১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ মানুষের গরু, ছাগল চুরি করে খেতো: ফখরুল

0

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ যেখানে ব্যর্থ হয়েছে সেখানে জিয়াউর রহমান সফল হয়েছেন। জিয়াউর রহমান একটা নতুন স্বপ্ন মানুষকে দেখিয়েছেন। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন।

গতকাল বুধবার সুপ্রিমকোর্ট বার অডিটোরিয়ামে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্বেচ্ছসেবক দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের সাফল্য কোথায়? জিয়াউর রহমানের সফলতা হলো তিনি অন্ধকার থেকে মানুষকে আলোর দিকে নিয়ে এসেছেন। যখন বাংলাদেশের মানুষ হতাশ হয়ে গিয়েছিল, মানুষকে আওয়ামী লীগ বিভক্ত করেছিল! সেই জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, অনুপ্রাণিত করেছিলেন এবং একটা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন।

ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমার সব অধিকার কেড়ে নিবে! আমার ভোটের অধিকার কেড়ে নিবে! আমাকে কথা বলতে দিবে না! আমার সংগঠণের অধিকার কেড়ে নিবে! এমনকি একটা কাজ করে খাওয়ার অধিকারও কেড়ে নিয়েছে। এরকম অবস্থা থেকে জিয়াউর রহমান মুক্তি দিয়েছেন।’

১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ মানুষের গরু, ছাগল চুরি করে খেতো মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ৭২-৭৫ এ শিশুদের দুধ পাওয়া যেতো না। বাহির থেকে দুধ আনা হতো, এই দুধও তারা কালোবাজারে বিক্রি করে দিতো।

তিনি বলেন, ‘১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত আজকে যেমন তারা লুটপাট করছে ঠিক তখন একইভাবে তারা লুটপাট করতো। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানি খুব আক্ষেপ করে বলেছেন, বাংলাদেশ আর আওয়ামী লীগ নাম পাওয়া যাবে না, পাওয়া যাবে নিখিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লুটপাট চুরি। আজ সেই একই ঘটনা ঘটছে।’

আওয়ামী লীগ করোনার মতো মহামারীতে লুটপাট করছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রথম দিকে করলো টেস্ট নিয়ে, করোনা টেস্ট নিয়ে রিজেন্ট হাসপাতাল আর সাবরিনাদের দিয়ে তারা লুটপাট করলো। আজকে যে ভ্যাকসিন দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচবে সেটা নিয়েও লুটপাট শুরু করেছে। অনেক বেশি দাম দিয়ে ভারতের কাছ থেকে নিয়ে আসতেছে। আর এই ভ্যাকসিন সাধারণ মানুষ পাবে কিনা তারও কোনো রোডম্যাপ নাই। আগে বলছে ২০ লাখ আসবে। আর ২০ লাখ কারা পাবে সেটাও আমরা জানি না। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে আসবে সেটা কারা পাবে সেটাও আমরা জানি না। আমরা যারা সাধারণ মানুষ, কখন তা পাবো তার কোনো নিশ্চয়তা নাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭২ সালের যে সংবিধান সেটাকে তারা কেটে-ছেটে প্রথমে করেছিলো জরুরি অবস্থার আইন, তারপর করেছিলো বিশেষ ক্ষমতা আইন আর তারপর করেছিলো বাকশাল আইন। আওয়ামী লীগ সব কথা বললেও একটা এড়িয়ে যায়, কোনোদিন বলে না আর বলার কাছাকাছিও যায় না। ’৭২ থেকে ’৭৫ সালে কত লোককে তোমরা হত্যা করেছিলে। ’৭২ থেকে ’৭৫ সালে জরুরি অবস্থা কেন ঘোষণা করেছিলে? বিশেষ ক্ষমতা আইন কেন করেছিলে? কেন একদলীয় বাকশাল গঠন করেছিলে? তারা এটা কোনোদিন বলেও না এবং কখনো এর উত্তরও দেয় না।’

ফখরুল বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার জন্মই হয়েছে নেতা হয়ে। জীবনের প্রতিটা স্তরে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার স্ত্রীও একজন লিডার এবং তিনি আমাদেরকে একটা আলাদা ভূখণ্ড, একটা আলাদা জাতিসত্তা ও আমাদেরকে একটা পরিচিতি দিয়েছিলেন। আমরা শুধু বাঙালি নিই, আমরা শুধু মার্মা নই, আমরা চাকমা নই, অবাঙালি নই, বিহারী নই, আমরা ভারতীয় নই, আমরা হলাম বাংলাদেশী। এই ভূখণ্ডে বাস করা মানুষদের আমরা চিনি, আমরা বাংলাদেশী।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “জিয়াউর রহমানের দর্শন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ। আর এই জাতীয়তাবাদের উপর ভিত্তি করে শহীদ জিয়া আমাদের সেই পরিচয়টা দিয়েছেন। এত শক্তি সেই দর্শনের। আজকে এই আওয়ামী লীগ সরকার যারা প্রতি মুহূর্তে চাচ্ছে এই দেশটা থেকে জিয়াউর রহমানের নামটি মুছে ফেলতে, বিএনপির নামটি মুছে ফেলতে, তারা বাংলাদেশী এই জাতীয়তাবাদকে মুছতে পারেনি। কারণ তারপর থেকে লিখতে হয় ‘জাতীয়তা- বাংলাদেশী’। আর পরিচয়টাই আমাদের দিয়েছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।”

ফখরুল বলেন, ‘তারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলতে চায়। বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি, কলেজ, স্থাপনা সব জায়গা থেকে তারা জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলতে চায়। কিন্তু পারছে কি? পারছে না। কারণ জিয়াউর রহমান একেবারে মানুষের হৃদয়ের মধ্যেই চলে গেছে। আজকে না, দীর্ঘ কাল ধরে। আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম কেউ মুছতে পারেনি। মোছা সম্ভবও নয়।’

আলোচনা সভায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েলের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলেন অন্যান্য নেতাকর্মী এবং বিএনপির অন্যান্য অঙ্গ সংগঠন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com