আওয়ামী লীগের নাম এখন নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি: মির্জা ফখরুল

0

সরকার দেশকে অস্থিতিশীল করার নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এই সরকার বাংলাদেশকে শেষ করে দিয়েছে, ধ্বংস করে দিয়েছে।’

গতকাল রবিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবসে’র আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘নতুন করে তারা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বাংলাদেশে তারা আবার অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়। তারা আজকে আবারো উদোর পিণ্ডি বুদোড় ঘাড়ে চাপিয়ে গণতন্ত্রের সৈনিকদের পেছনে ফেলে দিতে চায়, নির্যাতন করতে চায়। এই সরকার একে একে সবকিছুকে ধ্বংস করেছে। গতকাল কুষ্টিয়াতে বিএনপির অফিস ভাঙচুরের করে আবার সন্ধ্যার পর আমাদের সাধারণ সম্পাদকের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, এই সরকার একে একে সবকিছুকে ধ্বংস করেছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং রাষ্ট্রকে এখন তারা গণতন্ত্রের সৈনিকদের পিছনে ফেলে দিতে চায়, নির্যাতন করতে চায়। এখন এই সময়ে যত অপকর্ম এটা আপনারা ছাড়া কে করতে পারেন-আপনারাই করতে পারেন। সেটা আপনারা তৈরি করছেন আপনারা ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্য।

জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ‘নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের উদ্যোগে ‘স্বৈরাচারের পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি’ দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। নব্বইয়ে সালের ৬ ডিসেম্বর সামরিক শাসক এইচএম এরশাদ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করেন। এ দিনটিকে বিএনপি ‘স্বৈরাচারের পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ হিসেবে পালন করে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে আমাদের দায়িত্ব অনেক বেশি। এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে আমাদের জাতিকে ত্রাণ করতে হবে, বের করে আনতে হবে। আমি অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে একটা কথা বলতে চাই, আমাদের গ্রামের মানুষেরাও কিন্তু শক্তি হারায়নি, সাহস হারায়নি। আপনি গ্রামে যাবেন, তাদের জিজ্ঞাসা করবে। সবাই বলছে যে, কবে পরিবর্তন হবে, কবে ডাক আসবে?’

তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী কারাগারে, আমাদের নেতা তিনি অনেক দূরে। আমরা সুভাগ্যবান যে, আমাদের নেতা (তারেক রহমান) দূরে থেকেও সারাক্ষণ দলকে গড়ে তোলবার জন্য, দলকে সংগঠিত করবার জন্য কাজ করছেন। আর আমাদের নেত্রী এই নিরবে থেকেও, এই নিরবতায় আমাদেরকে শক্তি যোগাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যে, তরুণরাই বদলায়, যুবকরাই বদলায়, সমাজ পরিবর্তন করে। আজকে মানুষ পরিবর্তন চায়। এই পরিবর্তন আপনাদেরকেই আনতে হবে। এই ৬ ডিসেম্বর আমাদের আমান উল্লাহ আমান সাহেবরা যে সাহস ও মেধা দিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের তরুণরাও মেধা ও সাহস দিয়ে সেই অসম্ভবকে সম্ভব করবেন।’

অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে আমাদের এগুতে হবে। আপনারা কখনোই হতাশ হবেন না আর কখনো হঠকারী হবেন না। দুইটোই মনে রাখতে হবে। হতাশ হওয়া যাবে না আবার হঠকারীও হওয়া যাবে না। ধোর্য ধরে এগুতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে আগামী মাসে। পঞ্চাশ বছরে- রজতজয়ন্তী পালন করতে যাচ্ছে এই সরকার। আমরাও করছি। আমাদের করা আর তাদের করার মধ্যে পার্থক্য কি? যে তারা সেই ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার সেই মূল চেতনা গণতন্ত্র, তাকে যে তারা হত্যা করেছিলো স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে পরে। তারা আজকে আবার ক্ষমতায় বসে আছে। কিন্তু তারা আজকে স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী পালন করছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, কৃষকরা তার ধানের ন্যায্য মূল্য পায় না, শ্রমিক তার মজুরি পায় না, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা করতে পারছে না। এই কোভিডের যে তথাকথিত প্রণোদনা শুভংকরের ফাঁকি- সব কিছু তারা একেবারে খেয়ে ফেলেছে। আওয়ামী লীগের এখন ‘সেই মুনতাসির-ফ্যান্টাসি’র নাটকের মতো সব খেয়ে ফেলছে।’

তিনি বলেন, ‘একাত্তর সালে যুদ্ধের পরে আওয়ামী লীগ দুঃস্থ মা-শিশুদের দুধ চুরি করে বিক্রি করে দিতো কালো বাজারে। এমন চুরি শুরু হলো যে, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তিনি বললেন যে, আওয়ামী লীগের নাম এখন আর আওয়ামী লীগ নেই, এর নাম নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি। এই একই অবস্থায় আছে। এখন তো আওয়ামী লীগের কাছে যাওয়া যায় না। টাকার এতো গরম ।‘

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেকে বলেন, আওয়াম লীগ গণতান্ত্রিক পার্টি। কোনোদিনই গণতান্ত্রিক পার্টি ছিলো না। ওদের রক্তের মধ্যে নেই, ডিএনএ‘র মধ্যে নেই। ওদের ডিএনএ‘র মধ্যে একটা নির্যাতনকারী, নিপীড়নকারী।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com