রেমিট্যান্সে নেতিবাচক ধারা: প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে উৎসাহিত করতে হবে

0

রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ে নেতিবাচক ধারা কাটিয়ে উঠতে প্রণোদনা বাড়ানোর ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে অর্থ বিভাগ। করোনা মহামারির কারণে যখন বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছিল, তখনো দেশে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ছিল; কিন্তু চলতি বছরের মাঝামাঝি থেকে এ ক্ষেত্রে নেতিবাচক ধারা লক্ষ করা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, জুলাই থেকে নভেম্বর এই পাঁচ মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এসেছে ৮৬১ কোটি মার্কিন ডলার, গত বছর একই সময়ে যা ছিল ১ হাজার ৯০ কোটি ডলার। অর্থাৎ এ পাঁচ মাসে রেমিট্যান্স আসার অঙ্ক কমেছে ২২৯ কোটি ডলার। এর মধ্যে গত নভেম্বরে রেমিট্যান্স ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়, যা গত ১৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে প্রথমেই দরকার রেমিট্যান্সের প্রবাহ কম হওয়ার কারণগুলো চিহ্নিত করা। সে চেষ্টাও চলছে এবং প্রাথমিকভাবে এর তিনটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এগুলো হলো-করোনায় বিদেশফেরত কর্মীর চেয়ে বিদেশে যাওয়ার সংখ্যা কমে যাওয়া; ইন্টার ব্যাংক ও কার্ব মার্কেটের মধ্যে ডলারের মূল্য ব্যবধান বেশি হওয়া এবং করোনার ভয়াবহতা কমে যাওয়ার পর প্রবাসীদের মধ্যে বৈধ চ্যানেলের বদলে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া।

এর মধ্যে তৃতীয় কারণটিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি আমরা। এ ক্ষেত্রে প্রবাসীদের প্রণোদনা বাড়িয়ে বা রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ কমিয়ে কিছুটা সুফল মিলতে পারে। তবে হুন্ডি ব্যবসা কিভাবে বন্ধ করা যায় সে কথাও ভাবতে হবে। বস্তুত রেমিট্যান্সকে ব্যাংকিং চ্যানেলে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি বলে মনে করি আমরা। অভিযোগ আছে, প্রবাসীরা অনেক এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা পান না। ফলে তারা বাধ্য হয়ে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠান।

এ পরিস্থিতিতে প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাংকিং সুবিধা বাড়াতে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় এক্সচেঞ্জ হাউস বা ব্যাংকের শাখা খোলা প্রয়োজন। ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসা বাড়লে মোট রেমিট্যান্সের অঙ্কও যে বাড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাছাড়া ইন্টার ব্যাংক ও কার্ব মার্কেটে ডলারের দামের ব্যবধান কমিয়ে আনার পদক্ষেপও নিতে হবে। আর মধ্যমেয়াদি পদক্ষেপ হিসাবে বিদেশে শ্রমবাজার সম্প্রসারণের চেষ্টা চালাতে হবে। করোনার কারণে অনেক প্রবাসী শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন।

স্বভাবতই এখন এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে রেমিট্যান্সে। নতুন শ্রমবাজারের সন্ধানলাভ তাই জরুরি হয়ে পড়েছে। দেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এর প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন, তা করতে হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com