যে সংখ্যা পিছু ছাড়ল না প্রিয়াঙ্কার
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধান সভার ভবানীপুর উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হলেন মমতা ব্যানার্জি। মে মাসে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে তার দল রাজ্যে বিপুলভাবে ক্ষমতায় এলেও মমতা নিজে বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হননি। যদিও ৫ মে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তৃণমূলনেত্রীই। তবে শপথ গ্রহণের পর মমতার মেয়াদ শেষ হচ্ছিল ৪ নভেম্বর। তার আগেই উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। এরপরই নিজের পুরনো কেন্দ্র ভবানীপুরেই প্রার্থী হন মমতা। তার বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল এবং সিপিএম প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাস। ৩০ সেপ্টেম্বর ভোট হয়। আর এদিন ভবানীপুরের ফল প্রকাশের পর দেখা যায় বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে ৫৮ হাজার ৮৩৫ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন মমতা। আর এই ফলপ্রকাশের পরই প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের ৫৮ হাজারি ‘গাঁট’ নিয়ে আলোচনা চলছে রাজনৈতিক মহলে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে এন্টালি থেকে প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু ওই কেন্দ্রেও বিজেপি প্রার্থী হিসেবে প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল তৃণমূল প্রার্থী স্বর্ণকমল সাহার কাছে ৫৮,২৫৭ ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। এরপর ভোট-পরবর্তী সহিংসতার মামলায় বিজেপি-র হয়ে লড়ে আলোচনায় আসেন প্রিয়াঙ্কা। ভবানীপুরের উপনির্বাচনে তাই ‘লড়াকু’ প্রিয়াঙ্কাকে মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে লড়তে পাঠায় গেরুয়া শিবির। কিন্তু এদিন ফলপ্রকাশের পর দেখা গেল, তৃণমূল নেত্রীর কাছেও ৫৮, ৮৩৫ ভোটে পরাজিত হলেন প্রিয়াঙ্কা। অর্থাৎ, ৫৮ হাজারের গেরো কিছুতেই পিছু ছাড়ল না প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের।
যদিও এদিন ফলপ্রকাশের পর প্রিয়াঙ্কা দাবি করেছে, ‘দল হারলেও ভবানীপুরের নির্বাচনে আমি’ই ম্যান অফ দ্য ম্যাচ। কারণ মমতা ব্যানার্জির বিপুল শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েও আমি ২৫ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছি। আমি আমার কাজ তাই চালিয়ে যাব।’ তবে, তার পরাজয়ের কারণ যে বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতা, তা স্বীকার করে নিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী।
তার কথায়, ‘আমি স্বীকার করে নিচ্ছি, ভবানীপুরে আমাদের দলের সংগঠনের দুর্বলতা ছিল। ভোটে জেতার জন্য যে সাংগঠনিক শক্তির প্রয়োজন হয়, তা আমাদের ছিল না। একজন নেতা কখনও নির্বাচন জেতেন না, একজন নেতা কখনও নির্বাচন হারেন না। জেতে বা হারে সংগঠন।’
তবে, জয়ের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানিয়েও প্রিয়াঙ্কা এদিনও তৃণমূলের বিরুদ্ধে রিগিংয়ের অভিযোগ তুলেছেন। তবে, সবকিছুর পরও আলোচনায় থেকেছে প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের ৫৮ হাজারি গাঁট।