ভারতে সর্বদলীয় বৈঠকে মোদি নেই, বিরোধীদের নিন্দা, ওয়াকআউট
সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের আগে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল ভারত সরকার। গতকাল রোববারের এই বৈঠকে দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৈঠক ডেকে অনুপস্থিত থাকায় মোদির সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। কথা বলতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলে বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করেছেন আম আদমি পার্টির (এএপি) নেতা সঞ্জয় সিং।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শীতকালীন অধিবেশন শুরুর এক দিন আগে গতকাল অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সংসদবিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।
বৈঠকে মোদির সমালোচনা করে জাতীয় কংগ্রেসের নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘আশা করেছিলাম, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে থাকবেন। আমাদের সঙ্গে নিজের অভিমত বিনিময় করবেন। সম্প্রতি বাতিল হওয়া তিনটি কৃষি আইন নতুন রূপে সামনে আনা হবে কি না—এই বিষয়ে তাঁর কাছে আমাদের জানার ছিল। কিন্তু বৈঠক ডেকে তিনি নিজেই এলেন না।’
ওয়াকআউট করে এএপি নেতা সঞ্জয় সিং বলেন, ‘ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাজের এলাকা বাড়ানো ও কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী কৃষিপণ্যের ন্যূনতম সহায়তা মূল্যসহ (এমএসপি) বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের কথা বলতে দেওয়া হয়নি।’
বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডেরেক ও’ব্রায়েন পেগাসাস কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ তুললেন। তাঁরা এই প্রসঙ্গে সংসদে আলোচনার দাবি জানান। এ ছাড়া দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বেকারত্ব বৃদ্ধি, কৃষকদের এমএসপির দাবি না মানা ও সীমান্তে বিএসএফের কাজের এলাকা বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে মোদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন বিরোধীরা। বৈঠকে বেশির ভাগ দলের নেতারা এসব বিষয় নিয়ে সংসদে খোলামেলা আলোচনার দাবি তুলে ধরেন।
সর্বদলীয় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গে, অধীর চৌধুরী, আনন্দ শর্মা, ডিএমকের টিআর বাল্লু, তিরুচি শিবা, এনসিপির শারদ পাওয়ার, শিবসেনার বিনায়ক রাউত, সমাজবাদী দলের রামগোপাল যাদব, বিএসপির সতীশ মিশ্র, ন্যাশনাল কনফারেন্সের ফারুক আবদুল্লাহ প্রমুখ।
সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরুর প্রথম দিন আজ সোমবার বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিলের বিল উত্থাপন করবে বিজেপি সরকার। মূলত এই কারণে অধিবেশন শুরুর আগে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সংসদের অধিবেশনের প্রথম দিন সব সাংসদকে উপস্থিত থাকতে বলেছে বিজেপি ও কংগ্রেস।
ভারতজুড়ে দেড় বছরের আন্দোলনের মুখে তিনটি কৃষি আইন নিয়ে পিছটান দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি এসব আইন বাতিলের ঘোষণা দিলেও ভারতীয় কৃষকেরা এখনো আন্দোলন প্রত্যাহার করেননি। আন্দোলনকারী কৃষকদের সংগঠন সংযুক্ত কিষান মোর্চা ‘সংসদ চলো’ কর্মসূচি পালন করছে। এমএসপি চালু করাসহ কৃষকদের অন্যান্য দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কৃষকেরা। আগামী ৪ ডিসেম্বর তাঁরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।