‘কর্মী’ শব্দটা রাজনীতির অভিধান থেকে আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে: দুদু
‘কর্মী’ শব্দটা রাজনীতির অভিধান থেকে আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে- এমন মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের আহবায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘বর্তমানে কেউ কারও কথা শুনতে চায় না। সবাই কথা বলতে চায়। কেউ কাউকে নেতা মানতে চায় না। সবাই এখন নেতা হতে চায়।’
বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মরহুম তরিকুল ইসলামের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘তরিকুল ইসলাম নেতা ছিলেন, আমরাও তার কর্মী ছিলাম। তিনি কথা বলতেন, তা শোনার জন্য শুধু কর্মীরা না জনগণও পাগল ছিলো।’
সাবেক ছাত্রদলের এই সভাপতি বলেন, ‘১৯৭২ সালের পর শেখ মুজিবুর রহমান যখন পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন তখন তাঁর জনপ্রিয়তা পাহাড়ের মত, অনেক উঁচু। সেই সময়ে যশোর পৌরসভায় একটা নির্বাচন হয়। আমরা তখন ছাত্র রাজনীতি করি। আমাদের তখন ডাকা লাগে নাই, এমনিতেই যেতাম। বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে আশরাফ উদ্দিন আর ভাইস চেয়ারম্যান পদে তরিকুল ইসলাম। তরিকুল ইসলাম ভাইস চেয়ারম্যান হন শেখ মুজিবুর রহমানের প্রার্থীকে পরাজিত করে। কখন? যখন শেখ মুজিবের জনপ্রিয়তা পাহাড়ের মত, যখন সারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সামরিক শাসনের সময় তরিকুল ইসলামকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে তার প্রতিটি নখ তুলে ফেলেছিল। এতটাই নির্যাতন করেছিল তাকে। তারপরও তাকে তার জায়গা থেকে এক ইঞ্চিও সরাতে পারে নাই। আমৃত্যু রাজনীতিতে কিছু পেয়েছেন কি-না সেই চিন্তা তিনি করেন নাই। তিনি রাজনীতি নিয়ে খেলতেন। কখনও গোল দিয়েছেন। কখনও দেন নাই। কিন্তু তিনি কখনও দল পরিবর্তন করেন নাই। তিনি যে দলে এসেছেন সেই দল নিয়ে লড়ছেন। সেই দলকে ক্ষমতায় নিয়ে এসেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেই দলে ছিলেন। তরিকুল ইসলাম ছিলেন এমন একজন রাজনীতিবিদ।’
শামসুজ্জামান দুদু আরও বলেন, ‘তরিকুল ইসলাম শারীরিক গঠনে বেশি লম্বা ছিলেন না। কিন্তু তিনি জনগণের মধ্যে আসলে বোঝা যেত তরিকুল ইসলাম এসেছেন। সেই নেতাকে আমরা স্মরণ করি, তার আদর্শের জন্য। তাকে মনে রাখবো রাজনৈতিক কারণে। মাওলানা ভাসানীর প্রশ্নে, জিয়াউর রহমানের প্রশ্নে, তাকে ভালোবাসি আর না বাসি, কিন্তু তিনি কাছে টেনে নিতেন এমন একটা গুণ ছিল তার, সেজন্য তাকে মনে রাখতে হবে।’
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে এবং সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের সঞ্চালনায় সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মসিউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও হাবিব-উন-নবী খান সোহেল প্রমুখ বক্তব্য দেন।