পশ্চিমবঙ্গে ‘লাভ জিহাদ’ ঠেকানোর স্বপ্ন দেখছে বিজেপি

0

সম্প্রতি ভারতের একাধিক রাজ্যে ধর্মান্তরণবিরোধী আইন হয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় ‘লাভ জিহাদ’ তথা ভিন ধর্মে বিয়ে ঠেকাতে পশ্চিমবঙ্গেও আইন চায় বিজেপি।

ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, ইতিমধ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাসীরা ওই আইনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে এ রাজ্যেও যে তাদের ওই আইন কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে, বৃহস্পতিবার তা স্পষ্ট করে দিলেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র।

বাংলাভাষী এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে জেতার লক্ষ্যে কেন্দ্র এবং অন্য রাজ্য মিলিয়ে আট মন্ত্রীকে ময়দানে নামিয়েছে বিজেপি। তাদেরই অন্যতম নরোত্তম এ দিন পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে আমি চাইব, মধ্যপ্রদেশের মতো এ রাজ্যেও ‘ধার্মিক স্বতন্ত্রতা আইন’ (ধর্মের স্বাধীনতা আইন) ও ‘গো সংরক্ষক আইন’ জারি হোক। আপনারা যাকে ‘লাভ জিহাদ’ বলেন, তা কোনোভাবেই চলতে দেওয়া যাবে না।’’

ওই মন্তব্যকে সমর্থন করেছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মতাদর্শের দিক থেকে উনি ঠিকই বলেছেন। রাষ্ট্রবাদবিরোধী আচরণ বরদাস্ত নয়। তবে এখানে ঠিক কী আইন হবে, সেটা আমরা সরকারে আসার পরে ঠিক হবে।’’

তবে বিজেপির এই পরিকল্পনাকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে তীব্র সমালোচনা করেছে রাজ্যের শাসক তৃণমূল এবং বিরোধী বাম ও কংগ্রেস। একই সঙ্গে তাদের বক্তব্য, এ রাজ্যে বিজেপি কখনোই ক্ষমতায় আসবে না।

তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই কথাই তো আমরা মানুষের কাছে বলছি। বিজেপির হাতে শাসনক্ষমতার অর্থ— মানুষের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। ব্যক্তিগত স্বাধীনতা,সামাজিক ব্যবস্থা সব কিছু অন্ধকারের গ্রাসে চলে যাবে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে তা-ই হচ্ছে।’’

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ সব বিজেপির দিবাস্বপ্ন। ওরা এ রাজ্যে ক্ষমতাতেও আসবে না। ফলে ওদের আর এ সব উদ্ভট আইন তৈরি নিয়ে ভাবারও সুযোগ হবে না।’’

‘‘সংবিধান দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে পছন্দমতো সঙ্গী নির্বাচন, ধর্মান্তরণ এবং পছন্দমতো খাবার খাওয়ার স্বাধীনতা দিয়েছে। সুতরাং, বিজেপি-র এই সব আইনই বেআইনি’’, এ কথা মনে করিয়ে দিলেন কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য।

এ দিকে সম্প্রতি বিতর্কিত ধর্মান্তরণবিরোধী আইন নিয়ে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও কেন্দ্রকে নোটিশ দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। তবে ওই আইনের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করতে রাজি হয়নি প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ।

এক পিটিশনে আইনজীবী ও সমাজকর্মীরা দাবি করেন, ‘লাভ জিহাদ’ আইনের অপব্যবহার করে মানুষকে হেনস্তা করা হচ্ছে। তারা আরও জানান, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, হরিয়ানা ও আসামের মতো রাজ্যও ‘লাভ জিহাদ’ আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে।

মূলত মুসলিম পুরুষ ও হিন্দু নারীদের বিয়েকে ‘লাভ জিহাদ’ হিসেবে উল্লেখ করে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com