কোরআন পাঠের ফজিলত

0

পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহাগ্রন্থ আল কোরআন। যা সমগ্র মানব জাতির জন্য পূর্ণাঙ্গ সংবিধান। বেশি বেশি কোরআন তিলোয়াতের মাধ্যমে মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়। বেশি বেশি কোরআন তিলোয়াত করলে কিয়ামতের দিন আমাদের জন্য সুপারিশ করবে কোরআন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের মাঝে সেই ব্যক্তি উত্তম যে নিজে কোরআন শিক্ষা করে ও অন্যকে তা শিক্ষা দেয়।’ (বুখারি)। 

কোরআন পাঠে রয়েছে অশেষ নেকি (পুণ্য)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআনের একটি অক্ষর পড়বে, সে একটি নেকি পাবে। আর একটি নেকি দশটি নেকির সমপরিমাণ।’ (তিরমিজি)

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কোরআন পাঠ করো। কারণ কিয়ামতের দিন তার পাঠকারীর জন্য সে সুপারিশকারী হিসেবে আসবে। তোমরা দুটি উজ্জ্বল সুরা অর্থাৎ সুরা আল-বাকারা এবং সুরা আলে ইমরান পড়ো। কিয়ামতের দিন এ দুটি সুরা এমনভাবে আসবে যেন তা দুই খণ্ড মেঘ অথবা দুটি ছায়াদানকারী অথবা দুই ঝাঁক উড়ন্ত পাখি, যা তার পাঠকারীর পক্ষ হয়ে কথা বলবে। আর তোমরা সুরা আল-বাকারা পাঠ করো। এ সুরাটিকে গ্রহণ করা বারাকাতের কাজ এবং পরিত্যাগ করা পরিতাপের কাজ। আর বাতিলের অনুসারীরা এর মোকাবেলা করতে পারে না। হাদিসটির বর্ণনাকারী আবু মুআবিয়া বলেছেন, আমি জানতে পেরেছি যে বাতিলের অনুসারী বলে জাদুকরদের বলা হয়েছে। (মুসলিম, হাদিস : ১৭৫৯)

ইবনে রজব (রহ.) বলেন, প্রতিটি নেক কাজেরই সওয়াব দশ গুণ বৃদ্ধি হয়। এর প্রমাণ হচ্ছে আল্লাহর বাণী ‘যে একটি নেক কাজ করবে, তার জন্য রয়েছে অনুরূপ দশ গুণ প্রতিদান।’ (সূরা আনয়াম : ১৬০)। আর আল্লাহ যাকে চান তাকে দশ গুণেরও বেশি প্রতিদান দেবেন। এই বৃদ্ধি সত্তর থেকে সাতশ বা আরও অধিক গুণে হয়। এটা হচ্ছে আল্লাহর অনুগ্রহ এবং অন্তরের বিনয়সহ গবেষণা ও বুঝে পাঠ করার কারণে।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করবে এবং তা মুখস্থ করবে (এবং বিধি-বিধানের) প্রতি যত্নবান হবে, সে উচ্চ সম্মানিত ফেরেশতাদের সঙ্গে অবস্থান করবে। আর যে ব্যক্তি কষ্ট হওয়া সত্ত্বেও কোরআন পাঠ করবে এবং তার সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখবে সে দ্বিগুণ সওয়াবের অধিকারী হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কিয়ামত দিবসে কোরআন অধ্যয়নকারীকে বলা হবে, কোরআন পড় এবং ওপরে ওঠো। যেভাবে দুনিয়ায় তারতিলের সঙ্গে কোরআন পড়তে সেভাবে পড়। যেখানে তোমার আয়াত পাঠ করা শেষ হবে, জান্নাতের সেই সুউচ্চ স্থানে হবে তোমার বাসস্থান। (তিরমিজি)। 

হাদিসে এসেছে, জান্নাতের সিঁড়ির সংখ্যা হচ্ছে কোরআনের আয়াতের সংখ্যা পরিমাণ। কোরআনের পাঠককে বলা হবে, তুমি যতটুকু কোরআন পড়েছ ততটি সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠো। যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ কোরআন পড়েছে, সে আখিরাতে জান্নাতের সর্বশেষ সিঁড়িতে উঠে যাবে। যে ব্যক্তি কোরআনের কিছু অংশ পড়েছে সে ততটুকু ওপরে উঠবে। অর্থাৎ যেখানে তার পড়া শেষ হবে সেখানে তার সওয়াবের শেষ সীমানা হবে। 

আল্লাহ আমাদের সবাইকে পবিত্র কোরআন পাঠ করার, অন্যকে কোরআন শিক্ষা দেওয়ার এবং কোরআনের শিক্ষা আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com