এবার কায়সার সাইদকে পার্লামেন্টের এক সদস্যের স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য দায়ী করলেন গানুশি
তিউনিসিয়ার স্থগিত পার্লামেন্টের স্পিকার রশিদ গানুশি প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদকে পার্লামেন্টের এক সদস্যের স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন।
শুক্রবার আরবি ভাষার সংবাদমাধ্যম আল-খালিজ আল-জাদিদে এই খবর প্রকাশিত হয়।
এর আগে জুলাইয়ে তিউনিনিয়ায় নির্বাহী ক্ষমতা হাতে নেয়ার পর পার্লামেন্ট স্থগিত করার পাশাপাশি সদস্যদের বেতন ও স্বাস্থ্য বীমা স্থগিত করেন কায়েস সাইদ।
স্থগিত পার্লামেন্টের সদস্য ইমাদ আল-খুমাইরিরর স্ত্রী ক্যান্সারে ভুগে সম্প্রতি মৃত্যুবরণ করেন।
আল-খুমাইরির স্ত্রীর জানাজায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রশিদ গানুশি বলেন, ‘পার্লামেন্ট সদস্য ও তাদের পরিবারের স্বাস্থ্য বীমা স্থগিতের ফলে যে ঘটনা ঘটলো, তার জন্য সাইদ দায়ী।’
অপরদিকে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো পার্লামেন্ট সদস্যদের স্বাস্থ্য বীমা স্থগিতের মাধ্যমে তাদের সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ফলাফল হিসেবে ইমাদ আল-খুমাইরির স্ত্রীর এই মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করে।
এর আগে পার্লামেন্ট স্থগিতের পর চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার জেরে তিউনিসের এক হাসপাতালের সামনে বসে বিক্ষোভ করেছিলেন পার্লামেন্ট সদস্য মোস্তফা বিন আহমদ।
অপর এক পার্লামেন্ট সদস্য আবদুল লতিফ আল-আলায়ি পরিবারের খরচ চালাতে তার লাইব্রেরির বই বিক্রি করার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন। পার্লামেন্ট সদস্য থাকায় তিনি তার পুরনো শিক্ষকতার পেশায় ফিরতে পারছিলেন না। অপরদিকে পার্লামেন্ট সদস্যের বেতন স্থগিত হওয়ায় তার আয়ের কোনো ব্যবস্থা ছিলো না।
গত ২৫ জুলাই করোনা পরিস্থিতিতে তিউনিসিয়ায় সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় জেরে আকস্মিক সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর রাতে প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ দুই বছর আগে নির্বাচিত পার্লামেন্ট ৩০ দিনের জন্য স্থগিত, প্রধানমন্ত্রী হিশাম মাশিশিকে বরখাস্ত ও দেশের নির্বাহী ক্ষমতা নিজের হাতে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে আদেশ জারি করেন।
পরে ২৩ আগস্ট ‘রাষ্ট্রের জন্য হুমকি’ বিবেচনায় পরবর্তী আদেশ দেয়া না পর্যন্ত পার্লামেন্ট স্থগিত রাখার আদেশ দেন প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ।
অপরদিকে ২২ সেপ্টেম্বর জারি করা এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধানের কিছু অংশ স্থগিত করার মাধ্যমে নিজের ক্ষমতা জোরদার করেন সাইদ।
তিউনিসিয়ার রাজনৈতিক দলগুলো এই আদেশকে ‘সাংবিধানিক অভ্যুত্থান’ বলে অভিযোগ করে আসছে।
২০১১ সালে আরব বসন্তের সূচনাকারী দেশ তিউনিসিয়ায় স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জেরে ২৪ বছর দেশটি শাসন করা একনায়ক জাইন আল আবেদীন বিন আলী ক্ষমতাচ্যুৎ হন। এর পর থেকেই গত দশ বছর ভঙ্গুর অবস্থা সত্ত্বেও আরব বিশ্বের একমাত্র গণতান্ত্রিক শাসন উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে চালু ছিলো।
সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর