ইসরাইলকে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা, তীব্র বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে আফ্রিকার দেশগুলো
ইসরাইল আফ্রিকান ইউনিয়নের পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পেলেও ওই মহাদেশের ১৩টি দেশ অর্থাৎ দক্ষিণ আফ্রিকা, তিউনিসিয়া, ইরিত্রিয়া, সেনেগাল, তানজানিয়া, নাইজার, কোমোরোস, গ্যাবন, নাইজেরিয়া, জিম্বাবুয়ে, লাইবেরিয়া এবং সিশেল অ্যান্ডনাইজার এই ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক হিসেবে ইসরাইলকে অন্তর্ভুক্তির তীব্র বিরোধিতা করেছে। এ দেশগুলো বলেছে, ইসরাইলের বিরুদ্ধে আলজেরিয়া যে পদক্ষেপই নেবে তার প্রতি তাদের সমর্থন থাকবে। এর আগে নামিবিয়া সরকারও ইসরাইলকে আফ্রিকান ইউনিয়নের পর্যবেক্ষকের মর্যাদা দেয়ার বিরোধিতা করে বলেছিল এ পদক্ষেপ আফ্রিকান ইউনিয়নের নীতিমালা ও লক্ষ্যের পরিপন্থী।
ইসরাইলের বিরুদ্ধে আফ্রিকার ১৪টি দেশের এ শক্ত অবস্থান থেকে বোঝা যায় ইসরাইল আফ্রিকার বিভিন্ন সংস্থার সাথে সংযুক্ত হওয়ার পাশাপাশি সুদান ও মরক্কোর মতো দেশগুলোর মতো আফ্রিকার অন্যান্য দেশের সঙ্গেও সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্যব্যাপক চেষ্টা চালালেও বহু দেশ ইসরাইলের এ আবেদনে সাড়া দেয়নি। বাস্তবতা হচ্ছে গত ২০ বছর ধরে ইহুদিবাদী ইসরাইল আফ্রিকান ইউনিয়নের পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পাওয়ার জন্য এবং ওই অঞ্চলের সব দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনের শেষের দিকে তিনি ইসরাইলের স্বার্থে নজিরবিহীন পদক্ষেপ নেন। ট্রাম্প ইসরাইলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সুদান ও মরক্কোর ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি এবং ব্যাপক প্রতিশ্রুতি ও প্রলোভন দেখিয়ে তেলআবিবের সঙ্গে ওই দুই দেশের সম্পর্ক স্থাপন করান। সুদান ও মরক্কোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর ইসরাইল এটাকেআফ্রিকান ইউনিয়নে প্রভাব বিস্তারের জন্য বিরাট সুযোগ হিসেবে দেখছে এবং নিজের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে শেষ পর্যন্ত ও ইইউনিয়নের পর্যবেক্ষকের মর্যাদা পায়। কিন্তু আলজেরিয়ার নেতৃত্বে আফ্রিকার বহু দেশ ইসরাইলকে এই পদ দেয়ার তীব্রবিরোধিতা কোরে এই ইউনিয়ন থেকে ইসরাইলকে বহিষ্কার করার আহবান জানিয়েছে।
আলজেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রামতানে লা মামরা বলেছেন অন্য দেশগুলোর সঙ্গে কোনো রকম পরামর্শ না করেই ইসরাইলকে এইইউনিয়নের পর্যবেক্ষকের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। তাই আমরা এ ব্যাপারে নীরব বসে থাকতে পারি না। এর আগেও ইসরাইল আফ্রিকান ইউনিয়নের পর্যবেক্ষকের মর্যাদা লাভ করেছিল কিন্তু ২০০২ সালে সেই মর্যাদা কেড়ে নেয়া হয়েছিল।
গত ২২ জুলাই ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে জানান তারা আফ্রিকান ইউনিয়নে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা লাভ করেছে।ইথিওপিয়া, বুরুন্ডি এবং চাদে নিযুক্ত ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত অ্যালেলি আদমাসু আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুসা ফাকিমাহামাতের কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করেছে।
যাইহোক, যে ১৪টি দেশ আফ্রিকান ইউনিয়নে ইসরাইলের সংশ্লিষ্টতার তীব্র বিরোধিতা করেছে তারা প্রভাবশালী দেশ। বিশেষকরে দক্ষিণ আফ্রিকা, নাইজেরিয়া ও আলজেরিয়া ইসরাইলের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে রয়েছে। এ অবস্থায় আফ্রিকান ইউনিয়ন তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়ন করতে বাধ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে।