অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘ করার হীনচেষ্টায় আ.লীগ সরকার: গয়েশ্বর

0

সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার কয়েকটি পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা জানাতে এসে আবারও সরকারকে দায়ী করলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সঠিকভাবে অনুসন্ধান করলে দেখা যায় যে, এইসব হামলার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী যুব লীগ, ছাত্রলীগের ছেলে-পেলেরা।”

কিন্তু তাদের সামনে না এনে ‘নিরহ শান্তিপ্রিয়’ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে অভিযোগ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, অনেক মামলা করে সরকার ‘দেখাতে চাইছে’ যে, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ‘বিরাট’ উদ্যোগ নিয়েছে।

“উদ্যোগটা হল, এই ইস্যুতে মিথ্যা মামলার মধ্য দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদেরকে তুলে নেওয়া বা গ্রেপ্তার-হয়রানি করার একটা নীলনকশা এবং হামলাকারীদের আড়াল করা। এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়, সরকার সুপরিকল্পিতভাবে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে হেনস্তা করার জন্য ইস্যুগুলো তৈরি করেছে।”

সাংবাদিকদের সামনে গয়েশ্বর বলেন, “আমি আশা করব, মিডিয়া ও গণমাধ্যমের ভাইয়েরা এই অবস্থার বিরুদ্ধে, এই অপকর্মের বিরুদ্ধে আপনারা সোচ্চার হবেন।”

দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির পাড়ে একটি মন্দিরে ‘কোরআন অবমাননার’ কথিত অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়।

এরপর চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী ও রংপুরসহ কয়েকটি জেলায় হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণহানিও হয়।

সেসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে বিএনপি। ওই কমিটি গত ২৩ অক্টোবর কুমিল্লার চাঁন্দমনি রক্ষা কালী মন্দির, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের রামকৃষ্ণ সেবা আশ্রম এবং রাজা লক্ষ্মী নারায়ণ জিউর আখড়া পরিদর্শন করেন এবং পুরোহিত ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলেন।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “কুমিল্লার চাঁন্দমনি রক্ষা কালী মন্দিরে গত ১৩ অক্টোবর দুপুর আড়াইটার পর তিন দফা আক্রমণ হয়। নানুয়া দিঘীর পাড়ের ঘটনা হল সকালে। কালী মন্দিরে আক্রমণ করার পরে স্থানীয় লোকজন যেভাবে পারে আত্মরক্ষা করেছে।

“ঘটনার পরে পুলিশ এসেছে, তারা বলেছে, ‘আপনারা ভয় পাবেন না, আমরা আছি’। উনারা চলে যাওয়ার পরে আবার আক্রমণ হয়েছে। ঠিক একইভাবে আক্রমণকারীরা চলে যাওয়ার পরে পুলিশ এসেছে। এসে বললো যে, ‘আমরা আছি, আপনারা ভয় পাইয়েন না’। আবার বিকালে আক্রমণ হয়েছে।

ওই মন্দিরের পুরোহিত এবং আশপাশের দোকানদারদের কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শোনার কথা তুলে ধরে গয়েশ্বর বলেন, “আতঙ্কটা এখনো তাদের মন থেকে মুছে যায়নি।… চারদিকে মানুষের চোখে মুখে একটা আতঙ্কের ছাপ দেখেছি। কোনো কথাই তারা বলতে চায় না। কারণ তাদেরও জীবন আছে, ভয় থাকতেই পারে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, “আমি মনে করি, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমাদেরকে এখানে মৌলবাদী বা জঙ্গিবাদী বা সাম্প্রদায়িকভাবে আখ্যায়িত করা হয়- এটা ষড়যন্ত্রমূলক। যার কারণে আজকে আক্রমণের শিকার হয়েছেন, তারা দুর্বল।

“আজকে সমাজের সকল নেতৃবৃন্দকে সামনে আসতে হবে। জাতি ধর্ম নির্বিশেষ বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক যে সংস্কৃতি, সেটাকে লালন করতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে একটি প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে এ ধরনের স্পর্শকাতর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।”

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com