আরো শক্তি নিয়ে ফিরে আসবেন ট্রাম্প!

0

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প হেরে গেছেন। জিতেছেন জো বাইডেন। তবে এখনো কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি আছে। অনেক ভোটে পিছিয়ে পড়ে পরাজিত হওয়ার পরও পরাজয় স্বীকার করতে নারাজ ট্রাম্প। অনেকে শঙ্কায় আছেন, ট্রাম্প হয়তো এই সময়ের মধ্যে এমন কিছু করে ফেলতে পারেন, যার ফলে বাইডেনের আর ক্ষমতায় আসা হবে না, ট্রাম্পই থেকে যাবেন।

ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির সাংবিধানিক আইনের অধ্যাপক এডওয়ার্ড বি ফোলি নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলছেন, যত আপত্তি, মামলা বা অভিযোগই থাকুক- তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারবে না।

তিনি বলেন, ‘৬ জানুয়ারির কংগ্রেস অধিবেশনে তা নিশ্চিত হয়ে যাবে, এটা আমরা স্পষ্ট আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি’।

বিবিসির বিশ্লেষক এ্যান্টনি যুর্কার বলছেন, ‘প্রতিনিধি পরিষদ নিয়ন্ত্রণ করছেন ডেমোক্র্যাটরা। ইলেকটোরাল কলেজের ভোটের ফলাফল অঙ্গরাজ্যগুলো প্রত্যয়ন করে দিয়েছে। ফেডারেল আইনও এখন বাইডেনের পক্ষে। তাই ট্রাম্পের পক্ষে নির্বাচনের ফল উল্টে দেয়ার চেষ্টায় সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনা এখন শূন্য।’

ট্রাম্প কী এরপর রাজনীতি থেকে বিদায় নেবেন?
এখন মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড্র ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউস ছাড়তে হবে। কিন্তু তার সাথেই কি মার্কিন রাজনীতির রঙ্গমঞ্চ থেকে ট্রাম্পের প্রস্থান ঘটবে?

বিশ্লেষকরা বলছেন, হয়তো না।

মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টে পিটার বেকার ও ম্যাগি হেবারম্যান লিখেছেন, হয়তো দেখা যেতে পারে যে ট্রাম্পের বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার ক্ষমতা যা ভাবা হয়েছিল তার চেয়ে অনেক বেশি। হয়তো তিনি মার্কিন রাজনীতিতে একটি জোরালো শক্তি হিসেবে রয়ে যেতে পারেন, যার মোকাবিলা করা কঠিন হতে পারে।

এমন ধারণার কারণ হিসেবে তারা বলছেন, এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায় সাত কোটির কাছাকাছি ভোটারের ভোট পেয়েছেন। যা ২০১৬ সালে তিনি যে ভোট পেয়েছেন তার চেয়ে অনেক বেশি।

দেখা যায়, পপুলার ভোটের প্রায় ৪৮ শতাংশ পেয়েছেন ট্রাম্প। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর অর্থ হলো চার বছর ধরে তাকে নিয়ে নানা রকম কেলেংকারি, রাজনৈতিক বিপর্যয়, অভিশংসন ও করোনাভাইরাস এই সবকিছু সত্বেও তার পক্ষে আছে আমেরিকান জনগণের প্রায় অর্ধেকের সমর্থন।

এর আগে এক মেয়াদ পরই ভোটে হেরেছিলেন এমন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ডেমোক্র্যাট জিমি কার্টার ও রিপাবলিক জর্জ এইচ বুশ সিনিয়র। তাদের কারোরই ভোটের সংখ্যার বিচারে ট্রাম্পের মতো ক্ষমতার ভিত্তি ছিল না।

ট্রাম্প তার ঘনিষ্ঠ মহলে নিজের একটি টিভি নেটওয়ার্ক চালু করার কথা বলেছেন, যার লক্ষ্য হচ্ছে ফক্স নিউজের সাথে পাল্লা দেয়া। তা ছাড়া ২০২৪ সালে আবার প্রার্থী হবার আভাসও দিয়েছেন ট্রাম্প, যদিও তখন তার বয়স হবে ৭৮। আর নির্বাচনে তিনি যদি আবার প্রার্থী না-ও হন, তাহলেও টুইটারে তার ৮৮ মিলিয়ন ফলোয়ার তো আছেন। ফলে এমন হতে পারে যে আমেরিকার দক্ষিণপন্থীদের মধ্যে তিনি হয়ে উঠতে পারেন এক অত্যন্ত প্রভাবশালী কণ্ঠ।

হয়তো এ কারণেই রিপাবলিকান মহলে পরবর্তী তারকা কে বা কারা হবেন তা নির্ধারণে ট্রাম্পের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। হয়তো এটা মাথায় রেখেই ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের পরপর সাবেক অ্যারিজোনা সিনেটর জেফ ফ্লেক বলেছিলেন, ‘নির্বাচনের ফল থেকে এটা পরিষ্কার যে ট্রাম্পের বিপুল জনসমর্থন আছে এবং তার এখনই মঞ্চ ছেড়ে যাবার কোনো ইচ্ছে নেই।’

অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ট্রাম্পের ভূমিকা বাইডেন প্রেসিডেন্ট হবার পরও থাকবে, তবে এমন ধারণার সাথে সবাই একমত নয়।

সাবেক কংগ্রেস সদস্য ফ্লোরিডার কার্লোস কারবেলো বলছেন, ‘আমরা আর কখনোই আরেকটি ডোনাল্ড ট্রাম্প দেখতে পাবো না। তার নকল কেউ বেরুলেও তারা ব্যর্থ হবে এবং ট্রাম্প নিজেও ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাবেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তার শাসনকাল যে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে তার ক্ষতচিহ্ন হয়তো কোনো দিনই মুছবে না।’

তবে এটা সত্যি যে জেরাল্ড ফোর্ড, জিমি কার্টার বা জর্জ এইচ বুশ- যারা এক মেয়াদ পরই হোয়াইট হাউস থেকে উৎখাত হয়েছেন- তারা কেউ কেউ চেষ্টা করলেও, রাজনীতির মঞ্চে আর ফিরে আসতে পারেননি।

সূত্র : বিবিসি

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com