সময়ক্ষেপণ না করে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটাতে হবে: মির্জা ফখরুল

0

কালক্ষেপণের করার সময় নেই এই মুহূর্তে সরকারের পতন নিশ্চিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন শুধু বিশ্বাস করি তা নয়, আমরা আস্থাশীল। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তারেক রহমানের নেতৃত্বে খালেদা জিয়ার সক্রিয় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সরকারকে হটিয়ে দেশকে মুক্ত করতে সক্ষম হব’।

সোমবার (৭ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের দাবিগুলো খুব পরিষ্কার। প্রথমত সেটি হচ্ছে, যিনি গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। আবার এক এগারোর সরকারের হাত থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে নিয়েছেন সেই নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। দ্বিতীয়ত, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার পর এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তাদেরকে একটি নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার যে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করবে তাদের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের একটি পার্লামেন্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। কারণ বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তাদের আর কোন অধিকার নেই ক্ষমতায় থাকার, রাষ্ট্র পরিচালনা করার। বিএনপি মনে করে এই মুহূর্তে হাসিনা সরকারের পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে তাদের ক্ষমতা দেওয়া উচিত।

সরকারের উন্নয়নের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বাংলাদেশের যা কিছু হচ্ছে তার একটাই উদ্দেশ্য সেটা হচ্ছে বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দেওয়া। বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। বাংলাদেশকে উপরে উঠতে না দেওয়া। এরা উন্নয়নের কথা বলে অথচ এত মিথ্যা বলেন। যে মিথ্যাগুলো কতটা সত্যি পরিণত করতে চায়। কয়েকদিন আগে তারা বলেছে দারিদ্র নাকি এখন খুঁজে পাওয়া যায় না অথচ স্ট্যাটিস্টিক এটা আমার কথা নয় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বলছে দারিদ্র বৃদ্ধি পেয়েছে, মানুষ আরো গরীব হয়েছে। এখানে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে শুধুমাত্র শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগের। তারা এত বেশি অর্থ উপার্জন করেছে বিদেশে পাচার করেছে। যে কারণে এখন তৃণমূল থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত কেউ তারা দারিদ্র দেখতে পায় না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বপ্নগুলোকে চুরমার করে দিয়েছে। একটি মাত্র কারণ লক্ষ্য একটাই তারা চিরদিন ক্ষমতায় থাকবে। সেজন্য গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করে শুধুমাত্র তাদের মতো করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চায়।’

তিনি বলেন, সার্চ কমিটি গঠন নির্বাচন কমিশন গঠন সবকিছুই একটি প্রতারণা। যা আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে তারা আদালতের মাধ্যমে এই কাজগুলো করে যাচ্ছে। ২০১২ সালে তারা যখন দেখতে পেল নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না। তখন তারা আদালতের মাধ্যমে নিজেদের সুবিধার্থে সেটা বদলে দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে। অথচ এক সময় তারাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছে। নির্দলীয় সরকার বাতিল করা  বিচারপতিকে এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে জনগণের সামনে এর কোন ব্যত্যয় হবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে মানুষ ভোট দিতে যায় না। তারা (সরকার) বার বার বলে যাচ্ছে সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন হবে অথচ এই সংবিধান তারাই তৈরি করেছে বার বার কাটাছেঁড়া করে। আবার বলা হচ্ছে আমরা নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি আইনের মাধ্যমে অথচ এই আইন কারা গঠন করেছে? কোথায় গঠন করেছে ওই পার্লামেন্ট ? যা অনির্বাচিত ও অবৈধ। সুতরাং আইনের প্রশ্ন এখানে আসছে না, তখন জনগণের প্রশ্ন জনগণের চাহিদা প্রয়োজনের প্রশ্ন। যা ১৯৯১ সালে করা হয়েছিল।’

তারেক রহমানকে তারা ভয় পায় মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভয় পায় এটা বাস্তব কারণ তারেক রহমানের যে অসাধারণ একটা সাংগঠনিক দক্ষতা রয়েছে। সেই দক্ষতার কারণে তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যেই সারা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শক্তি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে চলছেন।

বিএনপি’র সভাপতি সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিম এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com