ভাস্কর্যবিরোধী মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটা
পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে বিক্ষোভ মিছিল করেছে একদল মুসল্লি। গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা এ মিছিল থেকে ভাস্কর্যবিরোধী বিভিন্ন সেøাগান দেওয়া হয়। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করলে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। রাজধানীর শাহবাগ এলাকাতেও একই ধরনের বিক্ষোভের চেষ্টা পুলিশি বাধায় পণ্ড হয়ে যায়। তবে এসব ঘটনায় কাউকে আটক কিংবা কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার (ডিসি) ওয়ালিদ হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি ডিএমপির অনুমতি ছাড়া ঢাকা মহানগরীতে গণজমায়েত ও মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ। তবে আজ (গতকাল) হঠাৎ একদল মুসল্লি জমায়েতের চেষ্টা করে, তাদের কোনো সাংগঠনিক পরিচয় ছিল না। আমরা তাদের বেআইনি জমায়েত করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করি। মৌখিক নির্দেশ অমান্য করায় লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করা হয়। তবে কাউকে আটক করা হয়নি; কোনো মামলাও হয়নি।’
মতিঝিল জোনের একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, রাজধানীতে গতকাল ভাস্কর্যবিরোধী মিছিল হতে পারে এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিদের একটি অংশ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট দিয়ে চলে যায়। তবে আরেকটি অংশ মসজিদের সিঁড়িতে অবস্থান নিয়ে ভাস্কর্যবিরোধী সেøাগান দিতে থাকে। এ সময় সাদা পোশাকের পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে মুসল্লিদের একাংশ উত্তর গেট দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। ব্যারিকেড ভেঙে মিছিলটি পল্টনের দিকে এলে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বিক্ষোভকারীরা জানান, সারা দেশে ভাস্কর্য নির্মাণের প্রতিবাদ জানাতে তারা এ বিক্ষোভে অংশ নেন। মিছিলে অংশ নেওয়াদের বেশিরভাগ রাজধানীর বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তাদের হাতে সাংগঠনিক কোনো ব্যানার ছিল না। অবশ্য এক মুসল্লির হাতে ‘বাতিলের আতঙ্ক বাংলার ভাগ ফয়জুল করিম মামুনুল হক’ লেখা একটি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
এদিকে বাদ জুমা রাজধানীর শাহবাগ এলাকাতেও একদল মাদ্রাসা শিক্ষার্থী জমায়েতের চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের ফিরিয়ে দেয়। অনেককে বাসে তুলে দেয়। এখানে ‘সর্বস্তরের মুসলিম তৌহিদী জনতার’ ব্যানারে আগেই বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তবে এজন্য পুলিশের কাছে অনুমতির কোনো আবেদন করা হয়নি।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি মামুন অর রশীদ বলেন, ‘একদল মুসল্লি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করেছিল। আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।’