মাওলানা ভাসানী স্বাধীনতার জন্য, মানুষের মুক্তির জন্য আজীবন আপসহীন থেকেছেন: ফখরুল

0

বাংলাদেশ এখন ‘গভীর থেকে গভীরতর সংকটে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ‘আমি স্পষ্ট করতে বলতে চাই, আজকে দেশের খুবই গভীর সংকট। সেই সংকট কাটিয়ে উঠতে আমাদের অবশ্যই মওলানা ভাসানীকে অনুসরণ করতে হবে। তাঁর দেয়া দর্শন নিয়ে এগোতে হবে।’

গতকাল বুধবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এমন মন্তব্য করেন।

মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী রাজনৈতিক দর্শন তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যারা গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলি, কাজ করি, আমরা যারা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করি, তাদের কাছে মওলানা ভাসানীকে সত্যিকার অর্থে একজন দেবতার মতো মনে হয়। তিনিই আমাদের দেখিয়েছেন যে, মানুষের কী জন্য মুক্তি দরকার, স্বাধীনতার দরকার, সার্বভৌমত্ব দরকার। সেই ব্রিটিশ দাসত্ব থেকে মুক্তির জন্য তিনি লড়াই করছেন, সংগ্রাম করছেন। মানুষের জন্য, স্বাধীনতার জন্য, মানুষের মুক্তির জন্য আজীবন আপসহীন থেকেছেন।’

ফখরুল বলেন, ‘তিনি (মওলানা ভাসানী) সমাজকে বদলিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, শোষিত মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন। সেজন্য যারা সমাজের বিত্তশালী, যারা সমাজে প্রভাবশালী, যারা বিত্তের পাহাড় গড়ে তোলে তারা কখনোই মওলানাকে ভালো চোখে দেখেননি। সেকারণে সাম্রাজ্যবাদের যারা পূজারী তারা তাঁকে বলতেন ‘ভায়োলেন্স’। আর যারা আধিপত্যবাদের পক্ষে কথা বলেন, তারা তাকে বলতেন ‘মৌলবাদী’।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মওলানা ভাসানী ধার্মিক ছিলেন, কিন্তু একেবারে অসাম্প্রদায়িক ছিলেন। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তিনি লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন। মওলানা ভাসানী আমাদের সামনে একজন নক্ষত্র। যে নক্ষত্র ধ্রুবতারার মতো, যে নক্ষত্রকে সামনে নিয়ে আমরা এগোতে পারি। তিনি বাংলাদেশে যে প্রজন্ম সৃষ্টি করেছেন সেই প্রজন্ম হচ্ছে সামনে এগিয়ে চলার প্রজন্ম। যারা দেশটাকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘মওলানা ভাসানী ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করেছেন, পাকিস্তানের ঔপনিবেশবাদ ও তার শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন এবং বাংলাদেশকে যারা নিজস্ব সম্পত্তি বানাতে চেয়েছিলো, বাংলাদেশকে যারা নিজস্ব প্রপার্টি বানাতে চেয়েছিলো, বাংলাদেশের সব কিছুকে যারা নিজেদের বলে দাবি করে তাদের বিরুদ্ধেও তিনি সংগ্রাম করেছেন।’

‘স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ভারতীয় সেনাবাহিনীকে যে প্রত্যাহার করা হলো তার আগে কিন্তু মওলানা ভাসানী সারা দেশে সেনাবাহিনীকে প্রত্যাহারের জন্য আন্দোলন করেছিলেন, ফারাক্কা বাঁধের বিরুদ্ধে তিনি আন্দোলন করেছিলেন’- যোগ করেন ফখরুল। 

মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বিএনপির এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ও মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে এবং আরেক ভাইস চেয়ারম্যান ও মওলানা ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন কমিটির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদুর পরিচালনায় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান, বরকতউল্লাহ বুলু, আবদুল হাই শিকদার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অঙ্গসংগঠনের আনোয়ার হোসেইন, আবদুল কালাম আজাদ, মাওলানা শাহ নেছারুল হক, হাসান জাফির তুহিন ও মাওলানা ভাসানীর দৌহিত্র মাহমুদুল হক শানু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com