জাতিসংঘে ইউক্রেন নিয়ে ভোট দেওয়াতেই বুঝা যায় কারা গণতন্ত্রের বন্ধু, কারা নয়: কংগ্রেসম্যান মিকস
চলতি মাসের শুরুতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর প্রতিবাদে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ডাকা জরুরি অধিবেশনে বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের সমর্থনে রুশ হামলা বন্ধে প্রস্তাব পাস হয়৷ ওই প্রস্তাবের পক্ষে কারা ভোট দিয়েছে আর কারা দেয়নি তা বিবেচনায় নিলে বুঝা যায়, কোন দেশগুলো গণতন্ত্রের বন্ধু আর কোন দেশগুলো নয়। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যান এবং হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান গ্রেগোরি ডব্লিউ মিকস এমন মন্তব্য করেছেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে ‘বাংলাদেশি আমেরিকানস’ আয়োজিত ‘মিট এন্ড গ্রিট’ অনুষ্ঠানে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে কংগ্রেসম্যান মিকস বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এবং আমি (ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে) সতর্কতার সাথে লক্ষ্য করেছি, জাতিসংঘে কারা কিভাবে ভোট দিয়েছে। আমাদের মাথায় আছে যে, ১৪১ টি দেশ রাশিয়ার ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি ৫ টি দেশ রাশিয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে এবং ৩৫ টি দেশ ভোটদানে বিরত থেকেছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিলে বুঝা যায়, কারা গণতন্ত্রের বন্ধু আর কারা তা নয়।”
কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, বিশ্বজুড়েই ‘গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার’ হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির অগ্রাধিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিশ্বের যে কোন জায়গাতেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হোক না কেন আমাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) তা নিয়ে কথা বলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কারণ একটা কথা আছে, কোন এক জায়গায় অবিচার মানে তা সব জায়গাতেই ন্যায়বিচারের জন্য হুমকিস্বরূপ।”
ইউক্রেনে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে মনে করেন কংগ্রেসম্যান মিকস। এ বিষয়ে তার বক্তব্যঃ সেখানে নিরীহ শিশু এবং নারীদের হত্যা করা হচ্ছে।
সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের পক্ষে শক্তভাবে দাঁড়িয়েছে যেন আমরা এটা নিশ্চিত করতে পারি যে তাদের নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য যা কিছু প্রয়োজন সেটা যেনো তারা পায়। বাংলাদেশের দিকে যদি তাকাই তাহলে বলবো- যেসব গোষ্ঠী মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ আফ্রিকা সহ অন্য জায়গাতেও এমনটা করা হয়েছে। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, তা সে পৃথিবীর যে জায়গাতেই হোক না কেন।”
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কংগ্রেসম্যান মিকস নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে যাওয়ার পথে ধারাবাহিক উন্নতির কথা বলেন। তিনি জানান, বাংলাদেশের মানুষের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধন খুব শক্ত এবং অখন্ড। বাইডেন প্রশাসন যেসব গোষ্ঠী খারাপ কাজ করে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সামনে বাংলাদেশের নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্র চায় নির্বাচনে যেনো জনগণের মত প্রতিফলিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে গত বছরের ৬ই জানুয়ারির হামলার কথা স্মরণ করে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যান মিকস বলেন, “আমাদের এখানেও একই রকম কিছু উদ্ব্বেগের জায়গা রয়েছে। এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র স্বাভাবিক উপায়ে ক্ষমতার পালাবদল হতে দেখেনি। সুতরাং আমরা, যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ সহ সব জায়াগাতেই বাকস্বাধীনতা চাই, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।”
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে স্বৈরশাসক উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুতিন কর্তৃত্ববাদকে গণতন্ত্রের উপরে স্থান দিয়েছেন।