করোনা ভ্যাকসিন পেতেও ইরানের বাধা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র!
বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতিতেও ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অমানবিক নিষেধাজ্ঞা বলবত রয়েছে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় নতুন করে এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, ‘ওষুধসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই’। যদিও বাস্তবতা হচ্ছে এ নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ বিবৃতি থেকে বোঝা যায়, ওয়াশিংটন আসলে এ ধরনের মিথ্যা দাবি করে ইরানের ব্যাপারে তাদের অমানবিক কর্মকাণ্ডকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।
ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান আব্দুন নাসের হিম্মাতি বলেছেন, ইরান যাতে করোনার ভ্যাকসিন কিনতে না পারে সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ব্যাংকের অর্থ লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে। মার্কিন এ আচরণের তীব্র সমালোচনা করে তিনি আরো বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে ইরান করোনার ভ্যাকসিন আমদানির চেষ্টা করলেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ইরানের সংবাদমাধ্যম পার্সটুডের খবরে এসব বলা হয়েছে।
খবরে আরো বলা হয়, ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার জন্য বিশ্বের অনেক দেশ এমনকি মার্কিন অনেক কংগ্রেস প্রতিনিধিও আহ্বান জানানো সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুধু যে কঠোর নিষেধাজ্ঞা বলবত রেখেছেন তাই নয় একইসাথে নিষেধাজ্ঞার মাত্রা আরো বাড়ানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমেরিকার অন্তত ৩০ জন কংগ্রেস প্রতিনিধি ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের ওষুধ ও খাদ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা নেই বলে দাবি করলেও বাস্তবতা হচ্ছে ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা তো বলবত রয়েছেই এমনকি ইরানের কোনো জাহাজ যাতে সমুদ্রপথে ওষুধ ও খাদ্য আমদানি করতে না পারে সেজন্য নানাভাবে বাধা সৃষ্টি করছে। জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক কর্মকর্তারাও মার্কিন এ আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন। এ সংক্রান্ত জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদক অ্যালানা দুহান বলেছেন, ইরানে করোনা রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ব্যবহৃত শ্বাসযন্ত্র আমদানির ওপরও যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে।
মার্কিন এ আচরণ মানবতাবিরোধী অপরাধ। খ্যাতনামা মার্কিন সাংবাদিক এরিন কানিংহাম বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও যদিও দাবি করেছেন, ইরানের ওষুধ আমদানির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও শাস্তির ভয়ে কোনো কোম্পানি ইরানের সাথে বাণিজ্য করতে রাজি হচ্ছে না।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন সরকার ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদ চালানোর পাশাপাশি চিকিৎসা ক্ষেত্রেও সন্ত্রাসবাদ চালাচ্ছে, যা কিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ।