ঈদে সুস্থ থাকার ৭ উপায়
ঈদুল ফিতর একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ ‘রোজা ভাঙার উৎসব’। দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর পালিত হয় এই ঈদ। যেহেতু দীর্ঘ একমাস রোজা রাখার পর ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়, তাই এই ঈদে খাওয়াদাওয়াও হয় ভরপুর।
শুধু ঈদের দিন নয়, পরবর্তী সাতদিন ধরেও অনেকেই পালন করে ঈদ উৎসব। ঈদের মৌসুমে বিভিন্ন স্থানে দাওয়াত, বন্ধুদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া, পার্টি, ঘরোয়া অনুষ্ঠান, বিয়ে ইত্যাদি আয়োজনের কারণে সবারই অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে যায়।
এ কারণে অনেকেই আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। একে তো গরম তার উপরে আবার অতিরিক্ত খেলে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। তাই ঈদে সুস্থ থাকতে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক-
> ঈদের দিন সকালে কয়েকটি খেজুর খেয়ে দিন শুরু করুন। এতে থাকা ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও প্রাকৃতিক চিনি আপনাকে মুহূর্তেই অ্যানার্জি দেবে। আবার পেটও ভরাবে।
আবার খেজুরের সঙ্গে কয়েকটি বাদামও খেতে পারেন। দীর্ঘ একমাস ধরে রোজা রাখার পর ঈদের দিন সকালে ভুল খাবার খেলে আপনি অস্বস্তি বোধ করতে পারেন। তাই ঈদের দিন শুরু করুন পুষ্টিকর খাবার খেয়ে।
> এক মাসের উপবাসের পর শরীরকে খাওয়ার উপযোগী করে তুলতে কিছুটা সময় লাগবে। এজন্য এটা সেটা না খেয়ে অল্প অল্প করে দীর্ঘক্ষণ চিবিয়ে খাবার খান। একবারেই অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই ঈদের দিন বুঝেশুনে খাবার গ্রহণ করুন। অল্প অল্প করে খাবার খেলে হজমও ভালো হবে আবার বিপাকও বাড়বে।
> ঈদের দিন যতটা সম্ভব মিষ্টি খাবার পরিহার করুন। আপনার ডায়াবেটিস থাকলে মিষ্টি খাওয়ার একেবারেই খাবেন না। এতে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
> প্রোবায়োটিক গ্রহণ করুন। রোজা রাখার মাধ্যমে অন্ত্রের উপকারী মাইক্রোবায়োটা বা ভালো ব্যাকটেরিয়া বেড়ে যায়। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
এই ধারা বজায় রাখতে ঈদের দিনও প্রোবায়োটিক দই, পনির ও পলিফেনলসমৃদ্ধ খাবার যেমন- বেরি, পেঁয়াজ ও অতিরিক্ত ভার্জিন তেল খেলে অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়ে।
> পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি গ্রহণ করতে হবে। এখন যেহেতু গরম তাই ডিহাইড্রেশন হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই দিনে কমপক্ষে ৩-৪ লিটার পানি পান করুন। পর্যাপ্ত পানি পান করলে ঘুমও ভালো হয় আবার মেজাজও ভালো থাকে।
প্রয়োজনে তাজা ফলের জুস পান করুন ঈদের দিন। তাজা ফলের রস ক্ষুধা ও রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এমনকি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও কমায়।
> ঈদের দিন বলেই শুধু মাংস খাবেন না। সুস্থ থাকতে খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত শাকসবজিও রাখুন। এতে রোজায় শরীরে যে ভিটামিন ও খনিজগুলো ক্ষয় হয়েছে তা সহজেই পূরণ হবে। এর সঙ্গে সালাদ রাখুন পাতে।
> ঈদে মাংস গ্রহণে সচেতন থাকুন। বিশেষজ্ঞরা লাল মাংস সীমিত খাওয়ার পরামর্শ দেন। বিশেষ করে রোজা ভাঙার পর ডিম বা মাছের চেয়ে মাংস হজম করা আরও কঠিন। আবার এতে প্রচুর ক্যালোরিও থাকে। বেশি মাংস খেলে আপনি এদিন অসুস্থও হয়ে পড়তে পারেন।
> এদিন কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন। এতে ক্যালোরি বেশি থাকে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ সময় উপবাসের পর কার্বনেটেড পানীয় পরিহার করা উচিত। কারণ এগুলো কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট করতে পারে।
এর বিকল্প হিসেবে, আপনি ঘরে তৈরি তাজা রস বা সবুজ চা পান করতে পারেন। এই পানীয়গুলো ডিহাইড্রেশন, ডায়রিয়া, কিডনি সমস্যা ও ক্যানসারসহ বেশ কয়েকটি রোগের সঙ্গেও যুক্ত আছে।
সূত্র: এনডিটিভি