কালবৈশাখীর ঝুম বৃষ্টিতে ভিজলো রাজধানী
বৈশাখের তপ্ত আকাশের দিগ্বিদিক কালো করে হুড়মুড় করে চলে এলো কালবৈশাখী ঝড়। গরমে হাঁসফাঁস করা নগরবাসীর পেলো শান্তির ছোঁয়া। শুক্রবার বিকালে রাজধানীসহ আশপাশের অঞ্চলে বয়ে যায় কালবৈশাখীর ঝুম বৃষ্টি। এর আগেই দেশের আট বিভাগে কম-বেশি ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার আভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তবে এই আচমকা ঝড়-বৃষ্টি নগরবাসীকে স্বস্তি দেয়ার পাশাপাশি কিছু বিড়ম্বনাও দিয়েছে। বৃষ্টির ফলে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়া যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এর ফলে সাধারণ মানুষকে পড়তে হয় দুর্ভোগে।
মোহাম্মদপুর নিবাসী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বৃষ্টি হওয়ায় ভালো লাগছে ঠিকই, তবে জায়গায় জায়গায় পানি জমে জ্যাম আর কাঁদার্ তৈরি হওয়া বেশ বিরক্তিকর। খানিক বৃষ্টিতে রাস্তায় পানি জমে ট্রাফিক জ্যামের সৃষ্টি যেন চিরপরিচিত দৃশ্য। শুক্রবারের বৃষ্টির ফলে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে দেখা যায় যানজট।
যাত্রী কাউসার আহমেদ বলেন, ইফতারের দাওয়াতের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলাম, জানি না সময়মতো পৌঁছাতে পারবো কিনা।
এছাড়া রমজান মাস উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা ইফতারসামগ্রী বিক্রি করে থাকেন। হঠাৎ বৃষ্টির ফলে বিপাকে পড়ে যান তারা।
মগবাজারের ইফতারি বিক্রেতা আবদুল হালিম জানান, বৃষ্টি আসায় তড়িঘড়ি করে সব গোছাতে হয়েছে। যে পরিমান বৃষ্টি হলো, কাস্টমার আসবে কিনা সে চিন্তায় আছি।
কালবৈশাখী ঝড় উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে একে ইংরেজিতে নরওয়েস্টার বলা হয়। ভূপৃষ্ঠস্থ বায়ু অত্যধিক গরম হলে বাতাস হালকা ও অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। উত্তপ্ত হালকা বাতাস সোজা ওপরে উঠে শীতল হয়ে কিউমুলাস মেঘ সৃষ্টি করে।
বায়ুমণ্ডলের অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে কিউমুলাস মেঘ উল্লম্বভাবে কিউমুলোনিম্বাস নামক কালো মেঘ তৈরি করে এবং পরবর্তী সময়ে বজ্রঝড়ের সৃষ্টি করে। সাধারণ ঝড়ের সঙ্গে কালবৈশাখীর প্রধান পার্থক্য হচ্ছে-এই ঝড়ের সঙ্গে সবসময়ই বিদ্যুৎ চমকায় এবং বজ্রপাত হয়।
মেঘে প্রচুর জলীয়বাষ্পের উপস্থিতি এবং বায়ুর পুঞ্জীভূত ঊর্ধ্বচলনের ফলে কালবৈশাখীর সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে।