দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে খালেদা জিয়াকে বন্দীদশা থেকে মুক্ত করতে হবে: গয়েশ্বর
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে শাস্তির নামে অপমান করা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। তিনি কোনো টাকা আত্মসাৎ করেননি। তার সম্পদের হিসাব দিয়েছিল। তারপরও কেন তাকে কারাগারে দেয়া হলো? কারণ, আরেকটি দেশের তাবেদারী করতে হলে খালেদা জিয়াকে বন্দী করতে হবে, তিনি (খালেদা জিয়া) মুক্ত থাকলে তাবেদারী করা যাবে না।
গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বেগম খালেদা জিয়ার কারাবন্দী তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
গয়েশ্বর বলেন, গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্র তৈরি করতে গেলে তিনি (খালেদা জিয়া) বাইরে থাকতে পারেন না। বাংলাদেশে দুর্নীতির অভয়ারণ্য তৈরি করতে হলে খালেদা জিয়াকে জেলে থাকতে হবে।
আলজাজিরার প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা কখনো আলজাজিরা টিভি চ্যানেল দেখতে চাইনি। এখন আলজাজিরা দেখতে হচ্ছে কেন? আলজাজিরা টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদনে যা প্রকাশ করা হয়েছে তা বাংলাদেশের দুর্নীতির এক হাজার ভাগের এক ভাগ। সরকারের স্বভাব সূলভভাবে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে প্রতিবাদ জানায়। তথ্যপ্রমাণ দিয়ে আপনাদেরকে প্রমাণ করতে হবে আলজাজিরার প্রতিবেদন সত্য নয়। আজকে বাংলাদেশের জনগণ দেশের দুর্নীতির কাহিনী জানে। এই দুর্নীতিগ্রস্ত দেশকে যদি বাঁচাতে চান, যদি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চান তাহলে অলিখিত যুদ্ধে শামিল হতে হবে। এই যুদ্ধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হবে। এই যুদ্ধে নিজেদের অবস্থান তুলে না ধরা, দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দীদশা থেকে মুক্ত করতে হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি হলে দেশে গণতন্ত্রের নেতৃত্বের মুক্তি হবে। তিনি (খালেদা জিয়া) মুক্তি হলে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিদেশের মাটিতে থাকতে হয় না। তিনি (তারেক রহমান) বাংলাদেশের মাটিতে এসে জনগণকে নেতৃত্ব দিতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘আমি বারবার বলছি, আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করে রাজপথ ছাড়বো না। আমাদের কথায় নয় কাজেই প্রমাণ করতে হবে। রাজপথ আমাদের দখলে নিতে হবে। রণাঙ্গনের সকল পথ ঘাট জনগণের দখলে নিতে হবে।’
এ সময় সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই সরকারকে ঘর থেকে বের হওয়ার পথ তৈরি করতে হবে। ঘরে বসে বসে তারা প্রতিদিন (সরকার) আবোল-তাবোল কথা বলছে। মানুষকে অবজ্ঞা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কথা বলা তাদের রোগে পরিণত হয়েছে। কারণ তাদের ভোটের প্রয়োজন হয় না, তাদের জনগণের সমর্থন লাগে না।’
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছিলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করে ছিলেন। একটি গণতান্ত্রিক দেশ দেখার জন্য। ওই গণতান্ত্রিক দেশে জিয়াউর রহমানের সৈনিক, খালেদা জিয়ার অনুসারী ও তারেক রহমানের সহকর্মী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব জনগণের পাশে থেকে, অধিকার ফিরিয়ে আনা। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কথা বলে লাভ হবে না। এটি একটি প্রতারক কমিশন। এরা জনগণের সাথে প্রতারণা ও ঠাট্টা-মশকরা করছে।’
গয়েশ্বর চন্দ্র নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘করোনাকে উপেক্ষা করে আপনারা যারা রাস্তায় বেরিয়েছেন এই জীবনটাকে অর্থবহ করার জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করার জন্য, আমরা ওই যুদ্ধে শামিল হই।’