ব্রিটেনে ইসলামোফোবিয়া বিতর্ক, নাজেহাল ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ

0

ব্রিটেনের সাবেক পরিবহনমন্ত্রী নুসরাত গনি জানিয়েছিলেন, মুসলমান হওয়ার কারণেই ২০২০ সালে তার মন্ত্রিত্ব বাতিল করা হয়।

রোববার ব্রিটেনের দ্য সানডে টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত সাক্ষাতকারে তার এই বিস্ফোরক মন্তব্যে নতুন করে উঠে এসেছে দেশটিতে বর্তমানে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যে বিদ্যমান ইসলামোফোবিয়া। এই বিতর্কে বর্তমানে নাজেহাল ব্রিটেনের রক্ষণশীল রাজনৈতিক ধারার এই দলটি।

নুসরাতের অভিযোগ নিয়ে বর্তমানে ব্রিটেনে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। করজারভেটিভ পার্টির একাধিক মন্ত্রীও এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন এবং ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভেদ জানিয়েছেন, নুসরাত তার বন্ধু। তিনি যে অভিযোগ করছেন, তা রীতিমতো গুরুতর। তার উচিত আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করা। তাহলে তার কথাও নিশ্চয়ই শোনা হবে। আর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা দরকার।

শিক্ষামন্ত্রী নাদিম জাহায়ি বলেছেন, নুসরাত যা বলছেন, তা তদন্ত হওয়া দরকার। কনজারভেটিভ পার্টিতে ইসলামোফোবিয়া বা বর্ণবাদের কোনো স্থান নেই।

করোনাভাইরাস সংক্রমণে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই ডাউনিং স্ট্রিটে পার্টি করার জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যখন তীব্র সমালোচনার মুখে রয়েছেন, তখনই নতুন করে এই বিতর্ক সামনে এলো।

নুসরাত বলেছেন, ২০২০ সালে তাকে পরিবহনমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করার পর সরকারি হুইপ তাকে জানান, মুসলমান হওয়ার কারণেই তাকে বাদ দেয়া হয়েছে।

তাকে বলা হয়, তিনি মুসলিম নারী মন্ত্রী বলে তার সহকর্মীরা অস্বস্তি বোধ করছেন।

নুসরাত বলেন, ‘এটিও বলা হয়, আমি দলের প্রতি পুরোপুরি বিশ্বস্ত নই। দলের বিরুদ্ধে ইসলামোফোবিয়ার অভিযোগ আসার পর আমি দলকে রক্ষায় সেভাবে উদ্যোগী হইনি।’

বর্তমানে ব্রিটেনের উইলডেন জেলার পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘আমাকে সরিয়ে দেয়ার পর মনে হয়েছিল, আমার পেটে কেউ ঘুষি মেরেছে। নিজেকে ক্ষমতাহীন ও অপমানিত মনে হয়েছিল।’

তিনি দাবি করেন, তাকে হুমকি দেয়া হয় যে যদি তিনি এই বিষয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ করেন তবে তাকে ‘দল থেকে বহিস্কার করা হবে এবং তার ক্যারিয়ার ও সম্মান ধ্বংস হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, জনসন এর আগে নুসোতের সঙ্গে দেখা করেছেন, তার অভিযোগ নিয়ে কথা বলেছেন এবং তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানাতে বলেছেন।

চিফ হুইপ মার্ক স্পেনসার জানিয়েছেন, নুসরাত তার বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছেন। কিন্তু তার অভিযোগ মিথ্যা। তিনি এরকম কোনো কথা নুসরাতকে বলেননি।

বিচারমন্ত্রী ডমিনিক রাব সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে বলেছেন, তার দল ইসলামোফোবিয়া নিয়ে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলে।

তিনি বলেছেন, নুসরাত অভিযোগ দায়ের করলে তদন্ত হবে।

নুসরাতের অভিযোগের আগে ক্ষমতাসীন দলের এমপি উইলিয়াম রাগ অভিযোগ করেছিলেন, দলের হুইপরা সরকারকে সমর্থন করার জন্য এমপিদের ভয় দেখাচ্ছেন, ব্ল্যাকমেল করছেন। পার্টিগেট কেলেঙ্কারিতে বরিস জনসনকে যাতে ক্ষমতা হারাতে না হয়, সেজন্যই তারা এই কাজ করছেন।

পার্টিগেট নিয়ে জনসনের উপর প্রবল চাপ তৈরি হয়েছে। দলের কিছু পার্লামেন্ট সদস্য তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু হয়েছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে এই বিষয়ে প্রতিবেদন এসে যাবে। অনেক পার্লামেন্ট সদস্য সেই প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছেন।

সূত্র : ডয়চে ভেলে

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com