ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কড়া সমালোচনা জাতিসংঘের
দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ঠেকাতে সুনির্দিষ্ট দেশ ও অঞ্চলকে নিশানা করে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির সমালোচনা করে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, করোনাভাইরাস সত্যিই সীমান্তহীন।
গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলে গুতেরেস ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়কে অন্যায় ও অকার্যকর বলে অভিহিত করেন। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গুতেরেস বলেন, করোনা এমন একটি ভাইরাস, যা সত্যই সীমান্তহীন। সে ক্ষেত্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, যা কোনো দেশ বা অঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে, তা কেবল গুরুতর অন্যায় ও শাস্তিমূলকই নয়, অকার্যকরও।
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির পরিবর্তে ভ্রমণকারীদের জন্য পরীক্ষা বাড়ানোর ওপর জোর দেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
গত সপ্তাহে আফ্রিকা অঞ্চলে করোনার নতুন ধরন অমিক্রন শনাক্ত হয়। ইতিমধ্যে বিশ্বের অন্তত ২৫টি দেশে অমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে।
নতুন ধরনটি ছড়ানো শুরুর পর থেকে আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে বিভিন্ন দেশ। কমপক্ষে ৭০টি দেশ ও অঞ্চল আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনার নতুন ধরনটিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে অভিহিত করেছে। বিজ্ঞানীরাও এ ধরন নিয়ে উদ্বিগ্ন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, যে দেশগুলো করোনার নতুন ধরনের উত্থানের কথা জানিয়েছে, বিশ্বের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞান-স্বাস্থ্যগত তথ্য শনাক্তের পাশাপাশি তা ভাগাভাগি করেছে, তার জন্য তাদের সম্মিলিতভাবে শাস্তি দেওয়া উচিত নয়।
ভ্রমণকারীদের জন্য বর্ধিত পরীক্ষার ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বের সরকারগুলোর প্রতি আবেদন পুনর্ব্যক্ত করেন গুতেরেস। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্য উপযুক্ত ও সত্যিকারের কার্যকর পদক্ষেপগুলো একসঙ্গে নেওয়া উচিত।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ভ্রমণ ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রেখে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করার এটিই একমাত্র উপায়।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন অমিক্রন কতটা দ্রুত ছড়ায় বা এটি প্রতিরোধে বিদ্যমান টিকাগুলো কতটা কার্যকর, সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না কেউ।
এ পরিস্থিতিতে ডব্লিউএইচওর সদস্যদেশগুলো সম্ভাব্য পরবর্তী বৈশ্বিক মহামারি মোকাবিলায় নতুন করে আন্তর্জাতিক বিধিমালা তৈরিতে একমত হয়েছে।