লিবিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হলেন প্রধানমন্ত্রী আল-দাবিবাহ
লিবিয়ায় আগামী ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে নিবন্ধন করেছেন দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ আল-দাবিবাহ।
রোববার রাজধানী ত্রিপোলির হাই ন্যাশনাল ইলেকটরাল কমিশনের দফতরে গিয়ে নিজের প্রার্থিতার আবেদন জমা দেন তিনি।
এর আগে আল-দাবিবাহ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি না, এই বিষয়ে সংশয় থাকলেও বৃহস্পতিবার নির্বাচনের পূর্বশর্ত অনুযায়ী সম্পদের তালিকা দাখিলের মাধ্যমে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বন্দর নগরী মিসরাতার বাসিন্দা ৬২ বছর বয়সী আবদুল হামিদ আল-দাবিবাহ গত ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটিতে জাতিসঙ্ঘের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ঐক্যমতের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সুইজারল্যান্ডে জাতিসঙ্ঘের উদ্যোগে লিবিয়ার বিবাদমান পক্ষগুলোর দীর্ঘ সংলাপের পর চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি এই অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে সবপক্ষ সম্মত হয়।
এদিকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য গত ১৪ নভেম্বর দেশটির সাবেক একনায়ক মুয়াম্মার আল-গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল-ইসলাম আল-গাদ্দাফি ও ১৬ নভেম্বর পূর্বাঞ্চলীয় যুদ্ধবাজ নেতা জেনারেল খলিফা হাফতার প্রার্থিতার আবেদন করেন।
আগামী ২৪ ডিসেম্বর লিবিয়ায় প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের কথা রয়েছে। গত বছর ২৪ ডিসেম্বর জাতিসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিসে প্রতিদ্বন্দ্বী বিভিন্ন গোষ্ঠীর মাধ্যমে আলোচনায় স্থির হওয়া শর্ত অনুসারে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এর আগে গত ৮ নভেম্বর লিবিয়ায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থীদের নিবন্ধন শুরু হয়।
জ্বালানি তেলসমৃদ্ধ লিবিয়ায় ২০১১ সালে আরব বসন্তের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষ চার দশক দেশটি শাসন করা একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। গাদ্দাফি সামরিক পন্থায় বিক্ষোভকারীদের দমন করতে চাইলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। গৃহযুদ্ধের এক পর্যায়ে বিদ্রোহীদের হাতে গাদ্দাফি নিহত হলেও দেশটিতে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে। বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ থেকে নতুন করে দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০১৪ থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে দেশটি ত্রিপোলিকেন্দ্রীক পশ্চিম ও তবরুককেন্দ্রীক পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
গত বছরের অক্টোবরে জাতিসঙ্ঘ উভয়পক্ষকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত করে এবং দেশটির সংকট সমাধানে বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক সংলাপের সূচনা করে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ সংলাপের পর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিবাদমান পক্ষগুলো দেশটিতে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে সম্মত হয়। বিবাদমান পক্ষগুলো অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে পূর্বাঞ্চলের প্রতিনিধি দেশটির সাবেক কূটনীতিক মোহাম্মদ ইউনুস মানফি এবং প্রধানমন্ত্রী পদে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রতিনিধি আবদুল হামিদ আল-দাবিবাহকে নির্বাচিত করে।
পরে লিবিয়ার পার্লামেন্টে আলোচনার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকার ২৪ ডিসেম্বরের নির্বাচন পরিচালনা করবে।
সূত্র : টিআরটি ওয়ার্ল্ড