মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলায় যুক্তরাজ্যকে যোগদানের আহ্বান

0

গত বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা করে গাম্বিয়া। এর প্রায় এক বছর পরে গাম্বিয়ার সঙ্গে নেদারল্যান্ডস ও কানাডা সরকার যোগ দেয় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। এখন যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্যরাও ওই দেশের সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন গাম্বিয়ার এই মামলায় অংশগ্রহণের জন্য।

গত ১৭ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্য রুশনারা আলি ও জেরেমি হান্ট দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবকে লেখা এক চিঠিতে বলেন, ‘জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার সংক্রান্ত বিষয়গুলো দেখাশোনার দায়িত্ব যুক্তরাজ্যের এবং এই পরিস্থিতিতে এই মামলায় যোগ না দিলে মিয়ানমার মিলিটারিকে অনিচ্ছাকৃতভাবে একটি ভুল বার্তা দেওয়া হবে।’চিঠিতে তারা আরও বলেন, ওই মামলার প্রভাব ইতোমধ্যে পড়তে শুরু করেছে, কারণ কোর্ট গাম্বিয়ার সঙ্গে একমত পোষণ করেছে, যে রোহিঙ্গারা গণহত্যার শিকার। এর প্রাথমিক সাক্ষ্য-প্রমাণ আছে এবং রাখাইনে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের রক্ষা করার জন্য মিয়ানমারের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে আদালত মনে করেছে।

এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে ১৭ জন বিচারক একমত হয়েছেন, জানিয়ে সংসদ সদস্যরা বলেন, চীন ও রাশিয়ার বিরোধিতার কারণে নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে পাঠানো যায়নি। এই কারণে দায়বদ্ধতা ও বিচার নিশ্চিত করার জন্য গাম্বিয়ার সঙ্গে যোগ দেওয়াটা এখন বর্তমান প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে ভালো পথ।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। দেশটির সেনাবাহিনী রাখাইনে হত্যাকাণ্ড, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ শুরু করলে জীবন বাঁচাতে নতুন করে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আইসিজেতে মামলা করে গাম্বিয়া। মামলায় প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা ও সংঘাত আরও তীব্রতর না হওয়ার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিতে আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল দেশটি। পরে ২৩ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আইসিজের বিচারক বিচারপতি আবদুল কাফি আহমেদ ইউসুফ মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় চারটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। এগুলো হলো—এক. রোহিঙ্গাদের হত্যা, মানসিক ও শারীরিক নিপীড়ন ও ইচ্ছা করে আঘাত করতে পারবে না। দুই. গণহত্যার আলামত নষ্ট না করা, তিন. গণহত্যা কিংবা গণহত্যার প্রচেষ্টা বা ষড়যন্ত্র না করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ। চার. মিয়ানমারকে অবশ্যই ৪ মাসের মধ্যে লিখিত জমা দিতে হবে, যেন তারা সেখানে পরিস্থিতি উন্নয়নে কী ব্যবস্থা নিয়েছে, এরপর প্রতি ৬ মাসের মধ্যে আবার প্রতিবেদন দেবে। পাশাপাশি মিয়ানমারকে গণহত্যায় অভিযুক্ত করেছেন আইসিজে। গণহত্যা বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য গাম্বিয়ার আবেদনকে যুক্তিযুক্ত বলেও মনে করেন এই আন্তর্জাতিক আদালত।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com