আনুশকাকে ধর্ষণ ও হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিল দিহান

0

রাজধানীর ইংরেজি মাধ্যম স্কুল মাস্টারমাইন্ডের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিন ওরফে শাহনূরীকে ধর্ষণের পর হত্যার লোকহর্ষক বর্ণনা দিয়ে ঘাতক ইফতেখার ফারদিন দিহান। হত্যার ঘটনা লুকাতে অচেতন আনুশকাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ছিলেন দিহান।

বৃহস্পতিবার রাতে কালবাগান থানায় আনুশকাকে ধর্ষণ ও হত্যার কারার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ২ ধারায় খুনসহ ধর্ষণ মামলা করেন তার বাবা মো. আল আমিন আহমেদ। মামলার এজাহারে এ দাবি করেন তিনি।

মামলার এজহারে মো. আল আমিন আহমেদ অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ৮ টায় আমার স্ত্রী অফিসের এবং আমি সকাল সাড়ে ৯ টায় ব্যবসায়ী কাজের উদ্দ্যেশ্যে বের হয়ে যায়। পরে আনুশকা সকাল সাড়ে ১১ টায় আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলে সে কোচিং এর পেপার্স আনতে বাহিরে যাচ্ছে। এই কথা বলে সে সকাল ১১ টা ৪৫ মিনিটে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।

তিনি বলেন, বেলা ১টা ১৮ মিনিটে ইফতেখার ফারদিন দিহান আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলে আনুশকা তার বাসায় গিয়েছিল, আনুশকা সেখানে হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ায় তাকে রাজধানীর আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতলের জরুরী বিভাগে ভর্তি করিয়েছে। এ কথা শুনে আমার স্ত্রী বেলা ১টা ৫২ মিনিটের দিকে হাসপালে পৌছায়। সেখানে গিয়ে আমার স্ত্রী কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে জানতে পারে আনুশকাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।

মো. আল আমিন আহমেদ এজাহারে আরও অভিযোগ করেন, পরে আমরা বিভিন্নভাবে জানতে পারি দিহান আমার মেয়েকে প্রেমের প্রলুব্ধে ধর্ষণের উদ্দ্যেশ্যে তার বাসায় বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে দিহান ফাঁকা বাসায় আমার মেয়েকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় অমানবিক কার্যকলাপ করায় আনুশকার গোপাঙ্গ দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে অচেতন হয়ে যায়। পরে ধর্ষণের ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে দিহান চালাকি করে আমার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার মেয়ে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে বিষয়ে ডিএমপির রমনা বিভাগের নিউ মার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার আবুল হাসান বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ২ ধারায় খুনসহ ধর্ষণ মামলা হয়েছে। নিহত শিক্ষার্থীর বাবা মো. আল আমিন আহমেদ বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। শুধুমাত্র ইফতেখার ফারদিন দিহানকেই এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাকে আমরা গতকাল রাতেই আটক করেছি, এখন এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আর বাকি তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। তাদের ডিজিটাল ডিভাইসগুলো আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি।

তিনি বলেন, দিহানকে আমরা আজই বিজ্ঞ দালাতের কাছে তুলব। তাকে জিজ্ঞাসাবের জন্য কয়েক দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে সেটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এদিকে আনুশকার মরদেহের ময়নাতদন্তের বিষয়ে কলাবাগান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেন বলেন, আনুশকার মরদেহ এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আমিও সেখানেই রয়েছি। মরদেহ ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনায় আনুশকার প্রেমিক ইফতেখার ফারদিন দিহানসহ চারজনকে আটক করেছে কলাবাগান থানা পুলিশ।

কলাবাগান থানা সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে আনুশকা তার বান্ধবীর বাসায় জন্মদিন পালন করতে যায়। সেখানেই শারীরিক নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। এছাড়া দিহান ও আনুশকাকের মধ্যে গত দুই মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল বলেও পুলিশ জানায়।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com