দনবাস স্বাধীনের পর কিয়েভ নেব আমরা: কাদিরভ
ইউক্রেনের পূর্বদিকের দুই অঞ্চল— দনেতস্ক ও লুহানস্ককে (দনবাস) স্বাধীন করার পর রাজধানী কিয়েভসহ পুরো দেশ দখলে অভিযান শুরু করবে রুশ বাহিনী। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে নিজস্ব চ্যানেলে পোস্ট করা এক ভিডিওবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন রুশ বাহিনীর অন্যতম কমান্ডার ও রাশিয়ার উত্তর ককেশাস পার্বত্য এলাকার স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল চেচনিয়ার প্রেসিডেন্ট রমজান কাদিরভ।
গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর মারিউপোলে তীব্র সংঘাত চলছে রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনাদের মধ্যে। ভিডিওবার্তায় সে বিষয়টি উল্লেখ করে কাদিরভ বলেন, ‘কেবল মারিউপোল নয়, শিগগিরই (ইউক্রেনের) অন্যান্য এলাকা, গ্রাম ও শহরেও অভিযান শুরু হবে।’
‘লুহানস্ক ও দনেতস্কতে পুরোপুরি স্বাধীন করার পর রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের সব শহর দখলে অভিযান শুরু করব আমরা। সময়মতো শুরু হবে এই অভিযান।’
‘আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই যে, আসন্ন অভিযান থেকে পিছু হটার কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। এক পা ও পিছু হটবনা আমরা এবং এ ব্যাপারে কারো মনেই কোনো সংশয় থাকা উচিত হবে না।’
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত দু’বার রাশিয়ান ফেডারেশন থেকে চেচনিয়াকে বের করে নেওয়ার চেষ্টা করেছে চেচেন বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। কিন্তু দু’বারই সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে মস্কো।
তবে সহজেই যে চেচেন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন করা সম্ভব হয়েছে— এমন নয়। যুদ্ধে রুশ ও চেচেন— দু’পক্ষেই হতাহতের সংখ্যা ছিল বহু। তবে সংঘাত শেষ হওয়ার পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত চেচনিয়ার পুনর্গঠনে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে মস্কো।রমজান কাদিরভ চেচনিয়ার প্রেসিডেন্ট বা প্রধান নির্বাহী হন ২০০৭ সালে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একান্ত অনুগত ও বিশ্বস্ত এই রাজনীতিক রাশিয়া ও রাশিয়ার বাইরে ‘পুতিনের পদাতিক’ নামেও পরিচিত।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। অভিযান শুরুর পর থেকে মস্কো বলে আসছিল— পুরো ইউক্রেন দখলের অভিপ্রায় রাশিয়ার নেই।
কাদিরভের সর্বশেষ ভিডিওর সঙ্গে অবশ্য মস্কোর অবস্থান সাংঘর্ষিক। তবে তার বক্তব্য খারিজ করে এ পর্যন্ত কোনো বার্তা ক্রেমলিন থেকে আসেনি।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে অভিযানরত রুশ বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেন চেচেন যোদ্ধারা। ওই দিন এক ভিডিওবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছিলেন রমজান কাদিরভ নিজেই।
ঠিক কতজন চেচেন যোদ্ধা যোগ দিয়েছিল, তা তিনি স্পষ্ট করেননি; তবে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, ১২ হাজারেরও কিছু বেশি সেনা যোগ দিয়েছে রুশ বাহিনীতে।
সূত্র: রয়টার্স