এনএবি ভেঙে দিয়ে কর্মকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান আব্বাসির
পাকিস্তানে নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সরকারের প্রতি জাতীয় জবাবদিহিতা বিষয়ক ব্যুরোকে (এনএবি) ভেঙে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এখন ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) নেতা শাহিদ খাকান আব্বাসি। একই সঙ্গে এই সংস্থায় যেসব কর্মকর্তা কর্মচারী আছেন তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অনলাইন ডন-এর খবর, ইসলামাবাদে মঙ্গলবার সকালে মিডিয়ার সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি বলেন- এনএবির কর্মকর্তা কর্মচারীরা বছরের পর বছর লুটপাট এবং জনগণের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। এখন সময় এসেছে তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার। শাহিদ খাকান আব্বাসি এই সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে এক সময় দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তার অভিযোগ ওঠে যে, পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির চেয়ারম্যান ও সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করছিলেন। এ জন্য তিনি পদত্যাগ করেন।
আব্বাসি আরও দাবি করেন, ইমরান খানের অফিসে একজন মন্ত্রী ছিলেন।
তিনি এনএবি প্রধানকে নির্দেশ দিতেন ভুয়া মামলা রেকর্ড করতে। লোকজনকে গ্রেপ্তার করতে এবং তাদের সম্মানহানী করতে। পিএমএলের এই নেতা আরও বলেন, এই হলেন আপনাদের এনএবি চেয়ারম্যান, যিনি ইমরান খানের দুর্নীতি থেকে সরে এসেছেন। তিনি আরও দাবি করেন, গত চার বছরে পিএমএলএনের কোনো নেতার বিরুদ্ধে একটি সিঙ্গেল রেফারেন্স বা তদন্তে তাদেরকে দায়ী বলে প্রমাণ করতে পারেনি। আব্বাসি প্রশ্ন রাখেন, যেসব মানুষ শত শত কোটি রুপি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীপরিষদে বসেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কেন তদন্ত হয়নি? তাই এখন সময় এসেছে এনএবিকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার। তার ভাষায়Ñ আমরা কারও বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবো না। তবে শুধু জনগণের সামনে এনএবির বাস্তবতা তুলে ধরতে চাই। দেশে জবাবদিহিতা আছে। যদি আপনি দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হতে চান, তাহলে এনএবিতে যান।
তিনি আরও বলেন, সরকারের উচিত এনএবি আদালতের ভিতরে ক্যামেরা স্থাপন করা, যাতে জনগণ প্রকৃতপক্ষে জানতে পারে যে, কে দুর্নীতিতে জড়িত। আমরা কাউকে গ্রেপ্তার করতে চাই না। ইমরান খানের এনএবির চেয়ারম্যানের মতো দুর্বল ব্যক্তিদের প্রথমে গ্রেপ্তার করা হবে। এ সময় তিনি আরও বলেন, গত চার বছরে যেসব ঘটনা ঘটে গেছে, তা জনগণের সামনে আনা হবে।
ওদিকে সোমবার পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন পিএমএলএনের শাহবাজ শরীফ। এর আগেই ক্ষমতা থেকে উৎখাত হন ইমরান খান। তিনি অভিযোগ করেন সম্মিলিত বিরোধী জোট এখন তাদের লুটের অর্থ সুরক্ষিত রাখবে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে তদন্ত চলছিল, তা থেকে দূরে সরে থাকবে। গত তিনটি বছর পিএমএলএন এবং পিটিআইয়ের মধ্যে কঠিন অবস্থা সৃষ্টি করেছিল এনএবি এবং তাদের ক্ষমতা। এ সময়ে দুর্নীতির অভিযোগে পিএমএলএন এবং পিপিপির নেতাদের বহুবিধ মামলার মুখোমুখি হতে হয়েছে এনএবিতে। ২০১৮ সালে পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ইমরান খান ক্ষমতায় আসেন। তিনি তখন দাবি করেছিলেন, শাহবাজ ও নওয়াজ শরীফের দুর্নীতির বিষয় জনসমক্ষে প্রকাশ করবে জবাবদিহিতা বিষয়ক ব্যুরো এনএবি। একই সঙ্গে জনগণের অর্থ লুট করার কারণে তাদেরকে শাস্তি দেবে। ওই সময় পিপিপি এবং পিএমএলএন বার বার অভিযোগ করেছে যে, ইমরান খান নেতৃত্বাধীন পিটিআই সরকার এবং তাদের দুর্নীতি বিরোধী কমিশন পক্ষপাতী, একপেশে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কাজ করছে। বিরোধী দলীয় সদস্যদেরকে টার্গেট করতে সখ্য গড়ে উঠেছে সরকার ও এনএবির মধ্যে।