সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করে যেসব কারণে পরাজিত হয়েছিলেন হিটলার

0

১৯৩৯ সালের ২৩ আগস্ট। অ্যাডলফ হিটলারের জার্মানি এবং জোসেফ স্তালিনের সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে একটি চুক্তি বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিল। নাৎসি এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে সে চুক্তির ফলে ইউরোপের অন্য দেশগুলো বিস্মিত হয়েছিল। কারণ হিটলারের নাৎসি এবং স্তালিনের সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়নের মতাদর্শ পুরোপুরি বিপরীত।

নাৎসি মতাদর্শের হিটলার কমিউনিস্ট সোভিয়েত ইউনিয়নকে ঘৃণা করতেন।

চুক্তির মূল বিষয় ছিল- একে অপরকে আক্রমণ করবে না।

প্রকৃতপক্ষে সে চুক্তির মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভিত রচিত হয়েছিল।

এই চুক্তির ফলে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং জার্মানি ভাগাভাগি করে পোল্যান্ড দখল করে নেয়।

এ চুক্তিটি ছিল কার্যত পূর্ব-ইউরোপকে দুই ভাগে বিভক্ত করা। একটি অংশে ছিল জার্মানির প্রভাব, অন্য অংশে তৈরি হয় রাশিয়ার প্রভাব।

জার্মানির সাথে সোভিয়েত ইউনিয়নের চুক্তি ফলে ইউরোপে হিটলারের আধিপত্যবাদি মনোভাব আরো তীব্র হয়।

চুক্তির এক সপ্তাহের মধ্যেই অর্থাৎ ১৯৩৯ সালের পয়লা সেপ্টেম্বর অ্যাডলফ হিটলারের জার্মানি পোল্যান্ড আক্রমণ করে।

শুরু হয়ে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।

এর দুই দিন পরেই ব্রিটেন ও ফ্রান্স জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।

১৯৪৭ সালের মে মাসে হিটলার ফ্রান্স আক্রমণ করেন এবং মাত্র ছয় সপ্তাহের মধ্যে ফ্রান্স দখল করে নেন। কিন্তু রাশিয়ার সাথে জার্মানির সে শান্তিচুক্তি খুব একটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।

ফ্রান্স দখল করার পর সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হতে থাকে জার্মানি।

হিটলার তার সেনাবাহিনীকে পরিকল্পনার করার নির্দেশ দেয়।

স্তালিনের নেতৃত্বে ‘ইহুদি বলশেভিস্টদের’ হটিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নে নাৎসি আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল হিটলার।

অপারেশন বারবারোসা
বার্লিনভিত্তিক গবেষক ডেভিড স্টাহিল লিখেছেন, ১৯৪০ সালের ১৮ ডিসেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণের জন্য পরিকল্পনা করার নির্দেশ দেন হিটলার।

১৯৪১ সালের ২২ জুন সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করে জার্মানি।

প্রায় ৩৫ লাখ জার্মান সৈন্য ১৮০০ মাইল সীমান্ত এলাকাজুড়ে আক্রমণ শুরু করে।

এ সৈন্যদের মধ্যে ৮০ শতাংশ ছিল জার্মান এবং বাকিরা ছিল হিটলারের সহযোগী বিভিন্ন দেশের।

হিটলারের প্যানজার ডিভিশন প্রায় সাড়ে তিন হাজার ট্যাংক এবং দুই হাজার সাত শ’ যুদ্ধবিমান নিয়ে আক্রমণ শুরু করে।

পৃথিবীর ইতিহাসে এটি ছিল সবচেয়ে বড় আক্রমণ।

জার্মান সৈন্যরা তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে অগ্রসর হতে শুরু করে। প্রতিটি গ্রুপের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল।

সৈন্যদের তিনটি গ্রুপ ছিল- উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্য।

উত্তরের দলটি বল্টিক রাষ্ট্র লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া এবং এস্তোনিয়ার ভেতরে দিয়ে অগ্রসর হয়ে লেলিনগ্রাদে পৌঁছবে।

দক্ষিণের দলটি ইউক্রেন দিয়ে আক্রমণ শুরু করবে এবং কিয়েভ হয়ে ডনবাস শিল্প এলাকা দখল করবে।

মধ্য দলটি বেলারুশের মিনস্ক দিয়ে আগ্রসর হয়ে মস্কো পৌঁছবে।

হিটলার ধারণা করেছিলেন, ১০ সপ্তাহের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন দখল করা যাবে।

অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের পশ্চিম সীমান্তে সৈন্য জড়ো করে। কিন্তু তাদের নির্দেশ দেয়া হয় তারা যাতে কোনো উস্কানি না দেয়।

সোভিয়েত নেতা জোসেফ স্তালিন ধারণা করতে পারেননি যে, জার্মানি এতো তাড়াতাড়ি আক্রমণ করবে।

যুদ্ধে যোগ দেয়ার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রায় ৫০ লাখ সৈন্য ছিল এবং ট্যাংক ছিল প্রায় ২৩ হাজার। তারপরেও জার্মানি যখন আক্রমণ করে তখন সোভিয়েত রেড আর্মি প্রস্তুত ছিল না।

জার্মানির ভালো সূচনা
হিটলারের বাহিনী শুরুতেই চড়াও হয় সোভিয়েত বাহিনীর উপর। জার্মানির সৈন্যরা বেশ দ্রুত তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে শুরু করে।

জার্মানির যুদ্ধবিমান আকাশে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে।

প্রথম দিনেই সোভিয়েত ইউনিয়নের এক হাজার আট শ’ যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে জার্মানি। অধিকাংশ বিমান তখন মাটিতেই ছিল।

কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই একের সোভিয়েত ইউনিয়নের একের পর এক এলাকা দখল করে জার্মান সৈন্যরা।

এছাড়া হাজার হাজার সোভিয়েত সৈন্য মারা যায়। আরো বহু সৈন্য আটক হয় জার্মানদের হাতে।

হিটলারের কৌশল বদল
ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরেও সোভিয়েত সৈন্যরা ধীরে ধীরে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

ইতোমধ্যে জার্মান সেনাবাহিনীর মধ্যম দলটি অস্ত্র, গোলাবারুদ, জ্বালানী তেল এবং খাবারের সঙ্কটে পড়ে।

এমন অবস্থায় হিটলার মস্কো অভিমুখে অভিযান থামানোর নির্দেশ দেয় এবং উত্তর ও দক্ষিণের দল দুটোর শক্তিবৃদ্ধি করতে বলে।

হিটলার তখন মনোনিবেশ করে লেলিনগ্রাদ এবং কিয়েভ দখলের দিকে।

এজন্য অন্যান্য জায়গা থেকে সৈন্য এবং রসদ এনে সেদিকে যোগান দেয়া হয়। কিন্তু জার্মানির ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা এর বিরোধিতা করেন। কারণ জার্মানির সৈন্যরা তখন মস্কো থেকে ২২০ মাইল দূরে।

কিন্তু হিটলারের বিবেচনায় মস্কোর চেয়ে ইউক্রেন ছিল বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ইউক্রেনে প্রাকৃতিক সম্পদ বেশি।

অগাস্ট মাসের ২১ তারিখে হিটলার নির্দেশ দেন যে ক্রাইমিয়া এবং ডনবাস অঞ্চলকে প্রাধান্য দিতে হবে।

জার্মানির এই কৌশলে সোভিয়েত ইউনিয়ন অনেকটা হতভম্ব হয়ে যায়।

সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ কিয়েভ দখল করে হিটলার বাহিনী এবং সাড়ে ছয় লাখের বেশি রাশিয়ার সৈন্য নিহত এবং আটক হয়।

সেপ্টেম্বরে সমগ্র রাশিয়া থেকে লেলিনগ্রাদকে বিচ্ছিন্ন করে অবরোধ করে রাখে জার্মান সৈন্যরা। কিন্তু লেলিনগ্রাদ নিয়ন্ত্রণে নেবার মতো শক্তি অনেকটা স্তিমিত হয়ে গেছে জার্মান সৈন্যদের।

হিটলার নির্দেশ দেন লেলিনগ্রাদকে অবরোধ করে রাখার জন্য। যাতে সেখানকার মানুষ খাবারের অভাবে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

মস্কো নিয়ে লড়াই
অক্টোবর মাসের গোড়ার দিকে হিটলার মস্কো শহর দখল করার জন্য পুনরায় অভিযান শুরুর নির্দেশ দেয়।

এ অভিযানের নাম দেয়া হয় অপারেশন টাইফুন।

হিটলার ধারণা করেছিলেন রাজধানী মস্কো শহর দরে রাখার মতো শক্তি রাশিয়ার নেই।

তাদের সামরিক শক্তি হয়তো এরই মধ্যে কমে গেছে।

কিন্তু সোভিয়েত রেড আর্মি এরই মধ্যে তাদের শক্তি সঞ্চয় করেছে।

এ বিষয়টি হিটলারের ধারণার বাইরে ছিল। প্রায় ১০ লাখ সৈন্য তৈরি রেখেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন।

অন্যদিকে হিটলারেরও প্রায় ১০ লাখ সৈন্য ও এক হাজার সাত শ’ ট্যাংক তৈরি ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন লড়াই করে জার্মান সৈন্যরা এরই মধ্যে ক্লান্ত। এছাড়া ততদিনে আবহাওয়া বদলাতে শুরু হয়ে গেছে।

তারপরেও মস্কো অভিযানের শুরুর দিকে হিটলার বাহিনী সফলতা পেয়েছিল। রাশিয়ার প্রায় ছয় লাখ সৈন্য বন্দি করে জার্মানরা।

মস্কোর কাছাকাছি যাওয়ার পরে জার্মান সৈন্যদের গতি অনেকটা কমে যায়। বৃষ্টিতে রাস্তাগুলো একেকটি কর্দমাক্ত নদীতে পরিণত হয়।

কর্দমাক্ত রাস্তায় ট্যাংক এবং ঘোড়ার গাড়িতে করে সামরিক সরঞ্জাম পরিবহন করতে পারছিল না হিটলারের সৈন্যরা।

এমন অবস্থায় মস্কো দখলের অভিযান আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় জার্মান সৈন্যরা।

নভেম্বরের মাঝামাঝি তাপমাত্রা কমতে থাকে এবং তীব্র শীতে অনেকটা বরফের মতো হয়ে যায়।

তারপরেও হিটলারের বাহিনী মস্কো দখলের জন্য আরেকবার অভিযান শুরু করে।

কিন্তু বিরতির এই সময়টিতে রাশিয়ান বাহিনী পুনরায় তাদের শক্তি সঞ্চয় করে।

সাইবেরিয়া এবং দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে তারা আরো সৈন্য জড়ো করে।

কিন্তু তারপরেও জার্মান বাহিনী মস্কোর একেবারে ১২ মাইলের মধ্যে চলে আসে। জার্মান সৈন্যরা তখন ক্রেমলিনের দালান দেখতে পাচ্ছিল।

তীব্র শীতে এবং বরফে কাবু হয়ে যায় হিটলার বাহিনী।

এমন অবস্থায় ডিসেম্বরের ৫ তারিখে রাশিয়ার সৈন্যরা পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। একদিকে তীব্র ঠাণ্ডা এবং অন্যদিকে রাশিয়ার সৈন্যদের আক্রমণ – এ দুই পরিস্থিতিতে হিটলারের সৈন্যরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। তাদের অনেক সামরিক সরঞ্জামও ধ্বংস হয়েছে।

পিছু হঠতে হঠতে জার্মান সৈন্যরা মস্কোর ১৫০ মাইল দূরে চলে আসে। ক্ষুব্ধ হিটলার এ সময় জার্মান সেনাবাহিনীর প্রধানকে বরখাস্ত করেন।

স্তালিনগ্রাদ লড়াই
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধ ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ এবং দীর্ঘস্থায়ী।

হিটলারের অপারেশন বারবারোসা ব্যর্থ হবার পর ১৯৪২ সালের গ্রীষ্মকালে হিটলার এবার ভিন্ন দিক দিয়ে রাশিয়া আক্রমণ করেন।

লক্ষ্য ছিল, তেলসমৃদ্ধ ককেশাস অঞ্চল দখল করে স্তালিনগ্রাদ শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়া।

স্তালিনগ্রাদের এই যুদ্ধ ছিল বেশ কিছু সামরিক অভিযানের যোগফল।

স্তালিনগ্রাদ শহর দখলের জন্য হিটলারের নাৎসি বাহিনী তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের রেডফোর্সের সাথে।

১৯৪২ সালের জুলাই মাসের শেষের দিক থেকে শুরু করে ১৯৪৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এ যুদ্ধ চলেছিল। শেষ পর্যন্ত এ যুদ্ধে হিটলারের বাহিনী পিছু হঠতে বাধ্য হয়।

স্তালিনগ্রাদের এই যুদ্ধ প্রকৃতপক্ষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল বলে মনে করেন ইতিহাসবিদরা।

কেন হিটলার ব্যর্থ হলেন?
যুদ্ধের শুরুর দিকে জার্মানরা রাশিয়ার অনেক এলাকা দখল করে এবং সোভিয়েত বাহিনীকে ব্যাপক ব্যাপক ক্ষতির মুখে ফেলে। কিন্তু তারপরেও চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়নি।

ব্রিটেনের ইম্পেরিয়াল ওয়ার মিউজিয়ামের এক বিশ্লেষণের বলা হয়েছে, হিটলারের বাহিনী পরাজয়ের একটি বড় কারণ ছিল কৌশলগত ভুল।

জার্মানির কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছিল না।

হিটলার ভেবেছিলেন খুব দ্রুত তারা রাশিয়া দখল করত পারবেন।

হিটলারের ধারণা ছিল, প্রথম দিকে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে রাশিয়ার সৈন্যরা আত্মসমর্পণ করবে। কিন্তু বাস্তবে সেটি হয়নি।

দূরত্ব, সামরিক সরঞ্জাম পরিবহনে জটিলতা এবং সোভিয়েত বাহিনীর বিপুল সৈন্য সংখ্যা – এসব কারণে জার্মান সৈন্যরা তাদের প্রাথমিক সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি।

হিটলারের ভুল সিদ্ধান্ত
জার্মান বাহিনী যদি মস্কো দখল করে নিতো তাহলে সেটির মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব পড়তো সোভিয়েত বাহিনীর উপর। যুদ্ধের মোড় হয়তো তখন ভিন্ন দিকে ঘুরে যেতো।

ইম্পেরিয়াল ওয়ার মিউজিয়ামের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সাময়িক বিরতি দিয়ে আবার যখন ‘অপারেশন টাইফুন’ শুরু হয় তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে ততদিনে সোভিয়েত বাহিনী আবারো শক্তি সঞ্চয় করে।

এছাড়া ততদিনে জার্মান বাহিনী অনেক শক্তি ক্ষয় করে দুর্বল হয়ে গেছে।

এছাড়া তীব্র শীত তাদের কাবু করে ফেলে।

ভুল গোয়েন্দা তথ্য
রাশিয়ার সামরিক শক্তিকে খাটো করে দেখেছিলেন জার্মান গোয়েন্দারা।

১৯৩৯-৪০ সালে ফিনল্যান্ড আক্রমণ করে রাশিয়ার বাহিনী সফলতা পায়নি। এর বিষয়টি জার্মানিকে আরো উৎসাহিত করেছে। এছাড়া জার্মানরা ভেবেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম তৈরিতে সক্ষম নয়। কিন্তু এটি সঠিক ছিল না।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ট্যাংক তৈরির প্রযুক্তিতে জার্মানির চেয়ে এগিয়ে ছিল।

সবচেয়ে বড় বিষয় ছিল, রাশিয়ার সৈন্য সংখ্যা এবং তাদের লড়াই করার ক্ষমতাকে খাটো করে দেখেছিলেন জার্মান গোয়েন্দারা।

মস্কো দখল করার জন্য হিটলারের বাহিনী যখন ‘অপারেশন টাইফুন’ শুরু করে তখনও তারা ভাবতে পারেনি যে রাশিয়া পাল্টা আক্রমণ করতে পারে।

সরঞ্জাম পরিবহনে সমস্যা
জার্মানির পরাজয়ের অন্যতম কারণ হচ্ছে যথাসময়ে সরঞ্জাম পরিবহনে সমস্যা। তাদের সৈন্যরা দ্রুত গতিতে এগিয়ে গেলেও এক পর্যায়ে এসে তারা গোলাবারুদ ও জ্বালানী সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে।

জার্মান বাহিনী যতই রাশিয়ার ভেতরের দিকে প্রবেশ করেছে, সরঞ্জাম পরিবহন করা তাদের জন্য ততই কঠিন হয়ে ওঠে।

এছাড়া রাশিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো ছিল। বৃষ্টির কারণে কর্দমাক্ত রাস্তায় সামরিক সরঞ্জাম পরিবহন রীতিমতো অসম্ভব হয়ে উঠেছিল।

এছাড়া তীব্র শীতে বরফ জমে আরো সমস্যা তৈরি করে।

যুদ্ধ শুরু করার আগে জার্মান সেনাবাহিনী আবহাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রাখেনি।

এছাড়া রাশিয়ায় বিপুল জঙ্গল, খানাখন্দ এবং নদী পেরিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া বেশ কঠিন ছিল জার্মান বাহিনীর জন্য।

সবচেয়ে বড় বিষয় ছিল, সোভিয়েত বাহিনীর তীব্র মনোবল এবং লড়াই করার অদম্য মানসিকতা।

সোভিয়েত সৈন্য এভাবে লড়বে সেটি ভাবেতেই পারেনি হিটলার। কিন্তু বাস্তবতা ছিল তার উল্টো।

সূত্র : বিবিসি

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com