নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গাদের নাম

0

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর চরম নির্যাতনের মুখে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অনেকে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। হত্যা, মাদক, অস্ত্র ব্যবসা, মানব পাচার, ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে ক্যাম্পে এমন অপরাধ প্রবণতা দেশের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মনে করছেন অপরাধ বিজ্ঞানীরা।

অপরাধ বিজ্ঞানী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধ প্রবণতার রাশ টানতে না পারলে দেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।’ এ ছাড়া রোহিঙ্গা পুরুষের পাশাপাশি নারী-শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে মাদক পাচারের ক্যারিয়ার হিসেবে। তাদের গ্রেফতার করলেও হোতাদের নাম বলতে পারছেন না তারা। ফলে মূল চক্র থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মুজিবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘মাদক ব্যবসায় পুরুষদের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদেরও ইয়াবার ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মূলত কম টাকায় রোহিঙ্গারা ক্যারিয়ার হতে রাজি হয় এবং তারা গ্রেফতার হলেও চালানের হোতাদের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারে না। তাই মাদক ক্যারিয়ার হিসেবে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে।’

জানা যায়, কক্সবাজারের ৩৪টি রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অপরাধী চক্রের পদচারণা রয়েছে। ব্লকে ব্লকে গড়ে উঠেছে এক বা একাধিক সন্ত্রাসী গ্রুপ। ছোট বড় শতাধিক গ্রুপের একেকটিতে সদস্য রয়েছে ৫০ থেকে ১০০ জন। এ গ্রুপগুলো ব্লকভিত্তিক অপরাধ কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করে। ক্যাম্পে ক্যাম্পে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) এবং পাসপোর্ট তৈরি চক্র। লাখ টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গারা পাচ্ছে এনআইডি ও পাসপোর্ট। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে কয়েকটি নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রমও চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মিয়ানমারভিত্তিক সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিজস্ব মুদ্রা প্রচলনের চেষ্টা করছে। অভিযোগ আছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বেশির ভাগ ব্লকে চলছে আরসার কার্যক্রম। রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও), ইসলামী মাহাজ এবং জমিউয়তুল মুজাহিদীনের সদস্যদেরও কিছু ক্যাম্পে কার্যক্রম রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। টেকনাফের শরণার্থী ক্যাম্পের এক অধিবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অপরাধী চক্রগুলোকে দৈনিক এবং মাসিক হারে চাঁদা দিতে হয়। যাদের আধিপত্য বেশি তাদের চাঁদার হারও বেশি। তাই ক্যাম্পে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রায় সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে তারা। সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর পাশাপাশি নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোও চাঁদা আদায় করে।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com