আওয়ামী স্বৈরাচারী সরকারকে আর সময় দেয়া যাবে না: সমাবেশে বক্তারা
বর্তমান সরকারকে আর সময় দেয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতারা। শনিবার খুলনা মহানগর বিএনপি কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত পূর্বঘোষিত সমাবেশে তারা এ মন্তব্য করেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার এম শাহজাহান ওমর বীর উত্তম বলেছেন, ‘আজকে মিয়ানমারে মানুষ সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। পুলিশের গুলির সামনে মাথা নত করছে না তারা। যদি এখন কথা না বলি তাহলে আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশও এই সরকার পুরোপুরি ধ্বংস করে দিবে। এ সরকারের আর বেশি দিন নাই। এদেশের যত অন্যায়-অত্যাচার হচ্ছে সরকারের লোকেরা সব করছে। তাই আসুন এই অবৈধ স্বৈরাচারী সরকারকে হটিয়ে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এখন যে দেশ আমরা দেখছি এর জন্য কি এই দেশ স্বাধীন হয়েছিল? এ দেশ লুটেরারা শেষ করে দিয়েছে। দেশে হায়েনার রাজত্ব কায়েম করেছে। এভাবে আর একটা দেশ চলতে পারে না। দেশে সত্যিকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাজপথের আন্দোলনের বিকল্প নেই। তাই আর দেরি নয়। রাজপথেই আমাদের আসল ফায়সালা করতে হবে।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের গত নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ডা: শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আজকে এই প্রোগ্রামের নমুনা দেখে প্রমাণিত হয় দেশে কতটা পুলিশী শাসনতন্ত্র কায়েম হচ্ছে। এ দেশে এখন আমাদদের ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই। কিছু বললেই মামলা হামলা গুম, খুন করা হয়। এই অন্যায়-অত্যাচার আর মেনে নেয়া যায় না। সারাদেশে আমাদের দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আর আমরা এই বলদ মার্কা নির্বাচন কমিশন দেখতে চাই না। আমরা আরেকটি নিরপেক্ষ কমিশন এবং তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে দাবি করছি।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেনের গত নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আজকের এই সভা পন্ড করার জন্য সরকারের পেটুয়া বাহিনী আমাদের সকল নেতাকর্মীদের পদে পদে বাধা দিয়েছে। অনেক হয়েছে। আর না। আমরা আর কোনো বাধা মানবো না। এই দেশ মুক্তিযোদ্ধাদের দেশ। আমরা কারো দাসত্ব মানবো না। তাই আসুন সকলে মিলে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই।’
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে শনিবার খুলনা মহানগরে এ সমাবেশ করে বিএনপি। খুলনা মহানগরের দুই স্থানে সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়া হলেও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অনুমতি না দেয়ার শহরের কেডি ঘোষ রোডস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর আগে এদিন সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে মহানগরীর প্রত্যেকটি মোড়ে মোড়ে বিপুল পরিমাণ আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এ সময় সমাবেশ স্থলে আসার সময় নেতাকর্মীদের বাধা দেয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা। শত বাধা বিপত্তির পরেও সমাবেশে দলটির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। বিকাল ৩টায় সমাবেশ শুরুর আগেই পুরো এলাকা লোকারণ্য হয়ে যায়। সমাবেশকে ঘিরে এদিন সকাল থেকেই সারা শহরের মোড়ে মোড়ে ভ্যান, জলকামান নিয়ে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সদস্যরা।এ সময় বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড বসিয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির নেতারা।
এর আগে সকালে রাজধানী ঢাকা থেকে খুলনার সমাবেশে নেতাকর্মীদের নিয়ে যোগ দেন ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। পথিমধ্যে তার গাড়ি বহরে পুলিশ এবং সরকার পক্ষের লোকেরা বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে এ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী মজিবুর রহমান সারোয়ার, রাজশাহী সিটি করপোরেশনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদী হাসান রুমি, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ ইসলাম অমিত, বিএনপির সহ-তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল প্রমুখ।