মেক্সিকোর গণভোটে ৯০ শতাংশ ভোট পেয়েছেন লোপেজ ওব্রাডর
মেক্সিকোতে একটি নজিরহীন গণভোটে, প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডরকে স্বপদে বহাল থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন দেশটির জনগণ। রেববার অনুষ্ঠিত ওই ভোটে দশজনের মধ্যে নয়জন মেক্সিকানই তাকে স্বপদে থাকার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। ভোটের এই ফলাফল, দেশটির রাজনৈতিক মেরুকরণে তার আধিপত্যকেই নির্দেশ করে।
সমালোচক এবং সমর্থক উভয়ই, তার এই বিজয়কে ‘ব্যালটের পূর্বনির্ধারিত ফলাফল’ হিসাবেই দেখছেন।
তাদের ধারণা, এখন তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার ক্ষমতার মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে পারেন। মেক্সিকোতে এখন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বের মেয়াদ ছয় বছর।
রোববার রাতেই ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল ইনস্টিটিউট (আইএনই) প্রথমিকভাবে ধারণা দিয়েছিল যে ৯০.৩ শতাংশ থেকে ৯১.৯ শতাংশ ভোটার লোপেজ ওব্রাডোরকে সমর্থন করেছেন।
বিরোধীদের বাক্যবাণে জর্জরিত করে, লোপেজ ওব্রাডর গণভোটের এই ফলাফলকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন। এ সময় তিনি, পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বীদের ভোটের সাথে তার পাওয়া ভোট-সংখ্যার সাথে তুলনা করেন।
এক ভিডিও ভাষণে তিনি বলেন, আমাদের মেক্সিকোতে কোনো রাজা নেই, এটি একটি গণতান্ত্রিক দেশ এবং জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস।
কট্টরপন্থী বামপন্থী, লোপেজ ওব্রাডর, আধুনিক মেক্সিকোতে প্রথম তথাকথিত ‘রিকল রেফারেন্ডাম’ বা প্রত্যাহার-গণভোট প্রচলন করেন। লোপেজ ওব্রাডর, এই ফলাফলকে তার পক্ষে গণরায়ের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করেন।
বিরোধী নেতারা জোরে-শোরেই তাদের সমর্থকদের ভোটদানে নিরুৎসাহিত করেছিলেন। অনেকে এই গণভোটকে একটি ‘প্রচারণা’ বলে উল্লেখ করেন অবাস্ত ও বিভ্রান্তি বলে সমালোচনা করেন।
চলতি মাসে, এল ফিনান্সিরো সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি জরিপে ১৬ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ এর মধ্যে ভোটার উপস্থিতি হবে বলে অনুমান করা হয়েছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, লোপেজ ওব্রাডর এই ফলাফলকে তার ব্যক্তিগত বিজয় হিসেবে কংগ্রেস অধিবেশনে ব্যবহার করবেন। আগামী সপ্তাহে কংগ্রেসের অধিবেশন বসবে। সেখানে, বিদ্যুতখাতে সাংবিধানিক পরিবর্তন আনার তার প্রস্তাবের পক্ষে এই ফলাফরের প্রভাব ব্যবহার করবেন।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে লোপেজ ওব্রাডর হিংসাত্মক অপরাধ হ্রাস এবং অর্থনীতিকে গতিশীল করবেন বলে প্রচারা অভিযান কালে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা পালনে ব্যর্থ হন। এছাড়া, বিনিয়োগকারীদের সা চুক্তি নবায়নের চেষ্টা করে এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার মাধ্যমে পরিস্থিতি অস্থির করে তুলেন।
প্রেসিডেন্ট ওব্রাডর, ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে এই গণভোটে বাধা চেষ্টা করার অভিযোগ করেন। প্রতিষ্ঠানটি সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। ফলাফলের পর আবারো তাদের সমালোচনা করেন প্রেসিডেন্ট ওব্রাডর।
সূত্র : ভয়েস অফ আমেরিকা