সরকারপতনে যাদের সাহায্য চাইলেন ইমরান
অনাস্থা ভোটে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানো ইমরান খান দেশজুড়ে নতুন সরকার পতন আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। এই আন্দোলনে এবার প্রবাসী পাকিস্তানীদেরও যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। খবর এনডিটিভি।
শুক্রবার সামাজিক যাগাযোগমাধ্যম টুইটারে একটি ভিডিওবার্তা টুইট করেছেন ইমরান খান। সেই ভিডিওবার্তায় প্রবাসী পাকিস্তানিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বর্তমানে পাকিস্তানে যে সরকার ক্ষমতাসীন রয়েছে, তার নেতৃত্বে রয়েছে কিছু ‘চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ’ এবং এই সরকারের পতন ও অবিলম্বে একটি সাধারণ নির্বাচনের দাবিতে দেশের জনগণ আন্দোলন করছে।
আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে প্রবাসী পাকিস্তানিদের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন ইমরান খান। এ বিষয়ে ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, পিটিআইয়ের উদ্যোগে ‘নামঞ্জুর ডটকম’ নামে একটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। যেসব প্রবাসী পাকিস্তানি চলমান সরকার আন্দোলন সমর্থন করছেন, তারা এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্থ পাঠাতে পারেন।
গত শনিবার (১০ এপ্রিল) মধ্যরাতে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে বিরোধীদলীয় এমপিদের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতা হারান সফল ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিতে আসা ইমরান খান, যিনি ২০১৮ সালে দুর্নীতিমুক্ত, সমৃদ্ধ ও বিশ্বের কাছে শ্রদ্ধা পাওয়ার মতো দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ভোটে জিতে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।
তবে ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে সেনা শাসনে থাকা পাকিস্তানে তার ক্ষমতা আরোহনের নেপথ্যে সেনাবাহিনীর আশির্বাদ ছিল বলে মনে করা হয়। এ কারণেই বড় দুই দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও মুসলিম লিগকে (নওয়াজ) হটিয়ে ক্ষমতায় বসার সুযোগ পান তিনি।
সম্প্রতি সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে ইমরানের সম্পর্কের অবনতি হয়। এর মধ্যে বিরোধী দলগুলো জোট বেঁধে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে।
এই পরিস্থিতিতে গত ২৮ মার্চ ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব তোলেন পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ- নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় নেতা শেহবাজ শরিফ, অন্যান্য বিরোধী দলগুলোও তার এই প্রস্তাবে সমর্থন জানায়।
তারপর নানা নাটকীয়তার পর গত ১০ এপ্রিল সেই অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট হয় এবং তার ফলে ক্ষমতা হারান ইমরান খান, প্রধামন্ত্রীর গদিতে আসীন হন শেহবাজ শরিফ।
পিএমএল-এনের সাবেক সভাপতি নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতা হারিয়েছেন তিনি। বর্তমানে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আছেন নওয়াজ। তার ভাই ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
ভিডিওবার্তায় ইমরান বলেন, ‘আমাদের দাবি হলো, জনগণকে তাদের সরকার বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক। জনগণ যদি আমাদের চায়, তাহলে স্বাগত; আর যদি চোরদের নেতৃত্বাধীন সরকার চায়, তাহলেও আমরা মেনে নেব। কিন্তু, জনগণকে সেই বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক এবং অবিলম্বে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হোক। পাকিস্তানের জনগণ তাদের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করছেন। আপনাদের (প্রবাসী পাকিস্তানি) সমর্থন ও সহায়তা এই আন্দোলনকে আরও বেগবান করবে।’