২০২৪ সালে কিছুতেই বিজেপি ক্ষমতায় আসবে না: মমতা
বিজেপি ২০২৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এবার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এই ভবিষ্যদ্বাণী করলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার (৫ মে) দলের বর্ষপূর্তির দিন নয়া তৃণমূল ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এই কথাই বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আগামী ১০ মে থেকে আবার প্রশাসনিক বৈঠক করা হবে জানালেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠান সেরে তৃণমূল ভবনে আসেন দলনেত্রী। সেখানে শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে বৈঠক করেন। তারপর সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালে কিছুতেই বিজেপি ক্ষমতায় আসবে না। ওর (অমিত শাহ) সব প্রশ্নের উত্তর আমি দেব না। তবে একটা কথা ওকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, পেট্রোপণ্য-ওষুধের দাম রোজ বাড়ছে। মানুষের পকেট থেকে টাকা কাটছে সেগুলো কী কাটমানি না ছাঁটমানি। ওকে জিজ্ঞেস করুন কাটমানির সংজ্ঞা কী? ওরা রোজ মিথ্যে কথা বলে। রোজ বারবার একই কথা বলা মিথ্যেচার। ভ্রষ্টাচারের রাজনীতি করে বিজেপি। এক বছর পরে এসে তো অমিত শাহের মুখ লুকোনো উচিত।’
এই কথা যখন তিনি বলছেন তখন রাজ্যে উপস্থিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এরপরই তিনি একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সেখানে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘রাজ্য সরকার ৫ মে থেকে ১০ মে এই এক মাস বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছবে। পশ্চিম মেদিনীপুর যাব ১০ মে। সেখানে একটা প্রশাসনিক বৈঠক হবে। ১১ মে বেলা ১২টায় একটি দলীয় বৈঠক করব। তারপর ঝাড়গ্রামে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করব। ১২ মে বেলা ১২টায় ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে দলীয় বৈঠক করব। তার পর কলকাতায় ফিরে আসব।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বৈঠক থেকেই নতুন বার্তা দিতে পারেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাংলা (পশ্চিমবঙ্গ) উন্নয়নের পথে। মানুষের সাথে থেকেই আমাদের কাজ করতে হবে। যে মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন না, কেন পাচ্ছেন না, তার কাছে পরিষেবা পৌঁছে দিতে হবে। পঞ্চায়েত স্তরে আরো বেশি কাজ করতে হবে। পুরসভায় আরো কাজ করতে হবে। আজকের দিনে তৃতীয়বারের জন্য শপথ নিয়েছিলাম। তাই আজকের দিনে মা-মাটি-মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আমাদের কর্মীরা আমাদের ভরসা।’
রাজ্য সফরের প্রথম দিনে শিলিগুড়িতে বিজেপির প্রকাশ্য সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুমুল আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন তিনি বলেন, ‘সংশোধন হওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক বছর সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু উনি সংশোধিত হননি।’
এদিন শিলিগুড়ির রেল ইন্সটিটিউটের মাঠে ভরা জনসভায় প্রথম থেকেই শাহের নিশানায় ছিলেন মমতা। বগটুই, হাঁসখালির ঘটনার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন তিনি। প্রশ্ন তোলেন রাজ্যে বিনিয়োগের বেহাল দশা নিয়ে।
বক্তব্যের একেবারে শেষে শাহ বলেন, ‘মমতা দিদির, কাটমানি, সিন্ডিকেট, কাটমানি, অত্যাচার, দুর্নীতির, গুন্ডারাজ ও রাজনৈতিক সহিংসতার বিরুদ্ধে ভারতীয় জনতা পার্টির লড়াই জারি রয়েছে। তৃণমূলের অত্যাচারী শাসনকে উপড়ে না ফেলা পর্যন্ত ভারতীয় জনতা পার্টি স্বস্তির শ্বাস নেবে না।’
এর পরই মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে শাহের কটাক্ষ, ‘ওনাকে এক বছরের সময় দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম উনি সংশোধিত হবেন। কিন্তু উনি সংশোধিত হননি। আমি ওনাকে বলতে চাই, অনেক বড় বড় মানুষের হাল জনগণ খারাপ করে দেয়।’
রাজ্যের মানুষকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি, ‘আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে যা করা দরকার সবই করবে ভারতীয় জনতা পার্টি।’
এদিনের সভায় শাহ অভিযোগ করেন, রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতি করছে তৃণমূল। বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই লাগিয়ে দিয়ে ফয়দা তোলার চেষ্টা করছে তারা।
সূত্র : হিন্দুস্থান টাইমস