নিরাপত্তা পরিষদকে ‘ব্যর্থ’ বললেন জাতিসংঘ মহাসচিব
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা থামাতে ব্যর্থ হওয়ায় নিরাপত্তা পরিষদের কড়া সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইউক্রেনে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। খবর বিবিসি।
জাতিসংঘের ১৫ সদস্যবিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদের মূল দায়িত্ব হলো বিশ্বজুড়ে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে তুমুল সমালোচনার মধ্যে রয়েছে পরিষদ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও এ নিয়ে সমালোচনা করেছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যদেশের একটি রাশিয়া। ইউক্রেন ইস্যুতে পরিষদে উত্থাপিত একাধিক প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে দেশটি।
সমালোচনার মধ্যেই গত বুধবার রাশিয়া ও গতকাল বৃহস্পতিবার ইউক্রেন সফর করেন জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে খোদ নিজের সংস্থার নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকার সমালোচনা করেন গুতেরেস।
তিনি বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে বলছি, যুদ্ধ বন্ধে নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী সবকিছু করতে এটি (নিরাপত্তা পরিষদ) ব্যর্থ হয়েছে।’ বিষয়টিকে হতাশাজনক বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
জেলেনস্কির উদ্দেশে মহাসচিব আরও বলেন, ‘আপনাকে ও ইউক্রেনের জনগণকে আমি আশ্বস্ত করতে এসেছি যে আমরা হাল ছেড়ে দেব না।’
তবে গুতেরেসের দাবি, নিরাপত্তা পরিষদ কার্যকর ভূমিকা না নিতে পারলেও জাতিসংঘ অন্য কাজগুলো চালিয়ে যাচ্ছে। বিবিসিকে তিনি বলেন, ইউক্রেনে জাতিসংঘের ১ হাজার ৪০০ কর্মী নিয়োজিত আছেন। তারা খাবার, নগদ অর্থ সরবরাহসহ বিভিন্ন সহায়তা দিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়া যেসব যুদ্ধাপরাধ করেছে, তা দেখার সুযোগ গুতেরেসের হয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার কর্মকাণ্ডকে আবারও ‘জেনোসাইড’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
জাতিসংঘ মহাসচিবের ইউক্রেন সফর চলাকালে কিয়েভের সেন্ট্রাল শেভচেঙ্কো এলাকায় দুটি বিস্ফোরণ হয়েছে। শহরের মেয়রের তথ্যানুসারে এ ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
কিয়েভের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বোরোদিয়াঙ্কা শহরে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন গুতেরেস।
তিনি বলেন, নিজের পরিবার এমন পরিস্থিতিতে থাকলে কেমন লাগত, তা অনুভব করতে পারছেন তিনি। ইউক্রেনের দক্ষিণের শহর মারিউপোলের হাজারো মানুষের জীবন রক্ষার জন্যও আকুল আবেদন জানান জাতিসংঘ মহাসচিব।