নিউমার্কেটকাণ্ড: বিএনপি নেতা মকবুল কারাগারে

0

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া ও ভাঙচুরের অভিযোগে করা মামলায় নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর হাকিম ইসরাত জাহান তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে বুধবার দুপুরে মকবুল হোসেনকে আদালতে হাজির করা হয়। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার পুলিশ পরিদর্শক হালদার অর্পিত ঠাকুর তাঁকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্যদিকে তাঁর জামিনের আবেদন করেন তাঁর পক্ষের আইনজীবীরা। আসামিপক্ষের অনুরোধে জামিন আবেদন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করে মকবুলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি হত্যা মামলাসহ মোট চারটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় গত শুক্রবার গ্রেপ্তার দেখানো হয় মকবুল হোসেনকে। ওই মামলায় আদালত গত শনিবার তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তিন দিনের রিমান্ড শেষে বুধবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়।

গত ১৮ এপ্রিল ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এর পর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও গত ১৯ এপ্রিল সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। নিহতদের একজন একটি কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মচারী নাহিদ এবং অন্যজন দোকান কর্মচারী।

পুলিশ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সংঘর্ষের সূত্রপাত নিউমার্কেটের ভেতরে থাকা ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল ফাস্ট ফুড নামের দুই দোকান কর্মচারীর দ্বন্দ্ব থেকে। সেই দোকান দুটি সিটি করপোরেশন থেকে মকবুল হোসেনের নামে বরাদ্দ রয়েছে। রফিকুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম নামে দুজন এই দোকান চালাতেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ওই দিনের সংঘর্ষে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন মকবুল হোসেন। তিনিই এই মামলার এজাহারভুক্ত এক নম্বর আসামি।

পুলিশ প্রতিবেদনে গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, এ ঘটনার সঙ্গে আরও কারা জড়িত, তা শনাক্তের জন্যই এ জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।

সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করে। একটি মামলা বিস্ফোরক আইনে এবং অন্যটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে করা হয়। দুই মামলাতে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীসহ মোট ১২০০ জনকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া সংঘর্ষে নিহত নাহিদের বাবা মো. নাদিম হোসেন ও মুরসালিনের ভাই নুর মোহাম্মদ বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় দুটি হত্যা মামলা করেন। এই চার মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জনকে।

এসব মামলাগুলোর মধ্যে শুধু পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে করা মামলায় বিএনপি নেতা মকবুলসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার পুলিশ পরিদর্শক ইয়ামিন কবীর। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন─ আমির হোসেন আলমগীর, মিজান, টিপু, হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম শন্টু, শহিদুল ইসলাম শহিদ, জাপানি ফারুক, মিজান ব্যাপারী, আসিফ, রহমত, সুমন, জসিম, বিল্লাল, হারুন, তোহা, মনির, বাচ্চু, জুলহাস, মিঠু, মিন্টু ও বাবুল।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com