ক্ষমতালিপ্সু আ.লীগ সরকারের ‘জনগণের ভালো-মন্দ’ দেখার সময় নেই: মির্জা ফখরুল

0

সরকার বিরোধী দল ও মতের মানুষদের নিশ্চিহ্ন করে দীর্ঘকাল ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার চিন্তায় বিভোর থাকার কারণেই জনগণের ভালো-মন্দ দেখার সময় তাদের নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দেশের রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলগুলো বন্ধের প্রসঙ্গে সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগেও সরকার ২৫টি পাটকল আকস্মিকভাবে বন্ধ করে দিয়ে হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারীদের বেকার করে দিয়েছে। এ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ঘরে ঘরে চাকুরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা ঘরে ঘরে চাকুরির পরিবর্তে ঘরে ঘরে বেকার সৃষ্টি করছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চিনিকল বন্ধে সরকারের এই আকস্মিক সিদ্ধান্তে লাখ লাখ আখচাষি এবং হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী চরম বিপাকে পড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে হতাশা এবং অনিশ্চয়তা। বেকার হবে শ্রমিক কর্মচারীরা। সরকারের এই অমানবিক ও অদূরদর্শী সিদ্ধান্তে একদিকে আখচাষিসহ চিনি কলে খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে বাজারে চিনির সংকটও সৃষ্টি হবে।’

সোমবার (০৭ ডিসেম্বর) দুপুরে দলটির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। 

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চিনিকলগুলোকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সরকার সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে মনে হচ্ছে। চিনিকলসমূহে পরিচালনা পরিষদে ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও নেতাকর্মীদের সংযুক্ত করে তাদের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে লুটপাট ও দুর্নীতি করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা এই সকল চিনিকলগুলোতে চিনি, চিটা গুড় এবং যন্ত্রপাতি বিক্রয়ের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে কম মূল্যে তারা নিজেরাই ক্রয় করে নিচ্ছে। চিনিকলগুলোতে ইচ্ছেমতো দলীয় লোকদের মাস্টাররোলে চাকুরির নামে কোনও কাজ না করিয়ে বেতন-ভাতা দিচ্ছে।’ 

তিনি বলেন, ‘এই চিনিকলকেন্দ্রিক অঞ্চলগুলোতে সাধারণ মানুষসহ কৃষকের প্রধান শস্য আখ। আখ চাষের এলাকাগুলোতে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এই চিনিকলগুলোকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হয়ে থাকে। সরকারের এই ভ্রান্ত সিদ্ধান্তে তৃণমূলের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। আখ চাষের এলাকাগুলোতে বর্তমানে লক্ষ লক্ষ একর জমিতে আখ দণ্ডায়মান। ঠিক যে মুহূর্তে কৃষকরা আখ কাটবে, সে মুহূর্তে সরকারের এ হটকারী সিদ্ধান্তে কৃষকরা দিশেহারা।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘উৎপাদিত আখ নিয়ে কৃষকরা কী করবে, তা নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত পার করছে। যদিও সরকার বলছে, এই আখগুলো পার্শবর্তী চিনিকলে ক্রয় করা হবে, কিন্তু সেই চিনিকলগুলো অনেক দূরে হওয়ায় পরিবহনে যে খরচ লাগবে তা আখের মূল্য থেকে অনেক বেশি। এই চিনিকলগুলো সুনামের সাথে যুগ যুগ ধরে চিনি উৎপাদন করে আসলেও বর্তমানে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারণ- চিনিকলগুলোর সকল স্তরে বর্তমান শাসকগোষ্ঠির একক নিয়ন্ত্রণ, লুটপাট, দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা। এসব কারণে অন্যান্য কলকারখানার মতো চিনিকলগুলোরও বেহাল অবস্থা।’ 

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে চিনিকলগুলো খুলে দিয়ে আখমাড়াই শুরু করার জোর দাবি জানান।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com