শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উদ্বেগ
ক্রমবর্ধমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভ মোকাবিলায় শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জুলি চুং। শ্রীলঙ্কার শান্তিপূর্ণ নাগরিকদের কথা মন দিয়ে শোনা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কানরা যে বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে তার দীর্ঘমেয়াদী সমাধান দরকার। জরুরি অবস্থা সমাধানে সাহায্য করবে না। খবর সিলন টুডের।
বিবিসি, এএফপি ও রয়টার্স জানিয়েছে, কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র আর্থিক সংকট মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ধর্মঘট শুরু করেছেন দেশটির সরকারি ও বেসরকারি খাতের কর্মীরা। এ কারণে গতকাল শুক্রবার দেশটির দোকানপাট, স্কুল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এদিন শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে সংসদ ভবনের বাইরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করছে। দেশের অর্থনৈতিক সংকটে সরকারের পদত্যাগ দাবি করে প্রায় পাঁচ হাজার প্রতিবাদকারী সংসদ ভবনের সামনে জড়ো হয়েছিলেন। শহরের অন্যত্রও হাজার হাজার মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নেন।
বিক্ষোভ মোকাবিলায় শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে এটি কার্যকর হয়েছে।
কলম্বো থেকে বিবিসি সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, আন্দোলনকারীরা সরকারের বিরুদ্ধে কালো পতাকা দেখান। দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থার জন্য প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ও তার ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের পদত্যাগ দাবি করে আসছেন। রাজাপাকসের পরিবার বেশ কয়েক বছর ধরে এই দ্বীপরাষ্ট্রটি শাসন করে আসছে।
প্রেসিডেন্টের এক মুখপাত্র বলেছেন, ট্রেড ইউনিয়নগুলো ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে রাষ্ট্রপ্রধানের পদত্যাগের দাবিতে শুক্রবার দেশব্যাপী সর্বাত্মক ধর্মঘট করার পর তিনি জনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে কঠোর আইনের আহ্বান জানিয়েছেন।
মাস খানেক ধরে বিদ্যুৎ বিপর্যয় এবং খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র ঘাটতিতে ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের দ্বীপ দেশটিতে ব্যাপক জনদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর শ্রীলঙ্কায় এমন দুর্দিন আর দেখা যায়নি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানী কলম্বোর কৃত্রিম একটি দ্বীপে অবস্থিত পার্লামেন্টের দিকে যাওয়ার রাস্তা আটকে দিয়ে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ছাত্র ক্যাম্প বসায়। নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাসের শেল এবং দুটি ট্রাক থেকে জলকামান নিক্ষেপ করেও তাদের হটাতে পারেনি।