একটি কক্ষ নদীতে ভেঙে পড়েছে। বিগত সময়ে চরলক্ষ্মীপুর গ্রামঘেঁষে মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে একাধিকবার নদী ভাঙনের কবলে পড়েছিল গ্রামটি। তবে এখন বালু উত্তোলনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ছে এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ওপর।

নিজের বাড়ি হারানো এরশাদ আলী বলেন, নদী ভাঙনের ফলে ঘর হারিয়ে এখন গাছতলায় বসবাস করছি। কোথাও বসতি গড়ার জায়গা নেই। তবে এই দুঃখ শুধু এরশাদ আলীর নয়, ঘরহারা হক, রশিদ, রুস্তম আলী, স্বপন ও রহমত আলীও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। নদীতে ঘর হারিয়ে তারা বাস্তুহারা হয়ে পড়েছেন।

সদাসদী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক জানান, চর লক্ষ্মীপুর গ্রামে প্রায় ২০০ পরিবারের বসবাস। এর লোকসংখ্যা হাজারের কিছু বেশি। তাদের বেশির ভাগই দরিদ্র শ্রেণির মৎস্যজীবী ও কৃষক। একটি চক্রের অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে স্কুলের শৌচাগার ও একটি শ্রেণিকক্ষ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নিলে হয়তো গোটা গ্রাম বিলীন হয়ে যাবে শিগগিরই।

আড়াইহাজারের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহাদাৎ হোসেন বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন করে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা ও ১১৮ নং চরলক্ষ্মীপুর নজরুল ইসলাম বাবু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়া স্কুলটিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে গ্রামবাসী।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com