প্রমাণ করুন আল জাজিরার প্রতিবেদন মিথ্যা: সরকারের প্রতি মির্জা আব্বাস
আল জাজিরা টেলিভিশনে বাংলাদেশ নিয়ে যে তথ্যচিত্র প্রচারিত হয়েছে তা মিথ্যা প্রমাণ করতে সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘সরকারকে বলতে চাই, আপনারা প্রমাণ করুন আল জাজিরায় যা কিছু আছে সব মিথ্যা। আমরা আপনাদের সমর্থন দেব।’
সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসনের কারাবন্দির তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকের এই দিনে অন্যায়ভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা হয়েছিল।’
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এতই দুর্ভাগা, এতই ব্যর্থ যে আপনাদেরকে মুক্ত করার কোনো ব্যবস্থা করতে পারিনি। তাই বলে সারাজীবন খালেদা জিয়া কারাবন্দি থাকবেন, এটা সত্যি নয়। আজকের এই সমাবেশ প্রমাণ করেছে আমাদের বন্ধন ধীরে ধীরে বাড়বে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইনশাআল্লাহ দেশে ফিরে আসবেন।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাবন্দি করা হয়েছে। তাকে দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করার মামলা দেয়া হয়েছে। আত্মসাতের ঘটনা প্রমাণ করতে পারেনি। দুই কোটি টাকার জন্য খালেদা জিয়ার যদি সাজা হয়, দুই কোটি টাকা তো ৮ কোটি টাকা হয়ে গেছে, তার জন্য খালেদা জিয়ার পুরস্কার কী হবে জানতে চাই।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া যখন কারাবন্দি ছিলেন তখন আমরাও কারাবন্দি ছিলাম। তখন আমরা অনেকেই জেলে ছিলাম। ওই সময় তারেক রহমানও জেলে ছিলেন। সুস্থ তারেক রহমানকে জেলে নিয়ে যাওয়া হলো, অসুস্থ তারেক রহমান ফেরত এলেন।’
কারাবন্দি থাকা অবস্থার কথা স্মরণ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ওই সময় আমার সঙ্গে কারাগারে একরুমে ছিলেন আমান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বন্দি অবস্থায় আমাদের সঙ্গে আরও ছিলেন ওবায়দুল কাদের, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ, শেখ সেলিমের মতো আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতা। সবাই বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার ছিলেন। ওবায়দুল কাদের এখন লম্বা লম্বা কথা বলেন।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এখন দেখা যাচ্ছে সেই মামলাগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগের যারা ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলাও নেই। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ সবার মামলা চলমান। এত বড় অন্যায় অপরাধ করে যাচ্ছে খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘জিয়াউর রহমান অনেক সাহসিকতার সঙ্গে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, দেশ স্বাধীন করেছি এই কথা শোনার জন্য নয়, বাংলাদেশ মাফিয়া দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ একটি মাফিয়া রাষ্ট্র। এই কথা আমরা আর কখনো শুনতে চাই না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরু, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।