আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ১৯৭১ সালের সঠিক ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে: হাফিজ

0

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ১৯৭১ সালের মহান বীরত্বের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে। তারা দেশবাসীকে বুঝাতে চায় যে, একটা ভাষণ দিয়েছে তাদের নেতা, এতেই দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। এই যে লাখো মানুষ জীবন দিল, একটি আধুনিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জীবনপণ লড়াই করে বিজয় ছিনিয়ে নিল এই কৃতিত্ব কাউকে দিতে চায় না তারা। স্বাধীনতার ঘোষণা তো একজন রাজনৈতিক নেতার মুখ থেকেই আমরা আশা করেছিলাম। তিনি বা তারা দিতে পারেননি। দিয়েছেন একজন অখ্যাত মেজর জিয়াউর রহমান। এই হীনমন্যতা থেকে তারা ইতিহাস বিকৃত করছে সেই ১৯৭২ সাল থেকেই।’

‘ইতিহাস কথা কয়’ শিরোনামে বুধবার (৮ আগস্ট ২০২১) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘সর্বশেষে তারা শুরু করেছে যে, জিয়াউর রহমান মুজিব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তারা ভেবেছে যে, ৫০ বছরের কাছাকাছি গত হয়েছে। সুতরাং, এখন এই ধরনের মিথ্যাকে সত্য করার সময় এসে গেছে। মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে গোয়েবেলসীয় কায়দায় জিয়াকে হত্যাকারী, ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে জনগণের সামনে প্রতিপাদ করার জন্যে তারা এই উদ্যোগ নিয়েছে।’

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সময়ে সেনাবাহিনীর ৪৬তম বিগ্রেডের কর্মরত হাফিজ উদ্দিন দাবি করেন, “ওই ঘটনার দিন ভোরে বিগ্রেড কমান্ডার কর্নেল সাফায়েত জামিলসহ আমি সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জিয়াউর রহমানের বাসায় গিয়ে দেখা করি। তাঁকে কর্নেল সাফায়েত জামিল বললেন, ‘স্যার, প্রেসিডেন্ট হেড বিন কিল্ড’। জেনারেল জিয়াউর রহমানের রিঅ্যাকশন দেখেন, সাচ এ সোলজার। তিনি বললেন, ‘প্রেসিডেন্ট নাই তো কী হয়েছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট আছে। আমরা সৈনিক, লেট আস আপহোল্ড দ্যা কনস্টিটিউশন, আমরা সংবিধানকে সম্মুন্নত রাখব। গো অ্যান্ড গেট ইউ ট্রুপস রেডি’।”

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘তিন বছর আগে সাফায়েত জামিল মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি একটি বই লিখেছেন সেখানে এই ঘটনাটির বিবরণ দেওয়া আছে। অবসরপ্রাপ্ত অফিসার হিসেবে কর্নেল সাফায়েত জামিল কোনো রাজনীতিতে জড়াননি কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রতি দুবর্লতা ছিল। তারপরও তিনি ১৫ আগস্ট সকালের সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যের এই ঘটনাটি লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন। আমি ক্ষুদ্র ব্যক্তি, আমার বইতেও এই বিবরণ আছে। আমরা চাক্ষুষ সাক্ষী, সেদিন তিনি (জিয়া) কী বলেছিলেন।’

মেজর হাফিজ বলেন, ‘জিয়াউর রহমান একজন সৈনিক ছিলেন, যিনি সংবিধান সমুন্নত রাখার চেষ্টা করেছিলেন। আমাদেরকে বলেছিলেন, গো অ্যান্ড গেট ট্রুপস রেডি। তাদের নেতাকে (শেখ মুজিবুর রহমান) মহান নেতা বলে সম্বোধন করেছিলেন। জীবনে কোনোদিন রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে কখনো আওয়ামী লীগের নেতা বা তাদের যারা শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কোনোদিন কোনো কটূক্তি করেননি। এই ধরনের একজন সাদা মনের মানুষকে আজকে তারা খুনি হিসেবে দেশবাসীর সামনে উপস্থাপন করতে চায়। কী দুর্ভাগ্য তাদের, কী দুর্ভাগ্য আমাদের!’

সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি বলব, এখনও সময় আছে শিক্ষা নেওয়ার। আফগানিস্তানে কী হয়েছে- এটা থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করেন। অনেককে কিন্তু হেলিকপ্টারের ডানা ধরে ঝুলতে হবে! আফগানিস্তান থেকে আমরা কি শিক্ষা নিতে পারছি যে, জনগণের জয় একদিন না একদিন হবেই। দেশের অধিকাংশ জনগণ যাকে সমর্থন করবে, যে দল বা যে আদর্শকে সমর্থন করবে সেটিকে কোনোদিন দাবিয়ে রাখা যায় না। যার জন্য পৃথিবী সবচেয়ে সর্বশক্তিমান পরাশক্তিকেও আফগানিস্তান থেকে যেতে হয়েছে।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com