অভিবাসীরা এখনো লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন: অ্যান্তোনিও গুতেরেস
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এবারের এ আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে আমরা কোভিড-১৯ মহামারিসহ নানা সংকটে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা অভিবাসীদের অবদানের কথা স্মরণ করছি। ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, অভিবাসীরা এখনো ব্যাপক লাঞ্ছনা, অসমতা, বিদেশাতঙ্ক ও বর্ণবাদের শিকার হচ্ছেন। অভিবাসী নারী ও শিশু-কিশোরীরা লৈঙ্গিক পরিচয়ের কারণে সহিংসতার ব্যাপক ঝুঁকিতে আছে এবং সহায়তা চাওয়ার সুযোগ তাদের জন্য আজও অনেক কম। সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক অভিবাসী আয়-রোজগারহীন বা আশ্রয়হীন অবস্থায় আটকা পড়েছে। দেশে ফেরার সুযোগ বন্ধ হওয়ায় পরিবার বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তারা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়েছে। যদিও মহামারির পুরোটা সময়জুড়েই অভিবাসীরা সর্বত্র সমাজকে সমৃদ্ধ করেছে এবং বিজ্ঞানী, স্বাস্থ্যসেবাদাতা ও জরুরি পরিষেবা কর্মী হিসেবে প্রায় ক্ষেত্রেই অভিবাসীরা রয়েছেন সম্মুখ সমরে।
তিনি বলেন, ইন্টারন্যাশনাল মাইগ্রেশন রিভিউ ফোরাম আগামী বছর গ্লোবাল কম্প্যাক্ট ফর সেফ, অর্ডারলি অ্যান্ড রেগুলার মাইগ্রেশন বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে। অভিবাসীদের পূর্ণাঙ্গভাবে অন্তর্ভুক্তির প্রচেষ্টা এগিয়ে নিতে এটি একটি সুযোগ যেহেতু আমরা পুনরুদ্ধারমূলক, ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই সমাজ গড়তে চাই। গ্লোবাল কম্প্যাক্ট ফর সেফ, অর্ডারলি অ্যান্ড রেগুলার মাইগ্রেশন জোরদারে জাতিসংঘ অভিবাসন নেটওয়ার্কের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই এবং সদস্য রাষ্ট্র ও অন্যদের এ প্রচেষ্টায় সংশ্লিষ্ট হতে উৎসাহিত করছি। অভিবাসীদের সঙ্গে সংহতি এখনকার মতো আর কখনোই এতটা জরুরি ছিল না।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, অভিবাসনের ব্যাপারে আমাদের আরও কার্যকর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সহানুভূতিশীল পদক্ষেপ প্রয়োজন। অর্থাৎ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা হতে হবে আরও মানবিক, সবার মানবাধিকার ও মানবিক প্রয়োজনীয়তার প্রতি পুরোপুরি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে এবং জাতীয় কোভিড-১৯ টিকা কার্যক্রমে অভিবাসীদের অন্তর্ভুক্তিকরণ নিশ্চিত করতে হবে। অভিবাসী ও তাদের গ্রহণকারী দেশ উভয়ের ক্ষেত্রে নিয়মিত প্রবেশের উপায়গুলোর মূল্য অনুধাবন করতে হবে। চরম অসমতাসহ অভিবাসনের কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং মানবপাচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে হবে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে আসুন আমরা নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসন নিশ্চিতের ব্যাপারে আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করি।