হেফাজতের নতুন নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জ ও প্রত্যাশা

0

বাংলাদেশের বৃহত্তম অরাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’ আমির ও মহাসচিব মনোনীত হয়েছেন যথাক্রমে আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী ও আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। গত ১৬ নভেম্বর হেফাজতের সদর দফতর হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে হেফাজতের ১৫১ জনের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে ৩২ জন নায়েবে আমির, চারজন যুগ্ম মহাসচিব, ১৮ জন সহকারী মহাসচিবের পদ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামা-মাশায়েখসহ ৬৪টি জেলা থেকে প্রতিনিধিরা ওই সম্মেলনে যোগ দেন। নির্ধারিত প্রতিনিধি ছাড়া কাউকে সম্মেলন মিলনায়তনে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি ছিল চোখে পড়ার মতো। আগের কমিটির অনেক দায়িত্বশীলকে সম্মেলনে দেখা যায়নি এবং তাদের আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর এটাই প্রথম জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন হেফাজতের।

২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি কওমি মাদরাসা-সংশ্লিষ্টদের নিয়ে গঠিত হয়েছিলেন হেফাজতে ইসলাম। হাটহাজারী দারুল উলুম মাদরাসার প্রধান পরিচালক ও কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের তদানীন্তন সভাপতি আল্লামা আহমদ শফী ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা আমির। সরকার প্রণীত শিক্ষানীতির বিরোধিতার মধ্য দিয়ে সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করলেও দেশজুড়ে আলোচনায় আসে ১৩ দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে আয়োজিত মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে হেফাজত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করে। তবে ৫ মের পর হেফাজত অদৃশ্য কারণে নীরব হয়ে যায়। এ দিকে ১৩ দফার একটি দফাও আদায় করা সম্ভব হয়নি। শাপলা চত্বরে শহীদদের তালিকাও প্রকাশ করতে পারেনি। ছোটখাটো মিছিল, বিবৃতি ও বার্ষিক ‘শানে রেসালত’ সম্মেলনের মধ্যে তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা সীমিত রাখা হয়। জোরদার কোনো কর্মসূচি দেয়া যায়নি। ১০ বছরের মধ্যে জাতীয় কাউন্সিল ডেকে কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠন বা নবায়ন করা হয়নি। পরিস্থিতি এমন ছিল যে, কেউ এসব নিয়ে প্রশ্ন করার দুঃসাহস করেনি। এতে অনেক নেতাকর্মী হতাশ হয়ে পড়েন। কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায় আল্লামা আহমদ শফী রহ:-এর নেতৃত্বে হয়েছে, এ কথা অনস্বীকার্য। তিনি কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের (বেফাক) চেয়ারম্যান হিসেবে এই কৃতিত্ব অর্জন করেন। সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির কোনো দাবি বা আন্দোলন হেফাজতের ছিল না। এ প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর ১৫ নভেম্বরের হেফাজতের জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন এবং নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনার জন্ম দেয়।

ইতঃপূর্বে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সদ্যবিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ এবং চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুঈনুদ্দিন রুহী পৃথক দু’টি সাংবাদিক সম্মেলনে ১৫ নভেম্বরের ওই জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলনকে ‘অবৈধ, গঠনতন্ত্র বিরোধী ও কর্তৃত্বহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন। তাদের মন্তব্য, ‘সম্মেলনের আহ্বায়ক আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী হেফাজতের আমির আল্লামা আহমদ শফী রহ: জীবিত থাকতেই পদত্যাগ করেন এবং সম্মেলন আহ্বানকারীদের সাথে জামায়াত-বিএনপির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।’ সাবেক মন্ত্রী মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস বলেন, ‘গঠিত কমিটি সর্বজনীন হয়নি। কোনো রকম নিয়ম অনুযায়ী এটা হয়নি।’

প্রতিনিধি সম্মেলনের দিন সকালে নয়া দিগন্তের সাথে সাক্ষাৎকারে আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়নি। প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা আহমদ শফী রহ:-এর ইন্তেকাল আর পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে গঠনতন্ত্রের ধারা অনুযায়ী আগের কমিটি বিলুপ্ত করে দিয়েছি এবং প্রতিনিধি সম্মেলন আহ্বান করেছি। আমরা সরকারবিরোধী নই, সরকারের শত্রু নই এবং সরকারের পক্ষও নই, সরকার সমর্থকও নই। আমরা কারো অন্যায্য চাপ বা প্রভাবের সামনে মাথা নত করব না। কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে আমাদের সংশ্লিষ্টতা নেই। কাউকে ক্ষমতায় বসানো বা ক্ষমতা থেকে নামানো আমাদের অ্যাজেন্ডা নয়। যেহেতু হেফাজত রাজনৈতিক দল নয়, জাতীয় ও আঞ্চলিক নির্বাচনে আমাদের কোনো প্রার্থিতাও নেই, প্রপাগান্ডাও নেই। ইসলামী শিক্ষা, সংস্কৃতি ও তাহজিবের বিকাশ এবং নাস্তিক্যবাদের প্রতিরোধে আমরা কাজ করে যাব। মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে ধর্ম অবমাননা ও কটূক্তির সব প্রয়াস বন্ধ করে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। হেফাজত তার সুনির্দিষ্ট রূপপ্রকল্প নিয়ে সামনে এগোবে।’
হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘ইসলামী নেতৃবৃন্দ দ্বীনি বিষয়কে সামনে রেখে সারা দেশের বিজ্ঞ আলেমদের নিয়ে, নেতৃত্বের মোহ ত্যাগ করে নতুন কমিটি গঠন করেছে।

যাদের সদ্যঘোষিত কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে তারা ছিলেন বিতর্কিত ও সমালোচিত এবং তাদের কারণে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের নানা ইস্যুতে খেসারত দিতে হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের ব্যাপকতা ও সর্বজনীন ইমেজ ক্ষুণ্নকারীদের হয়তো জায়গা হয়নি। তার মানে এ নয়, কোনো মহলের ইঙ্গিতে বা ইশারায় এ কমিটি গঠিত হয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় কওমি আলেমদের নিয়ে গঠিত হেফাজতের নতুন কমিটির আলেমদের ঐক্যবদ্ধ রেখে ইসলামের হেফাজত করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে যাওয়াই হবে আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’ এ ছাড়া ভিন্ন পথে কোনো কিছু করার ষড়যন্ত্র করা হলে ‘দেশবাসী তা রুখে দেবে’ বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

এ দিকে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বোঝা যায়, বাদ পড়া নেতৃবৃন্দ আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী ও আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর নেতৃত্বাধীন হেফাজতে যোগ দিতে আগ্রহী। ডাক না এলে তারা হেফাজতের নামে পৃথক প্লাটফর্ম গঠন করবেন এমন আভাসও পাওয়া গেছে।

বিলুপ্ত কমিটির সদস্যদের নিতে হলে ১৫১ সদস্যের নির্বাহী কমিটির মিটিং ডাকতে হবে। খুব তাড়াতাড়ি মিটিং আহ্বান করা সম্ভব কি না, সেটা সভাপতি ও সেক্রেটারি বিবেচনা করবেন। মিটিং ডাকলেও বাদপড়া নেতাদের অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে সব সদস্য একমত হবেন কি না এতে সন্দেহের অবকাশ আছে। সদ্যবিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহী ১৮ নভেম্বর সাংবাদিকদের বলেছেন, হেফাজতে ইসলাম কোনো ব্যক্তি বা দলকেন্দ্রিক সংগঠন নয়; এটি এ দেশের কওমি আলেম ও মুসলমানদের একটি ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম। হেফাজতের ভাঙন আমরা চাই না। বর্তমান কমিটির নেতারা যদি আল্লামা আহমদ শফীর নীতি ও আদর্শে ফিরে এসে নিজেদের ভুল শুধরিয়ে নেন তাহলে এক হয়ে কাজ করতে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। তিনি আরো বলেন, তাদের সাথে আমাদের কোনো বিবাদ নেই। আমরা একই শিক্ষক ও মাদরাসার ছাত্র। তাদের সাথে আমাদের অভিমান চলছে। তবে তারা যদি অভিমান দীর্ঘস্থায়ী করেন, তাহলে হয়তো আমাদের কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে (যুগান্তর, ১৯ নভেম্বর, ২০২০)।

অপর দিকে হেফাজতের নবগঠিত কমিটিতে ইসলামী আন্দোলন বা চরমোনাই তরিকার কাউকে রাখা হয়নি। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি ও ইসলামী ঐক্যজোটের একাধিক নেতা কমিটিতে থাকলেও কওমি ঘরানার ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে বাদ দেয়া হয়েছে। এতে অনেকেই মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন। এটা নিয়ে ক’দিন ধরে সোস্যাল মিডিয়াতে পক্ষে-বিপক্ষে ‘ঝড়’ উঠেছে। প্রসঙ্গটি নিয়ে হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীর সাথে কথা বলেছি। তিনি জানালেন, অতীতের কিছু তিক্ত স্মৃতি ও রূঢ় অভিজ্ঞতার কারণেই এই সিদ্ধান্ত। সমাজবিশ্লেষকরা মনে করেন টেকনাফ থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত তৃণমূল পর্যায়ে সুসংগঠিত এই দলকে সাথে রাখলে হেফাজতের আন্দোলনের শক্তি বহুলাংশে বৃদ্ধি পেত। তিক্ততা ও ভুলবোঝাবুঝি হয় এবং হওয়াটা স্বাভাবিক। কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলরা উদার মনে উদ্যোগ নিলে একে-অপরের কাছাকাছি আসা সম্ভব এবং এর প্রয়োজনও আছে। ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা সৈয়দ মুফতি ফয়জুল করিম এক সভায় যে বক্তব্য দিয়েছেন এতে তার উদারতা ও রাজনৈতিক বিচক্ষণতার প্রমাণ মেলে। তিনি বলেন, ‘হেফাজতের সাথে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। আমরা একে-অপরের পরিপূরক ও সম্পূরক। হেফাজতে ইসলাম অরাজনৈতিক সংগঠন আর ইসলামী আন্দোলন রাজনৈতিক দল। দু’টির বৈশিষ্ট্য ও কর্মক্ষেত্র আলাদা। ধর্ম, দেশ ও জাতির প্রয়োজনে ভবিষ্যতে আমরা একসাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে প্রস্তুত। যারা হেফাজত ও চরমোনাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতে চান, তাদের দুরভিসন্ধি সফল হবে না।’ তার এই বক্তব্য সর্বত্র প্রশংসিত হয়েছে।

হেফাজতের কাছে সংগঠনের কর্মী এবং বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনেক। দলীয় সংবিধান সংশোধন ও নির্বাহী কমিটি কর্তৃক অনুমোদন, জেলা-উপজেলায় কমিটি নবায়ন, ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরের শহীদদের তালিকা প্রকাশ, আহতদের খোঁজখবর নেয়া, শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, দলীয় আয়-ব্যয়ে স্বচ্ছতা নিরূপণ, নিয়মিত কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক ডেকে ভবিষ্যৎ কর্মকৌশল নির্ধারণ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে সংলাপ, সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের আয়োজন ইত্যাদি করা দরকার। দেশ ও দেশের বাইরে বাংলাদেশী ইসলামিক স্কলার যারা রয়েছেন তাদেরকে হেফাজতের ব্যানারে জমায়েত করতে পারলে সংগঠনের ইমেজ বৃদ্ধি পাবে বলে অনেকে অভিমত ব্যক্ত করেন।।
তথ্যাভিজ্ঞ মহল মনে করেন, হেফাজতে ইসলামের সামনের দিনগুলো কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং হবে। নতুন নেতৃত্বকে বাইরে-ভেতরের প্রতিপক্ষ শক্তির চাপের মোকাবেলা করতে হবে। পদবঞ্চিত নেতারা যদি হেফাজতের আলাদা কমিটি গঠন করেন তাতে ভাঙনের সুর বাজবে, মিডিয়ার খোরাক জুটবে।

জনগণের পালস বুঝে যারা ময়দানে থাকবেন, গঠনমূলক ভূমিকা নেবেন, জয় তাদের পদচুম্বন করবে। বাম ঘরানার কিছু বুদ্ধিজীবী ও মিডিয়া সবসময় হেফাজতের ব্যাপারে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছেন। নেতাদের টকশোতে ডেকে হেনস্তা করার বহু নজির আছে। টিভি ও সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইসলামী ব্যক্তিদের চরিত্র হননের কাজ শুরু হয়েছে। এত দিন হেফাজত ছিল সরকারি বলয়ে; এখন সরকারের প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করার ঘোষণা দেয়ায় পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করেছে। আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর দৃঢ়তা ও নির্লোভ মানসিকতা ইতোমধ্যে নেতাকর্মীদের সপ্রশংস দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। গত ১৯ নভেম্বর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে একদিনে তিনটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে দেয়া হয়নি প্রশাসনিক বাধার কারণে। ঢাকা, মাদারীপুর ও কুমিল্লায় ওই সম্মেলনগুলো হওয়ার কথা ছিল। বুঝা যায়, সরকার হেফাজতকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবে, না পারলে হয়রানি ও দমন-পীড়নের পথ বেছে নিতে পারে। ৫ মের পুরনো মামলাগুলো সক্রিয় করা হতে পারে।

হেফাজত যদি সরকারি বলয়ে চলে যায় বা যেতে বাধ্য হয় বা কোনো রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় আরোহণের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তাহলে হেফাজতের অপমৃত্যু ঘটবে- বিশ্লেষকদের এটাই অভিমত। আর যদি লোভ-লালসা ও ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে হেফাজতের নতুন নেতৃত্ব স্বতন্ত্র কর্মসূচি নিয়ে সামনে অগ্রসর হতে পারেন, তা হলে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হতে পারে। জনগণের মধ্যে হেফাজতের গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে সরকার পূর্ণ সজাগ ও সচেতন। সরকারের শঙ্কা, এক জায়গায় হেফাজত যদি কোনো ইস্যুতে বড় আন্দোলনের ডাক দেয়, তাতে যদি সাধারণ জনগণের পাশাপাশি বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীরা যোগ দেয়, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। হেফাজত আগামী দিনে কোন পথে হাঁটবে, সেটাই দেখার বিষয়।

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও গবেষক

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com